সংশ্লিষ্টরা বলছে, ঘণ্টাব্যাপী ৪০ মিলিমিটার (মিমি) পর্যন্ত বৃষ্টিপাত সয়ে নিতে পারে রাজধানীর সড়কগুলো। তবে এর থেকে বেশি (দুইঘণ্টার মতো) বৃষ্টিপাত হলেই পানি জমতে শুরু করে রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোর পাশাপাশি অলিগলিতে।
ডিএনসিসি ও ডিএসসিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি, রাজধানীর জলাবদ্ধতা মোকাবিলা এবং নিরসনের প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা হলো ওয়াসা। রাজধানীবাসীর ভোগান্তি নিরসনের স্বার্থে এ দায়িত্বের অনেককিছুই নিজেদের তাগিদে সিটি করপোরেশন করে দিচ্ছে।
ডিএনসিসির ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এবং অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শরীফ উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএনসিসি টেকসই সড়ক নির্মাণের মতই প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে। নিজস্ব অর্থায়নের পাশাপাশি সরকারের অর্থায়ন (জিওবি) প্রকল্পের আওতায়ও আমরা জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করে যাচ্ছি। সড়ক ও নর্দমা মিলিয়ে নির্মাণ, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে গত অর্থবছরে আমাদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকার বাজেট ছিল। তবে, রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনের মূল দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার। তবে সেখানেও আমরা তাদের সাহায্য করছি, তাদের অনেক কাজ করে দিচ্ছি। সম্প্রতি আমরা মিরপুর কালশী খাল থেকে বাউনিয়া পর্যন্ত এক হাজার ১৮৮ মিটার দীর্ঘ ড্রেনেজ পাইপ নির্মাণ করে দিয়েছি। কল্যাণপুরে ওয়াসার খাল নিজেদের উদ্যোগে পরিষ্কার করে দিয়েছে ডিএনসিসি।
এবারের বর্ষায় নগরের উত্তর অংশের বাসিন্দা আগের যেকোনো বারের থেকে কম ভোগান্তিতে পড়বেন বলে দাবি করেন এ প্রকৌশলী। তিনি বলেন, আমরা নতুন করে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার (কিমি) ড্রেন ও নর্দমার পাইপ স্থাপন করেছি। অন্তত ১৫০ কিমি পাইপ সংস্কার করেছি। নিজস্ব অর্থায়নে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে আবুল হোটেল পর্যন্ত ড্রেনেজ লাইনের কাজ করেছি। আমাদের এতোসব কাজের সুফল ইতোমধ্যে মিরপুর, খিলক্ষেত, বাড্ডা এবং এর আশেপাশের লোকজন পেতে শুরু করেছেন। তবে জলাবদ্ধতা নিরসনে এ সব কাজ হচ্ছে ‘আর্টিফিসিয়াল ড্রেনেজ ব্যবস্থা’ যা দিয়ে জলাবদ্ধতা সম্পূর্ণভাবে দুরূহ। এরজন্য ‘ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান’ নিয়ে কাজ করতে হবে।
অন্যদিকে, ড্রেনেজ লাইন থেকে আসা পানি ওয়াসা পাম্পিং করে বের করে দিলেই নগরীতে জলাবদ্ধতা থাকবে না বলে জানান ডিএসসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। বাংলানিউজকে বলেন, সিটি করপোরেশন তার ড্রেনেজ ব্যবস্থার মাধ্যমে বর্ষার পানি ওয়াসার পাম্প হাউজ পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। সমস্যা যেটা হয় যে, ওয়াসা এ পানিগুলোতে দ্রুত বের করে দিতে পারে না। এরজন্য ওয়াসার পাম্প বাড়াতে হবে। বৃষ্টি হলে পাম্পগুলো দিয়ে ঠিকমত পাম্পিং হচ্ছে কি-না সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ওয়াসা যদি ঠিকমতো পানি পাম্প আউট না করে তাহলে জলাবদ্ধতা হবেই।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিম এ খান দেশের বাইরে থাকায় এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি কোনো কর্মকর্তা। তবে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, চলতি বছর ওয়াসার বিভিন্ন পাম্পিং হাউজে পাম্পের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি পাম্পিং হাউজ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে ওয়াসার।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩১ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৯
এসএইচএস/ওএইচ/