গুরুতর আহতাবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যশোরের কেশবপুরের ভ্যানচালক কিশোর শাহীনের বর্তমান অবস্থার কথা জানানোর সময় এ কথা বলেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ডা. অসিত চন্দ্র সরকার।
গত শুক্রবার (২৮ জুন) দুপুরে কেশবপুরের মঙ্গলকোট গ্রামের হায়দার আলী মোড়লের ছেলে কিশোর শাহীনের ভ্যানে যাত্রীবেশে ওঠে দুর্বৃত্তরা।
পরে পুলিশ শাহীনকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরদিন শনিবার (২৯ জুন) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢামেকে রোববার (৩০ জুন) তার চিকিৎসায় গঠিত হয়েছে সাত সদস্যের মেডিকেল বোর্ড।
এ বোর্ডের প্রধান ঢামেকের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. অসিত চন্দ্র বাংলানিউজকে বলেন, শাহীনের মাথার আঘাত খুবই গুরুতর। মাথার হাড় ভেঙে ভেতরে ঢুকে গেছে। আমরা ধারণা করছি, হাতুড়ি অথবা এই জাতীয় কিছু একটা দিয়ে তাকে আঘাত করা হয়েছে। এরকম অনেক রোগী অস্ত্রোপচারের পর ভালো হয়েছে। কিন্তু শাহীনের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে বিধায় তার অবস্থা সংকটাপন্ন। শনিবার রাতে শাহীনের অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচার শেষে রাত সোয়া ৩টায় তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়।
ডা. অসিত চন্দ্র আরও বলেন, এক-দুই দিন না গেলে শাহীনের অবস্থা সম্পর্কে কিছু বলা যাচ্ছে না। আগামীকাল (সোমবার, ১ জুলাই) আবার তার সিটি স্ক্যান করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অস্ত্রোপচার করার পরে কারো কারো ২ থেকে ৩ দিন পরও জ্ঞান ফিরে। শাহীনের চিকিৎসার সব কিছুই আমরা মনিটরিং করছি।
শাহীনের বিষয়ে তার এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বাংলানিউজকে জানান, এ কিশোরের বাবা হায়দার আলীর অভাবের সংসার। বসতভিটা ছাড়া তাদের কোনো জমিজমা নেই। সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে ঋণ নিয়ে ব্যাটারিচালিত ভ্যানটি কিনে ভাড়ায় চালিয়ে সংসারের হাল ধরে শাহীন। তার রোজগারের টাকায় সংসার খরচ ছাড়াও ঋণের কিস্তি, সে এবং তার বড় বোনের পড়ালেখা চলতো।
দুর্বৃত্তদের আঘাতে তার আহত হওয়ার খবরটি বাংলানিউজে প্রকাশ হলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নজরে আসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও। তিনি শাহীনের চিকিৎসার তদারকি করছেন বলে জানান ড. অসিত চন্দ্র সরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
এজেডএস/এইচএডি/এইচএ/