ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রিফাত হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৫ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
রিফাত হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন মানববন্ধনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বরিশাল জেলা শাখার সদস্যরা। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বরগুনার রিফাতের প্রকাশ্যে নৃশংস হত্যার বিচার ও দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি এবং বরিশাল নগরের রসুলপুরে শিশু ধর্ষণের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসহ ন্যায় বিচার নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।

রোববার (৩০ জুন) বেলা ১১টায় নগরের অশ্বিনী কুমার হলের সামনে সদর রোডে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বরিশাল জেলা শাখার উদ্যোগে এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

ছাত্রফ্রন্ট বরিশাল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক সাগরের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক নিলিমা জাহান, বিশ্ববিদ্যালয় আহ্বায়ক হাসিবুল ইসলাম প্রমুখ।



মানববন্ধনে বক্তারা এ ধরনের ন্যাক্কার জনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে। প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ দেওয়ার আগ পর্যন্ত অপরাধীরা স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় নির্বিঘ্নে চলাচল করার সুযোগ পাচ্ছে। অপরাধীদের রক্ষার জন্য রাজনীতিবিদরা পর্যন্ত পক্ষপাতিত্ব করছে। এ অচলাবস্থা থেকে বের হয়ে সব অপরাধীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন বক্তারা।

উল্লেখ্য বুধবার (২৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে স্ত্রীর সামনে স্বামী রিফাত শরীফ (২২) নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করে নয়ন বন্ড ও তার সহযোগীরা। পরে গুরুতর আহত রিফাতকে উদ্ধার করে প্রথমে বরগুনা সদর হাসপাতাল ও পরে বরিশাল শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে নেওয়া হলে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচারের সময় তার মৃত্যু হয়।  

মৃত্যুর পর রিফাতের বাবা ০০৭ গ্রুপের প্রধান নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও রিসান ফরাজীসহ ১২জনের নামে ও বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এদিকে হামলার ঘটনার পর প্রায় ৫ ঘণ্টায় পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন ছাড়া তেমন কোনো তৎপরতা না চালালেও, রিফাত শরীফকে কোপানোর একটি ভিডিও ভাইরাল হলে নরেচরে বসে গোটা প্রশাসন।  

এরইমধ্যে মামলার এজাহারভুক্ত ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং জড়িত থাকার সন্দেহে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও এদের মধ্যে তিনজনকে ওই মামলায় আসামি দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।  

এছাড়া শুক্রবার (২৮ জুন) দিনগত রাতে নয়ন বন্ডের বন্ধু সাইয়ুমকে পটুয়াখালী পৌর শহরের সরকারি বালিকা বিদ্যালয় সড়কে নানার বাসা থেকে আটক করা হয়। সাইয়ুম বরগুনা স্টেডিয়াম সড়কের মো. কাওসার হোসেন লিটনের ছেলে।  

এদিকে শনিবার বিকেলে বরগুনার সোনালী পাড়া এলাকা থেকে রফিকুল ইসলাম রিফাত নামে এক যুবককে আটক করার খবর পাওয়া যায়। যাকে মামলার ১০ নম্বর আসামি রিফাত হিসেবে বিভিন্ন মাধ্যমে দাবি করা হলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত করা হয়নি।

বরগুনা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার কারণে আকস্মিক একটি লোমহর্ষক নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। রিফাত হত্যায় সব আসামিদের অল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

এদিকে রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজী বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের আত্মীয়ের ছেলে হওয়ায় তাদের বেপরোয়া হওয়ার পেছনে তাকেই (চেয়ারম্যান) দুষছেন বিরোধী শিবির। যদিও দেলোয়ারের অভিযোগ নয়নসহ তার আত্মীয়রা সবাই স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) ছেলের ছত্রছায়ায় ছিল। যদিও এমপির ছেলের নানান কর্মকাণ্ডে নিহত রিফাতের পক্ষে তার অবস্থান শুরু থেকেই নিশ্চিত করে আসছিলেন। আর খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নয়ন নিজের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে ক্ষমতার পালাবদলের সঙ্গে নিজের অবস্থানও বদল করেই টিকে ছিল। সে ক্ষেত্রে নয়ন বিগত সময়ে দল-ব্যক্তির কোনো কিছুর পরোয়া করেনি।

তারপরও নয়নের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় মাদক ও অস্ত্রসহ আটটি এবং রিফাত ফরাজীর বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। কিন্তু সব মামলাতেই আসামিরা আদালত থেকে জামিনে ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
এমএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।