ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফুপাতো ভাইয়ের দেওয়া আগুনে দগ্ধ সেই কলেজছাত্রীর মৃত্যু

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৮ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৯
ফুপাতো ভাইয়ের দেওয়া আগুনে দগ্ধ সেই কলেজছাত্রীর মৃত্যু হাসপাতালে স্বজনদের সঙ্গে ফুলন রানী বর্মণ। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: নরসিংদীর বীরপুরে ফুপাতো ভাইয়ের দেওয়া আগুনে দগ্ধ কলেজছাত্রী ফুলন রানী বর্মণ (২২) মারা গেছেন।

বুধবার  (২৬ জুন) ভোর ৬টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বাংলানিউজকে জানান, ফুলনের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।



 

ফুলনের বাবা যুগেন্ধ বর্মন বলেন, চিকিৎসকরা আমাদের জানিয়েছেন আগুনে ফুলনের শরীরের ২১ শতাংশ পুড়ে যায় এবং মুখে কেরোসিন ঢালার কারণে ফুলনের শ্বাসনালীতে সমস্যা ছিল। এতে তার শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এজন্য গত বৃহস্পতিবার (২০ জুন) ফুলনের অপারেশন করা হয়। এরপর থেকে ফুলন ভালোই ছিল।  

তিনি আরো বলেন, মঙ্গলবার (২৫ জুন) ফুলনের বমি ও শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছিলো। পরে ১৩ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ভোরে তার মৃত্যু হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফার বাংলানিউজকে বলেন, সকালে ফুলনের বাবা যুগেন্দ্র ফোন করে আমাদের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ আমরা পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবো।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাত ৯টার দিকে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই বোনের গায়ে আগুন দেন ফুপাতো ভাই ভবতোষ। পরে তাকে রাত পৌনে ১২টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে বার্ন  ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

ফুলন নরসিংদী পৌর এলাকার বীরপুর যুগেন্দ্র বর্মণের মেয়ে। তিনি নরসিংদী উদয়ন কলেজ থেকে গত বছর এইচএসসি পাস করেন।

আগুন দেওয়ার ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে শুক্রবার (২১ জুন) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এ ঘটনায় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার সদস্যদের হাতে গ্রেফতার ভবতোষের বন্ধু রাজু সুত্রধর।

পরে শুক্রবার রাতে পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার  জাকির হোসেন।

তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাত সাড়ে ৮টায় নরসিংদীর বীরপুরে কলেজছাত্রী ফুলন দোকান থেকে কেক নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে অজ্ঞাতনামা দুইজন দুর্বৃত্ত তার হাত-মুখ চেপে ধরে পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে কেরোসিন ঢেলে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। পরে শুক্রবার (১৪ জুন) রাতে ফুলনের বাবা যোগেন্দ্র বর্মণ বাদী হয়ে নরসিংদী  সদর মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা দুইজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তভার ডিবি পুলিশের কাছে ন্যস্ত করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল গাফফারের নেতৃত্বে অভিযানে নামে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি করেন।  

তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে নরসিংদী শহরের শিক্ষা চত্বর এলাকা থেকে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে রাজু সুত্রধর নামে একজনকে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে রাজু ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে ফুলনের ফুপাতো ভাই ভবতোষ ও আনন্দকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৫ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৯
এজেডএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।