ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

গার্মেন্ট ব্যবসার আড়ালে মাদক ‘আইসের’ ডিলার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৯ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৯
গার্মেন্ট ব্যবসার আড়ালে মাদক ‘আইসের’ ডিলার মাদকসহ আটক নাইজেরিয়ান নাগরিক আজাহ অ্যানাওচুকওয়া ওনিয়ানুসি (কালো রংয়ের গেঞ্জি পরিহিত), ডান পাশে কোণায় মাদক ক্রিস্টাল মিথাইল এমফিটামিন

ঢাকা: স্টুডেন্ট ভিসায় দুইবছর আগে বাংলাদেশে আসেন নাইজেরিয়ান নাগরিক আজাহ অ্যানাওচুকওয়া ওনিয়ানুসি। বেসরকারি আশা বিশ্ববিদ্যালয়ে বি ফার্মায় ভর্তি হয়ে একপর্যায়ে গার্মেন্ট ব্যবসা শুরু করেন। এর আড়ালে নতুন মাদক আইসের (ক্রিস্টাল মিথাইল এমফিটামিন) রমরমা বাণিজ্য শুরু করেন তিনি।

নিষিদ্ধ ‘ডার্ক নেট’র সদস্য হয়ে জড়িয়ে পড়েন বাংলাদেশের মাদক বাণিজ্যে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, অন্তত আরো ৭/৮টি দেশে আইসের ব্যবসা চালিয়ে আসা এই নাইজেরিয়ান সর্বশেষ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের হাতে আটক হন।

শুক্রবার (২৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (গোয়েন্দা শাখা) মো. মোসাদ্দেক হোসেন রেজা।

তিনি বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নাইজেরিয়ান ড্রাগ ডিলার আজাহ অ্যানাওচুকওয়ার আইস ব্যবসার কথা জানা যায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মাদক কেনার ফাঁদ পেতে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) রাজধানীর খিলক্ষেতের হোটেল লা মেরিডিয়ানের পাশ থেকে ৫০ গ্রাম আইসসহ তাকে আটক করা হয়। পরে ভাটারা এলাকার বাসা থেকে আরো ৪৭২ গ্রাম আইস জব্দ করা হয়।

গত ৫/৬ দিন আগে উগান্ডা থেকে আইসের চালানটি ডিএইচএল কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় আসে। নাইজেরিয়ায় অবস্থানকারী তার বাবা ও মা অসুস্থ ছিলেন। সম্প্রতি তার মা মারা যাওয়ার পর তিনি দেশে ফেরার চেষ্টায় ছিলেন। সেজন্য তার কাছে থাকা আইস বিক্রির চেষ্টা করে আসছিলেন।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, তিনি স্টুডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশে আসেন। গত দুই বছর ধরে ঢাকায় অবস্থান করছেন। এক পর্যায়ে গার্মেন্ট ব্যবসার জন্য তিনি ব্যাংকক, মালয়েশিয়া, ভারত, উগান্ডা, কেনিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর যাতায়াত করেছেন। এ ব্যবসাকে সামনে দেখিয়ে আড়ালে তিনি আসলে আইসের ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন।

নাইজেরিয়ান নাগরিক আজাহ অ্যানাওচুকওয়া ওনিয়ানুসি বাংলাদেশে আইসের প্রসারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশে থেকে তিনি ডিলার হিসেবে অন্যান্য দেশেও সাপ্লায়ার হিসেবে কাজ করে আসছিলেন।

আইসের ভয়াবহতা সম্পর্কে অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক রেজা বলেন, আইস ইয়াবার চেয়ে কমপক্ষে ৫০ গুণ বেশি শক্তিশালী। একবার আইস সেবন শুরু করলে এ মাদকে নির্ভরতা চলে আসে। বেশি সেবন করতে ইচ্ছে করে সেবনকারীর। ইয়াবার চেয়ে দামও বেশি আইসের।

মালয়েশিয়ায় আইস একগ্রামের দাম ৭ হাজার রিংগিত। বাংলাদেশে এ মাদকের বাজার ধরার জন্য তা কম দামে অর্থাৎ প্রতি গ্রাম ৭ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হচ্ছিলো। এরইমধ্যে ছোট আকারের একটি ক্রেতাশ্রেণীও তৈরি হয়েছে। এই মাদকের ভয়াবহতা বেশি, মৃত্যুঝুঁকি ইয়াবার চেয়েও বেশি।

জিজ্ঞাসাবাদে এই নতুন মাদক কেনাবেচায় দেশীয় কয়েকজনের ব্যাপারে তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে মো. মোসাদ্দেক হোসেন রেজা বলেন, তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০১৯
পিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।