তবে বর্ষায় নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টি হওয়ার কারণে এখন আবার দক্ষিণাঞ্চলের জেলেদের জালে ধরা পড়তে শুরু করেছে ইলিশ। আর তাতে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মধ্যে।
চাঁদপুরে ইলিশের প্রধান মৎস্য আড়তে গিয়ে ইলিশ আমদানি ও ক্রয়-বিক্রয়ের এই চিত্র দেখা গেছে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত সাগরের কাছাকাছি দক্ষিণাঞ্চল থেকে ট্রলারে করে ইলিশ নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। ইলিশবোঝাই করে একের পর এক ট্রলার ভিড়তে ঘাটে। ট্রলার থেকে ঝুড়ি আর টুকরি দিয়ে মাছগুলো আড়তে তুলছেন শ্রমিকরা।
প্রায় ২০ থেকে ২৫টি আড়তে মাছগুলো স্তূপ করে রাখার পর শুরু হয় দরদাম নিয়ে হাঁকডাক। মুহূর্তেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে মাছ। এরপর মাছগুলো বাক্সে করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানোর জন্য কাজ করছেন অন্য শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের নেতা হুমায়ুন কবির ও শ্রমিক ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েকমাস ইলিশের আমদানি না থাকায় তাদের সংসার চালানো কষ্ট হয়েছে। প্রায় ৩শ’ শ্রমিক এই মাছঘাটে প্রতিদিন কাজ করেন। মাছ আমদানি শুরু হয়েছে, আরো বাড়বে। ভরা মৌসুমে এসব আড়তে প্রত্যেক শ্রমিকের দিনে এক থেকে দেড় হাজার টাকা রোজগার হয়। মেসার্স মিজানুর রহমান ভুঁইয়া মৎস্য আড়তের ম্যানেজার ফারুক হোসেন দর্জি বাংলানিউজকে বলেন, এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশের মণ ৮০ থেকে ৮৫ হাজার, ৭শ’ থেকে ৮শ’ গ্রাম ইলিশের মণ ৩৭ থেকে ৩৮ হাজার, ৫শ’ থেকে ৬শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশের মণ ২৪ থেকে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে পদ্মা-মেঘনায় আহরিত ইলিশের মূল্য মণপ্রতি ৫-৭ হাজার টাকা বেশি।
চাঁদপুর জেলা মৎস্যজীবী লীগ নেতা তসলিম বেপারি বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ নেই। দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ গত কয়েকদিন আমদানি শুরু হয়েছে। আশা করি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে চাঁদপুর জেলেরাও ইলিশ পাওয়া যাবে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও মৎস্য ব্যবসায়ী হাজি শবে বরাত বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকমাস ইলিশের আমদানি ছিলো না। গত তিনদিন নোয়াখালী, হাতিয়া, লক্ষ্মীপুর, আলেকজান্ডার থেকে ইলিশ আমদানি শুরু হয়েছে। এইসব ইলিশ ব্যবসায়ীরা কিনে নেওয়ার পর বিভিন্ন যানে করে চলে যাচ্ছে পাবনা, ইশ্বরদী, ময়মনসিংহ ও জামালপুরে। চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার রূপালী ইলিশের সংখ্যা খুবই কম এবং কেজি প্রতি দামও দুই থেকে আড়াইশ’ টাকা বেশি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০১৯
জেডএস