তবে মৎস্য বিভাগ বলছে, বৃষ্টির ওপর অনেকটা নির্ভর মাছের গতিপথ। যেহেতু বৃষ্টি বাড়ছে তাই মাছের পরিমাণও বাড়ছে।
জেলেরা জানায়, সারাদিন জাল বেয়ে মোটামুটি মাছের দেখা পাচ্ছেন তারা। তবে পরিমাণে বেশি না হলেও যেটুকু মিলছে তা দিয়ে মোটামুটি খরচ উঠছে।
এদিকে ইলিশ ধরা পড়ায় মৎস্য আড়ৎগুলোও জমে উঠেছে। জেলে পল্লীর চিত্র পাল্টে গেছে। পাইকার-আড়ৎদার আর জেলেদের হাকডাকে সরগরম হয়েছে উঠছে ঘাটগুলো।
গত কয়েক মাস নদীতে মাছ ধরা না পড়ায় দেনার দায় অনেক জেলেই কষ্টে দিনাতিপাত করে আসছিলেন। অভাব-অনটন আর অনিশ্চয়তায় মধ্যে দাদনের দায়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলো জেলে পরিবারগুলো।
শুধু তাই নয়, ইলিশ সংকটের কারণে অনেক জেলেই এনজিও বা ব্যংক থেকে ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। কারণ, ঋণ নিয়ে অনেকেই জাল ও নৌকা প্রস্তুত করেছিলেন। অবশেষে নদীতে মাছের দেখা মিলছে, এতে কিছুটা হাসি ফুটেছে জেলেদের। দেনা পরিশোধের পাশাপাশি ঘুরে দাঁড়ানোর চিন্তাও করছেন জেলেরা।
বিভিন্ন ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, জাল, নৌকা ও মাছ ধরার সরঞ্জাম নিয়ে নদীতে ছুটছেন। ঘাটগুলোতেও মাছের বিকিকিনি শুরু হয়ে গেছে। জেলেদের আহরণকরা মাছ ঢাকা, চাঁদপুর ও বরিশালের বিভিন্ন মোকামে চলে যাচ্ছে। মাছ ধরাকে কেন্দ্রর করে জেলেদের সঙ্গে ব্যস্ততা বেড়েছে আড়ৎদার, পাইকার ও দালালদের। সরগরম হয়ে উঠছে ঘাটগুলো।
তুলাতলী এলাকার জেলে বশির মাঝি বলেন, আগের চেয়ে মাছ একটু বেশি ধরা পড়ছে। ভোলা সদরের চেয়ে দৌলতখান, হাকিমুদ্দসহ বিভিন্ন এলাকায় মাছের পরিমাণ অনেক বেশি।
ধনিয়া এলাকার জেলে কাসেম মাঝি জানান, কয়েকদিন আগেও তেমন মাছ পাওয়া যায়নি, তবে দু’দিন ধরে কিছুটা মাছ পাওয়া যাচ্ছে।
ভোলা সদরের নাছিমাঝি এলাকার জেলে হারুন বলেন, নদীতে পানি বাড়ছে, সঙ্গে মাছের পরিমাণও। আমরা জাল-নৌকা প্রস্তুত করছি। এবার নদীতে মাছের আমদানি কিছুটা ভালো।
চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচরের মৎস্য আড়ৎদার শাহে আলম বলেন, মাছের আমদানি মোটামুটি ভালো। এখানকার ৩টি ঘাটের ৮০টি আড়ৎ থেকে ৫ লাখ টাকার ইলিশ মোকামে পাঠানো হয়েছে। মাছ পড়ায় ঘাটগুলো সরগরম হয়ে উঠেছে।
ভোলা সদর সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশের মৌসুম। সে হিসেবে মৌসুমের শুরুতে মাছ পড়তে শুরু করেছে। বর্ষা বাড়লে মাছের উৎপাদন বাড়ে। বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলেদের জালে প্রচুর পরিমাণে মাছ ধরা পড়ছে। এ বছর আমাদের ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এক লাখ ২৫ হাজারর মেট্রিক ইলিশ উৎপাদন হবে বলে আমরা আশা করছি। জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রতি বছর ৪০ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ জেলার বাইরে রপ্তানি হয়।
দ্বীপজেলা ভোলার জলসীমায় সাত উপজেলার নিবন্ধিত জেলে এক লাখ ৩২ হাজার থাকলেও এর বাইরে আরো দুই লাখ জেলে রয়েছে। ১৭০টি মৎস্যঘাট থেকে এসব জেলে ইলিশ আহরণে করে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০১৯
এসএইচ