ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মুক্তিযুদ্ধ শেষে সংগ্রামের শুরু করেন সুফিয়া-জাহানারা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৭ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০১৯
মুক্তিযুদ্ধ শেষে সংগ্রামের শুরু করেন সুফিয়া-জাহানারা

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর স্বাধীন বাংলাদেশের সংগ্রামের যে শুরু ছিল, সেটির সূচনা করেছিলেন বেগম সুফিয়া কামাল ও জাহানারা ইমাম। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবিও প্রথম তারা করেছিলেন। সুফিয়া কামাল এবং জাহানারা ইমামকে স্মরণ করে এমনটাই বলেছেন বক্তারা। 

বুধবার (২৬ জুন) মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উদ্যোগে সুলতানা কামাল এবং জাহানারা ইমাম স্মরণে আয়োজিত এক স্মৃতিচারণ সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। ‘জননী সাহসিকা সুফিয়া কামাল শহীদ জননী জাহানারা ইমাম শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শিরোনামে আয়োজিত এই সভায় অংশ নেন গবেষক, লেখক, আবৃত্তিকার এবং সুফিয়া কামাল ও জাহানারা ইমামের দীর্ঘদিনের সহকর্মী-শুভানুধ্যায়ীরা।

 

অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও সদস্য সচিব রবিউল হুসাইন। মূল বক্তব্য দেন লোকশিল্প বিশারদ, গবেষক ও লেখক শামসুজ্জামান খান।

সুফিয়া কামাল এবং জাহানারা ইমামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শামসুজ্জামান খান বলেন, আমাদের দায়িত্ব এই দুই মহীয়সী নারী সম্পর্কে জানা। একদিনে জানা যাবে না। এজন্য তাদের লেখা পড়তে হবে, তাদের বিষয়ে যেসব লেখা আছে সেগুলো পড়তে হবে। বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসার, জানার, বোঝার এক গভীর গুণ ছিল তাদের। তারা দেশের মানুষের সঙ্গে মিশতেন; তৃণমূলের সঙ্গে তাদের আত্মিক সম্পর্ক ছিল। মুক্তিযুদ্ধ শেষ হলেও সংগ্রাম শেষ হয়ে যায়নি। মুক্তিযুদ্ধের পরে স্বাধীন বাংলাদেশের যে সংগ্রাম, সেটির সূচনা করেছিলেন তারাই। স্বাধীন দেশে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের বিচারের দাবি জানিয়ে সেই প্রক্রিয়া শুরুর নেতৃত্ব তারাই দিয়েছিলেন।  

এসময় সুফিয়া কামাল নিয়ে নিজের লেখা বই থেকে শামসুজ্জামান পড়েন, ‘সুফিয়া কামাল একক ও অনন্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে সন্তানদের পাঠিয়ে সুফিয়া কামাল হয়েছেন মা সাহসিকা। বাংলার সবাই যেন তার সন্তান ছিলেন।  

আর জাহানারা ইমামের স্মরণে পাঠ করেন, ‘জাহানারা ইমাম স্নিগ্ধ রুচির নারী ছিলেন। শিক্ষা ও সংস্কৃতির এক অনবদ্য মিশেল ছিলেন তিনি। আমাদের সময়ের ‘মোস্ট একম প্লিসড লেডি’ ছিলেন তিনি; একজন দক্ষ শিক্ষিকা এবং প্রশাসকও ছিলেন। শিল্প ও জীবনের ফারাক্কা তিনি মুছে দিতে চেয়েছেন। জাহানারা ইমামের শ্রেষ্ঠ কাজ হচ্ছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠনে নেতৃত্ব দেওয়া।  

এর আগে সূচনা বক্তব্যে রবিউল হুসাইন বলেন, আমাদের দেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, কিন্তু প্রথমে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের কোনো বিচার হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী যুদ্ধে জয়লাভ যে করে আইন তার পক্ষে থাকে। তবু আমরা মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের প্রথমে আইনের আওতায় আনতে পারিনি। জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের বিচারের দাবি প্রথমবার ওঠে।  

এরপর সুফিয়া কামালের কবিতা থেকে কবিতা আবৃত্তি করেন মাহমুদা আখতার। সুফিয়া কামালের লেখা আজিকার শিশু, পল্লী স্মৃতি, আমার দেশ ও সাঁঝের মায়া পাঠ করেন এই আবৃত্তিশিল্পী। আর সবশেষে জাহানারা ইমামের রচনা থেকে পাঠ করেন গ্রিন ইউনিভার্সিটির একদল শিক্ষার্থী।  

বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৯
এসএইচএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।