বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন ক্র্যাবের সদস্য ও অন্য সংঠনের সাংবাদিকরা।
এসময় ক্র্যাবের সভাপতি আবুল খায়ের বলেন, যারা বেশি অনিয়ম করে তাদের মাথা ঠিক থাকে না।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি ইলিয়াস হোসেন বলেন, আজকের দুদকের যে সুনাম তা একমাত্র গণমাধ্যমের কারণে। একসময় যখন দুর্নীতি দমন ব্যুরো ছিল, তখন এই প্রতিষ্ঠানটি পাপাচারে পূর্ণ ছিল। পাপ মোচন করতে তাদের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এরপর একমাত্র আমাদের ইতিবাচক সাংবাদিকতার কারণেই দুদকের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। কিন্তু এই চিঠি আজকে আবারও প্রমাণ করলো যে, কয়লা ধুলে ময়লা যায় না। এই চিঠি অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
ডিআরইউর সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, দুদকের এই চিঠি সাংবাদিকদের জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক ও আপত্তিকর। এ চিঠি অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি দুদক চেয়ারম্যানকে আমি বলতে চাই, আপনারা আগে নিজের ঘর সামলান। যদি এই চিঠি প্রত্যাহার না করেন শুধু একজন পরিচালক নন, ভবিষ্যতে আরও অনেকের মুখোশ উন্মোচন হবে।
মানববন্ধনের এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, এই চিঠিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। ফলে এই চিঠির কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। এটা নিয়ে আপনাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
তার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ক্র্যাব সভাপতি বলেন, আমাদের কথা পরিষ্কার- এই আপত্তিকর চিঠি প্রত্যাহার করতে হবে। এর কার্যকারিতা স্থগিত করতে হবে। দুদক কর্মকর্তারা বলেছেন যে, এই চিঠি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এটি কোনোভাবেই সম্ভব নয়, সরকারি চিঠি কখনো মেয়াদোত্তীর্ণ হয় না। আপনারা আইন জানেন, আমরা ক্রাইম রিপোর্টাররাও আইন জানি। তাই অবিলম্বে এই চিঠি প্রত্যাহার করুন।
দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে গত ২৩ জুন ‘লন্ডন প্রবাসী দয়াছের অডিও সংলাপে দুদকের ওরা কারা?’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয় অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনে। একই বিষয়ে প্রতিবেদন প্রচার করে এটিএন নিউজও।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে বাংলা ট্রিবিউনের বিশেষ প্রতিনিধি দীপু সারোয়ারকে ডেকে গত মঙ্গলবার (২৫ জুন) চিঠি দেন তদন্ত কর্মকর্তা শেখ মো. ফানাফিল্যা। এটিএন নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার ইমরান হোসেন সুমনকেও তিনি একই কারণে চিঠি দেন।
দীপুকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, ‘উল্লিখিত অভিযোগের বিষয়ে আগামী ২৬/০৬/২০১৯ খ্রি: তারিখ ১০.৩০ ঘটিকায় নিম্নস্বাক্ষরকারীর কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য আপনাকে অনুরোধ করা হল। অন্যথায় আইনানুগ কার্যধারা গৃহীত হবে। ’ সুমনকে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হলেও ‘অন্যথায় আইনানুগ কার্যধারা গৃহীত হবে’ মর্মে কিছু লেখা হয়নি।
দীপুকে দেওয়া চিঠিতে ‘অন্যথায় আইনানুগ কার্যধারা গৃহীত হবে’ উল্লেখ করার পর গণমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হলে শেখ মো. ফানাফিল্যাকে কারণ দর্শানোর (শো’কজ) নোটিশ দেয় কমিশন। কিন্তু সেখানে ‘ফরম্যাট না মেনে’ দুই সাংবাদিককে দুই রকম চিঠি দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে বলা হয়, ‘ইমরান হোসেন সুমন বরাবর প্রেরিতে নোটিশে ‘অন্যথায় আইনানুগ কার্যধারা গৃহীত হবে’ মর্মে উল্লেখ করেননি, যা অনুসন্ধান সংক্রান্ত প্রচলিত নোটিশের ফরম্যাট বহির্ভূত। ’
এর পরিপ্রেক্ষিতে আরও বেশি উদ্বেগের কথা জানাচ্ছেন সাংবাদিকরা।
বাংলাদেশ সময: ১৬৪০ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৯
এজেডএস/এইচএ/