ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে রাজশাহীর আম

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০১৯
হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে রাজশাহীর আম রাজশাহীর বাজারে লোভনীয় আম/ছবি: বাংলানিউজ

রাজশাহী: বর্ষা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুরিয়ে আসছে রাজশাহীর আম। আর মাত্র দুই সপ্তাহ, তারপরই বাজার থেকে বিদায় নিতে শুরু করবে সুস্বাদু জাতের এ ফলটি।

১৭ জুলাইয়ের পর থেকে বাজারে কেবল থাকবে আশ্বিনা জাতের আম। তবে স্বাদে টক ও আঁশ বেশি থাকায় সাধারণত এ আম সেভাবে খেতে চায় না মানুষ।

 

সারা বছরের জন্য আচার, মোরব্বা ‍ও জুস তৈরির কাজে বেশি ব্যবহার হয় আশ্বিনা আম। তাই শেষ মুহূর্তে হু হু করে বাড়ছে রাজশাহীর সুস্বাদু সব আমের দাম।

রাজশাহীর বাজারে এখন কেবল ল্যাংড়া, ফজলি ও আম্রপালি আম পাওয়া যাচ্ছে। তবে দাম চড়া। শেষ সময়ে আমের পাইকারি ও খুচরা দামের ব্যবধানও কমে এসেছে।

মহানগরের সাহেব বাজার এলাকার রাজশাহী ফল ভাণ্ডারের ব্যবসায়ী শাহীন শেখ বাংলানিউজকে বলেন, আর মাত্র দুই সপ্তাহ এসব আম পাওয়া যাবে। তারপর থেকে কেবল আশ্বিনা আম থাকবে। আর ফজলি পাওয়া গেলেও সেগুলো পাশের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আনা হবে। রাজশাহীর আম প্রায় শেষ।  

কারণ রাজশাহীর চেয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম প্রতিবছরই রাজশাহীর পর পরিপক্ব হয়। আর এজন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম রাজশাহীর চেয়ে দেরিতে শেষ হয়।  

তবে স্বাদের তারতম্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের চেয়ে রাজশাহীর আম বেশি মিষ্টি। এজন্য সব সময় মানুষের আগ্রহ থাকে রাজশাহীর আম কেনার প্রতি।

রাজশাহীর বাজারে লোভনীয় আম/ছবি: বাংলানিউজমহানগরের শালবাগান এলাকার ফল ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান মিনার বাংলানিউজকে বলেন, শেষ হয়ে যাওয়ায় আমের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। তাই এখন পাইকারি ও খুচরা বাজারে আমের দামের কোনো হেরফের হচ্ছে না। আড়তে যে দামে আম বিক্রি হচ্ছে, খুচরা বাজারেও সেই দামেই আম বিক্রি হচ্ছে। পার্থক্য কেবল আড়তে কাঁচা আম বেশি পাওয়া যাচ্ছে আর খুচরা বাজারে বেশি মিলছে পাকা আম।

তিনি বলেন, ল্যাংড়া আম ৫ হাজার থেকে ৫ হাজার ৬শ টাকা মণ, আম্রপালি ৩ হাজার ২শ টাকা থেকে ৩ হাজার ৬ষ টাকা, ফজলি (মহারাজ) ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার ১০০ এবং সুরমা ফজলি ২ হাজার ৫শ থেকে ৩ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।

আমের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। আজ যে দাম কাল তারচেয়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ কমতে শুরু করায় দামও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বলে উল্লেখ করেন শালবাগান এলাকার এ পুরনো আম ব্যবসায়ী।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে প্রায় ২ লাখ ১৮ হাজার মেট্রিক টন আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলন কমার কারণে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নাও হতে পারে। তবে এতে সমস্যা হবে না। যে ফলন হয়েছে তা দিয়ে দেশের আমের চাহিদা পূরণ সম্ভব।  

এদিকে, রাজশাহীতে সাধারণত সবার আগে পাকে গুটি জাতের আম। এবার জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ১৫ মে থেকে গুটি আম নামান চাষিরা।  

আর উন্নতজাতের আমগুলোর মধ্যে গোপালভোগ ২০ মে, রানিপছন্দ ২৫ মে, ক্ষিরসাপাত বা হিমসাগর ২৮ মে এবং লক্ষ্মণভোগ বা লখনা ২৬ মে থেকে নামানো হয়। এছাড়া ল্যাংড়া ও আম্রপালি ৬ জুন থেকে নামাতে পারেন।  

১৬ জুন থেকে ফজলিও নামানো শুরু হয়। রাজশাহীর বগানগুলো থেকে সব শেষ ১৭ জুলাইয়ের পর থেকে নামতে শুরু করবে আশ্বিনা জাতের আম।  
    
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪২ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৯
এসএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।