২০১৬ সালের এ দিনে নৃশংস এ হামলায় পুলিশের দুই সদস্যসহ নিহত হন ২২ জন। দীর্ঘ সময় পার হলেও ভয়াবহ এ হামলার দগদগে ক্ষত এখনও বিরাজমান।
হামলার দিন সেখান থেকে পালাতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন হলি আর্টিজানের স্টাফ জাকিরুল ইসলাম শাওন। ওই মাসের ৮ জুলাই পুলিশি হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাওন। প্রথমে শাওনকে সন্দেহভাজন জঙ্গি হিসেবে ধারণা করলেও পরবর্তীতে তদন্তে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা পায়নি তদন্তকারী সংস্থা।
এ বিষয়ে শাওনের পরিবারের পক্ষ থেকে তখনই অভিযোগ করে বলা হয়, শাওনকে জঙ্গি মনে করে পুলিশ নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। ঘটনার দীর্ঘ তদন্ত শেষে শাওনের ওপর থেকে জঙ্গির অপবাদ ঘুচলেও কেউ খবর রাখেনি তার পরিবারের। এমনকি এ তিন বছরেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন শাওনের মা মাকসুদা বেগম।
সোমবার (১ জুলাই) সকাল হতেই হলি আর্টিজান বেকারিতে দেশি-বিদেশি সর্বস্তরের নাগরিকদের ভিড় দেখা গেছে। আইন-শৃঙ্খল বাহিনীর সদস্যসহ সবাই ফুলেল শ্রদ্ধা জানিয়েছেন নিহতদের প্রতি।
এর মধ্যেই শাওনের মা মাকসুদা বেগমের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে হলি আর্টিজান বেকারি এলাকা। সন্তানের ছবি বুকে নিয়ে ছুটে এসেছেন তিনি। এ সময় সন্তানের স্মৃতি মনে করে বার বার কাঁদছিলেন মাকসুদা।
তিনি বলেন, ছেলে বাঁইচা থাকলে কতো টাকা ইনকাম করতো। ঈদে কত নতুন কাপড় পরতাম, কত কিছু খাওয়াইতো। কিন্তু আমার ছেলে নাই, আজ ৩ বছর হইছে, কেউ আমারে সাহায্য করে নাই। পুলিশ সন্দেহ কইরা আমার ছেলেটারে মাইরা ফালাইছে।
আমি গরিব বলে আমার ছেলে হত্যার বিচার কি হইবো না? আমার ছেলে হত্যার বিচারের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাই। আমার কাছে তো টাকা নাই, যে ছেলেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানামু। তাই প্রতি বছর এখানে আসি ছেলে হত্যার বিচারের কথা কইতে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, আমার শাওন নাই, পরিবারের উপার্জন করারও কেউ নাই। আমার ছেলে গেছে আজ ৩ বছর, কিন্তু কেউ আমাকে সাহায্য করে নাই। আমরা এখন খাইয়া-না খাইয়া থাকি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০১৯
পিএম/ওএইচ/