ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

২০২২ সালের জুনের মধ্যে রাসায়নিক কারখানা স্থানান্তর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৯
২০২২ সালের জুনের মধ্যে রাসায়নিক কারখানা স্থানান্তর বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমানসহ অন্যরা

ঢাকা: ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল কারখানা মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে স্থানান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
 

বুধবার (২৬ জুন) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টা এবং বনানীতে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা শেষে প্রতিমন্ত্রী একথা বলেন।
 
এছাড়া ২০২০ সালের জুনের মধ্যে কেমিক্যাল গুদামগুলো কদমতলী এবং টঙ্গীতে স্থানান্তর করা হবে বলেও জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে সবসময় একটি অপবাদ আমরা শুনি যে, দুর্ঘটনা ঘটলে একটু নড়াচড়া করি তারপর থেমে যাই। এই অপবাদ ঘোচানোর জন্যই কমিটির সভা করেছি।

‘২০ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টায় অগ্নি দুর্ঘটনার পর যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল তার প্রতিবেদন পেয়েছি। আমরা নিমতলীর ঘটনায় ১৭টি সুপারিশ পেয়েছিলাম, চুড়িহাট্টার ঘটনার পর প্রথম আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ১৮টি সুপারিশ পেয়েছিলাম। আজকে তদন্ত প্রতিবেদনে স্বল্পমেয়াদি পাঁচটি, দীর্ঘমেয়াদি ২৬টি সুপারিশ এসেছে। সেসব সুপারিশ নিয়ে আলোচনা করেছি। ’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সবার দাবি ছিল কেমিক্যাল কারখানা এবং গুদামগুলো ঢাকার বাইরে স্থানান্তর করা। তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানতে পেরেছি সিরাজদিখান উপজেলায় ৩১০ একর জমি দেওয়া হয়েছে, সেখানে এক হাজার ৭০০ কোটি টাকার প্রকল্প হবে। ৩১০ একরে দুই হাজার ১৫৪টি প্লট দেওয়া হবে। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হবে এবং সেখানে সব কেমিক্যাল কারখানা স্থানান্তর হবে। এর ফলে পুরান ঢাকায় দুর্ঘটনাগুলো নিমতলীর পর বাস্তবায়ন করতে পারবো।

ধলেশ্বরী নদীর পাড়ে এই প্রকল্পে ইটিপি এবং দু’টি জেটি থাকবে। চারদিকে সবুজ বেষ্টনি থাকবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

এছাড়া কদমতলীতে বিসিকের ৬ দশমিক ১৭ একরের জায়গায় ৫৪টি এবং টঙ্গীর কাঁঠালদিয়া মৌজায় বিসিকের ছয় একর জমিতে শিল্প মন্ত্রণালয় আরো ৫৩টি গুদাম করে দেবে কেমিক্যাল রাখার জন্য।  

প্রতিমন্ত্রী বলেন, নিতমলীর ঘটনার পর কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছিল, সে অনুযায়ী তারা ভাড়ায় নেবে। এই কাজগুলো ২০২০ সালের জুন মাসের মধ্যে সমাপ্ত হবে এবং তাদেরকে বরাদ্দ দেওয়া হবে। এর ফলে ঢাকাবাসীরা আরেকটি বিপদ থেকে উদ্ধার পাবে, আরেকটি ঝুঁকি থেকে রেহাই পাবে।  

প্রতিমন্ত্রী জানান, পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকায় কেমিক্যাল কারখানার তালিকা তৈরি হয়েছে কিন্তু আমাদের হাতে এখনও আসেনি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি তারা যেন এক মাসের মধ্যে সরবরাহ করে। বিস্ফোরক অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা বলেছেন যে অনেক কেমিক্যাল আছে। নতুন করে তালিকা করতে বলা হয়েছে।  

কেমিক্যাল কারখানার তালিকা তৈরির জন্য অধিদপ্তরের প্রধানকে আহ্বায়ক করে একটি, কারখানার লাইসেন্স তদারকির জন্য একটি এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।  

প্রতিমন্ত্রী বলেন, জনগণকে সচেতন করার জন্য বলেছি যে আবাসিক এলাকায় আর নতুন করে কেমিক্যাল কারখানা হবে না। স্কুল-কলেজ-হাসপাতালের এলাকায় কোনো কারখানা হবে না।  

পানি সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যতোবারই অগ্নিকাণ্ড ঘটে ততোবারই পানি সরবরাহে বাধার সম্মুখীন হই। পৃথিবীর সব দেশে আমরা দেখেছি অগ্নিকাণ্ডে পানি সরবরাহের জন্য রাস্তার দুই ধারে ওয়াটার হাইড্রেন্ট থাকে। আমরা প্রতিবারই বলি, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে জানতে পারলাম ওয়াটার হাইড্রেন্ট স্থাপনের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আজকে আমরা জোরালোভাবে বলেছি শুধু ঢাকায় নয়, দেশের বড় বড় শহরে রাস্তার পাশে ওয়াটার হাইড্রেন্ট করার জন্য বড় ধরনের পরিকল্পনা নেওয়ার জন্য।  

দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল ছাড়াও ২২টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং দপ্তরের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৯
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।