গত কয়েক বছরে জেলা শহরে বেশ কিছু বড় দালান গড়ে উঠেছে। তবে অধিকাংশ দালান পৌরসভার বিল্ডিং কোর্ড না মেনেই তৈরি করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে পৌরসভা এলাকায় বেশ কয়েকটি বড় দালান নির্মাণ করেছে ভবন মালিকেরা। অধিকাংশ দালান পৌরসভার বিল্ডিং কোর্ড না মেনেই নির্মাণ করা হয়েছে। কিছু কিছুু দালানে গাড়ি পার্কিং করার জন্য কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
অন্যদিকে, যারা রেখেছে অধিক লোভের কারণে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় শপিং কমপ্লেক্স করে চুক্তিভিত্তিক ভাড়া দিয়েছে। ঠিক তেমনি মানিকগঞ্জ সদর হসপাতাল গেটের পাশে জমজম জেনারেল হাসপাতালের গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানে দৌলতপুর একাধিক দোকান করে ভাড়া দিচ্ছে মজিবুর রহমান (ভবন মালিক)। অথচ তাদের ওই স্থানে দোকান করার কোনো প্রকার অনুমোদন দেয়নি পৌরসভা। এমকি ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্রও নেই তাদের।
মানিকগঞ্জ শহীদ রফিক সড়কের কোর্ট চত্ত্বর সংলগ্ন এলাকায় ধানসিঁড়ি নামে একটি খাবারের হোটেল স্থাপন করেছে গাড়ি পার্কিয়ের জায়গায়। এরআগে, কয়েকবার এই খাবার হোটেলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটেছে। তার দুই গজ দূরে সাবেক পৌর
কমিশনার কাজল মিয়ার বহুতল ভবনের গাড়ি পার্কিয়ের স্থানে চাঁদের হাট নামে একটি রেডিমেট গার্মেন্টস শোরুম করেছে। তার পাশেই তোফান মিয়া আরও একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করেছে। এদিকে টুটুল মিয়ার ভি.সি শপিং সেন্টারেরও অবস্থা একই রকম।
এ বিষয়ে চাঁদের হাট শোরুমের মালিকের (ভবন মালিক) সাবেক পৌর কমিশনার কাজল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। একই অবস্থা মাইক্রাফ্ট শোরুমের (ভবন মালিক) মালিক তোফান মিয়ারও।
ভিসি শপিং সেন্টারের মালিক (ভবন মালিক) টুটুল বাংলানিউজকে বলেন, আমি গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গাতে দোকান করেছি। কারণ খালিই পড়ে থাকে এজন্য কয়েকটা দোকান করেছি। তবে আমি জানি না যে গাড়ি পার্কিংয়ের স্থানে দোকান করা যায় না।
ধানসিঁড়ি হোটেল ভবনের মালিক লিটু বাংলানিউজকে বলেন, ভবনটা আমার একার না। এটা আমাদের পারিবারিক মার্কেট। তবে আমি জানি না গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গাতে কিভাবে খাবার হোটেল হলো। বিষয়টি দেখছি বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
পরিবেশবিদ অ্যাডভোকেট দীপক কুমার ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, মানিকগঞ্জ শহরটি খুব ছোট এবং অবহেলিত। এ শহরের রাস্তাগুলো অনেক সরু। কোনো ব্যক্তি যদি গাড়ি নিয়ে শপিংয়ে আসে তবে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। অধিকাংশ ভবনের গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। দুই একটার যাও আছে তারা অতিরিক্ত লাভের আশায় তাও ভাড়া দিয়ে দিচ্ছে।
মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এসব মার্কেট বা শপিং কমপ্লেক্সের বিষয়ে কিছু জানা ছিলনা। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে তাদের বিরুদ্ধে নোটিশ করেছি। কিন্তু তারা নোটিশের কোনো প্রতি উত্তর এখনো দেয়নি। অল্প সময়ের ভেতর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৯
এনটি