ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

যমুনায় বালু উত্তোলনে ঝুঁকিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৫ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
যমুনায় বালু উত্তোলনে ঝুঁকিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ

বগুড়া: যমুনার হিংস্র থাবা থেকে বসতবাড়ি, স্থাপনা ও ফসলি জমি রক্ষায় এবং ভাঙনরোধে বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নে নির্মাণ করা হয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।

মাত্র কয়েক বছর আগেই ভান্ডারবাড়ি এলাকায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে ডান তীর সংরক্ষণ নামে এ বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। তবে বর্তমানে বাঁধ থেকে সামান্য দূরে যমুনা নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে অবাধে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে এ ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প।

ইতোমধ্যেই বাঁধের গোড়ার দিকে দেখা দিয়েছে ফাটল। ফলে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বাঁধটি। এতে আতঙ্কে রয়েছে যমুনা পাড়ে বসবাসকারী বাসিন্দারা।

সম্প্রতি ঘটনাটি জানিয়ে যমুনা পাড়ে বসবাসকারী স্থানীয়দের পক্ষে ভুতবাড়ি গ্রামের গোলাম সরোয়ার নামে এক ব্যক্তি ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর অভিযোগপত্র দিয়েছেন। অভিযোগপত্রে তিনি এর প্রতিকার চেয়েছেন।

ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা অভিযোগপত্র পাওয়ার ব্যাপারটি নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, যমুনা নদীর ওইস্থান থেকে বালু উত্তোলন করার জন্য কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। অভিযোগটি তদন্ত করে দ্রুত দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের বানিয়াজান গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম। বানিয়াজান গ্রামের অবস্থানও সেই যমুনা পাড়েই। শহিদুল ইসলাম এলাকায় প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। গত কয়েকদিন ধরেই প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া তিনি যমুনা নদীর বাঁধ সংলগ্ন স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে অবাধে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছেন। সেই বালু মজুদ করে রাখছেন ভান্ডারবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের একটি স্থানে।

যমুনার ভাঙনরোধে ইউনিয়নের ভান্ডারবাড়ি এলাকায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে এ ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজটি সম্পন্ন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এই প্রকল্প এলাকা থেকেই অবাধে বালু উত্তোলন করায় ইতোমধ্যে বাঁধের সিসি ব্লকে ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া বাঁধের অনেক স্থানের সিসি ব্লক ডেবেও গেছে। এতে ভাঙন ঝুঁকির মুখে রয়েছে বাঁধটি।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সহকারী প্রকৌশলী আসাদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এলাকায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার খবর পেয়েছি। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে কাজ বন্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া প্রকল্প এলাকার কোনো ক্ষতি হলে বালু উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই বালু উত্তোলনের ব্যাপারটি স্বীকার করে শহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, স্থানীয় ভান্ডারবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনেক ব্যবসায়ীর দোকান রয়েছে। মাঠ থেকে সেই দোকানগুলো উচ্ছেদে ব্যবসায়ীদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে।  

‘তাই বাঁধের পাশেই বালু দিয়ে ভরাট করে সেখানেই দোকানগুলো বসানো হবে। দোকানগুলো নির্মাণের জন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আর্থিক চুক্তির বিনিময়েই বালু উত্তোলন করে সেই স্থান ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে। এতে বাঁধের কোনো ক্ষতি হবে না। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
এমবিএইচ/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।