ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

শিগগিরই চালু হচ্ছে দেশের প্রথম প্রতিবন্ধীবান্ধব ট্রেন

তামিম মজিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০১৯
শিগগিরই চালু হচ্ছে দেশের প্রথম প্রতিবন্ধীবান্ধব ট্রেন দেশের একটি আন্তঃনগর ট্রেন

ঢাকা: ঈদুল আজহার আগেই ঢাকা-বেনাপোল রুটে আসছে দেশের প্রথম প্রতিবন্ধীবান্ধব ট্রেন। একইসঙ্গে এতে থাকছে ওয়াইফাইসহ অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। ট্রেনটিতে রয়েছে দেশের প্রথম পরিবেশবান্ধব বায়ো-টয়লেটের ব্যবস্থা। ২৫ জুলাই ট্রেনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধন করার কথা। এটি চালু হলে বেনাপোল দিয়ে ভারতে গমন আরো সহজ হবে পর্যটকদের। 

তবে চালুর সিদ্ধান্ত হলেও এখনো ট্রেনটির নামকরণ ও ভাড়া নির্ধারিত হয়নি। এ নিয়ে রেলওয়ের কর্মকর্তারা কাজ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

 

রেল কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকা-ঈশ্বরদী-বেনাপোল রুটে প্রথমবারের মতো আধুনিক এ ট্রেন চালু হলে বেনাপোল দিয়ে ভারতে গমনকারী মানুষের যাতায়াত সহজ ও আরামদায়ক হবে। একইসঙ্গে এই অঞ্চলের মানুষেরও যাতায়াতে যোগ হবে নতুন মাত্রা। এছাড়াও বায়ো-টয়লেট সম্বলিত কোচ দিয়ে পরিবেশবান্ধব রেল ব্যবস্থায় বাংলাদেশ আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে। ফলে যাত্রীদের মল-মূত্র রেললাইনে পড়ে পরিবেশ দূষণ হবে না।  

রেলওয়ের তথ্যমতে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ইন্দোনেশিয়ার সরকারি প্রতিষ্ঠান পিটি ইনকা রেলওয়ে ইন্ডাস্ট্রি থেকে এসব ব্রডগেজ কোচ আনা হয়েছে। সেই কোচ দিয়ে ঢাকা-ঈশ্বরদী-বেনাপোল রুটে প্রথমবারের মতো সরাসরি ট্রেন চালু হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য মিটারগেজ ও ব্রডগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্পের অধীনে কোচগুলো আনা হয়েছে।  

রেলওয়ের ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্পের কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রেনটিতে প্রতিবন্ধী যাত্রীদের সুবিধার্থে হুইল চেয়ারসহ তাদের সুবিধার্থে থাকছে প্রশস্ত দরজা ও নির্ধারিত আসনের সুবিধা। প্রতিটি কোচ অত্যাধুনিক স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি, যা সহজেই মরিচিকা ধরবে না। প্রতিটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচে আধুনিক ও উন্নতমানের মাউন্টেড এয়ার কন্ডিশনার যাত্রী ইউনিট এবং এয়ার কন্টেইনারের ব্যবস্থা থাকবে।

রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তথ্যমতে, ঢাকা-বেনাপোল রুটের নতুন ট্রেনের দু’টি কোচের প্রতিটিতে ১২টি করে ২৪টি চেয়ার প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে। প্রতবন্ধীরা যাতে হুইল চেয়ার দিয়ে ট্রেনের অভ্যন্তরে চলাফেরা করতে পারে, সেজন্য প্রতিটি কোচের দরজাও থাকবে প্রশস্ত।  

জানা যায়, আমদানি করা কোচ উচ্চগতিসম্পন্ন বগি, স্টেইনলেস স্টিলের বডি ও আধুনিক অটোমেটিক এয়ার ব্রেক সিস্টেম জার্মানির তৈরি। থাকছে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এলইডি লাইট, অজুখানাসহ নামাজ ঘর, সুইং ডোরের পরিবর্তে নিরাপদ স্লাইডিং ডোর, যাত্রী সাধারণের জন্য আধুনিক ও মানসম্মত চেয়ার, স্টেয়ার, পার্সেল রেক, টিভি মনিটর, হ্যাঙ্গার, ওয়াইফাই রাউটার ও মোবাইল চার্জিংয়ের ব্যবস্থা। এছাড়া অনাকাঙ্ক্ষিত ট্রেন থামানো রোধে বিশেষভাবে ডিজাইন করা অ্যালার্ম চেন পুলিং সিস্টেম, অত্যাধুনিক ডাইনিং সুবিধা ও সিবিসি কাপলার।  

বাংলাদেশ রেলওয়ের ক্যারেজ সংগ্রহ প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ বাংলানউজকে বলেন, এই ট্রেনে কতটি বগি থাকবে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে ১০ থেকে ১২টি বগি থাকতে পারে। ভাড়া নির্ধারণ নিয়ে কাজ করছে রেলের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। এছাড়া নামকরণের সিদ্ধান্ত নেবে রেলপথ মন্ত্রণালয়।  

তিনি জানান, চলতি মাসের মধ্যে আরও ২৬টি কোচ আসার কথা রয়েছে। যদি আসে তাহলে ঈদের আগেই ঢাকা-রংপুর রুটে আরও একটি মিটারগেজ ট্রেন চালু হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০১৯
টিএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।