ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ভোগান্তির শেষ নেই খানাখন্দে ভরা সাইনবোর্ড-কচুয়া সড়কে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০১৯
ভোগান্তির শেষ নেই খানাখন্দে ভরা সাইনবোর্ড-কচুয়া সড়কে খানাখন্দে ভরা সড়ক। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: খানাখন্দ, গর্ত আর কাদায় ভরা বাগেরহাটের সাইনবোর্ড-কচুয়া আঞ্চলিক সড়ক এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়ছেন সড়কে চলাচলকারী হাজারো মানুষ। শুধু ভোগান্তিই নয় এ কারণে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটছে। 

গত এক বছর ধরেই সড়ক ও জনপথ বিভাগ, বাগেরহাটের সাড়ে সাত কিলোমিটার সড়কের এ বেহাল দশা। এলাকাবাসীর দাবি দ্রুত সড়কটির সংস্কার না হলে অনেক বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

তবে রাস্তা সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে, নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পূর্ণ করা হবে বলে জানিয়েছে সড়ক বিভাগ, বাগেরহাট।

পথচারীরা বলছেন, একটু বৃষ্টি হলেই পিচঢালা এ রাস্তা পরিণত হয় কাদাময় সড়কে। সাইনবোর্ড থেকে কচুয়ার দিকে যেতে দোবাড়িয়াসহ কয়েকটি স্থানে প্রায়ই আটকে যায় ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও মালবাহী যানবাহন। তখন সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। পথচারীদের রাস্তার পাশ দিয়ে চলাচল করতে হয়।

খানাখন্দে ভরা সড়ক।  ছবি: বাংলানিউজসরেজমিনে দেখা যায়, সাইনবোর্ড বাজার থেকে কচুয়ার দিকে যেতে অসংখ্য বড় বড় গর্ত। কিছু স্থানে কাঁচা রাস্তার মত কাদাও রয়েছে। সড়কটির দোবাড়িয়া নামক স্থানে একটি কাভার্ড ভ্যান আটকে গেছে। ঘণ্টাখানেক চেষ্টার পরে একটি বুলডোজারের সহায়তায় কাভার্ড ভ্যানটি ওই জায়গা থেকে সরানো হয়।  

এছাড়া ইটবাহী একটি ট্রাকও আটকে যায় একই জায়গায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ইট নামিয়ে ট্রাকটি গন্তব্যে নেয় চালক।

আলমাস আহমেদ, লুবনা আক্তার, লাবনি, মৌসুমি আক্তার, আব্দুর রহিমসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, স্কুল ও কলেজে যাওয়ার সময় প্রায়ই গর্তের মধ্যে পড়ে ভ্যান উল্টে যায়। কয়েকবার দুর্ঘটনায় পড়েছি আমরা। এছাড়া ট্রাক ও অন্যান্য বড় গাড়ি যাওয়ার সময় গর্তের পানি ছিটে এসে আমাদের পোশাক নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তাটি সংস্কার করা হলে একটু শান্তিতে স্কুলে যেতে পারতাম বলে আক্ষেপ করে শিক্ষার্থীরা।

ভ্যানচালক কিশোর দাস বলেন, ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু সড়কে বড় বড় গর্ত হওয়ায় প্রায়ই ভ্যান উল্টে যায়। এসব কারণে ভ্যানের ট্যায়ার ও টিউব খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি আমরা।
ট্রাক চালক মহিদুল ইসলাম বলেন, নিয়মিত কচুয়া বাজারে বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যাই। আবার কচুয়া থেকে নিয়ে আসি। কিন্তু সড়ক এত খারাপ যে মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। গতকালও আমার ট্রাক গর্তে আটকে গেছিল।

খানাখন্দে ভরা সড়ক।  ছবি: বাংলানিউজকাঁচামাল ব্যবসায়ী লতিফ শিকদার বলেন, ব্যবসা করতে হলে বাগেরহাট, সাইনবোর্ড ও কচুয়ার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। কিন্তু সাইনবোর্ড থেকে কচুয়া পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় পরিবহন খরচ অনেক বেশি পড়ে যায়। সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

মো. হোসাইন খান বলেন, কচুয়া উপজেলার অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়নের জন্য ওই রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাস্তার কাজ শেষ হলে যেমন কমবে মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় ভ্যানচালক ও ব্যবসায়ীদের জীবনমানেরও উন্নতি হবে।

বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাইনবোর্ড থেকে কচুয়া পর্যন্ত সাড়ে সাত কিলোমিটার সড়ক সংস্কার, সম্প্রসারণ ও কচুয়া বেইলি ব্রিজ ভেঙে কনক্রিটের সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। এ বছরের ২১ জানুয়ারি যার কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১২ ফটু চওড়া সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ককে ১৮ ফুট চওড়া করা হবে। ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডার্স কাজ শুরু করছে।  

২০২০ সালে ৩০ জুন পর্যন্ত এ কার্যাদেশের মেয়াদ রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, রাস্তাটিকে চলাচলের উপযোগী করতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে। তারা বালু ও ইটের খোয়া ফেলে আপাতত সড়কটিকে চলাচলের উপযোগী করতে কাজ করছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।