ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

তিউনিসিয়া থেকে ফেরাদের মধ্যে ৮ জন মাদারীপুরের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৪ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৯
তিউনিসিয়া থেকে ফেরাদের মধ্যে ৮ জন মাদারীপুরের

মাদারীপুর: ভালো কাজের জন্য লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার প্রলোভনে দেখিয়ে দালালের খপ্পরে পড়ে ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার হওয়া ৬৪ বাংলাদেশির মধ্যে আটজন মাদারীপুরের।

উদ্ধার হওয়া ৬৪ বাংলাদেশির মধ্যে মাদারীপুরের রয়েছে ১৭ জন। শুক্রবার (২১ জুন) উদ্ধারদের মধ্যে ১৭ জনকে দেশে পাঠানো হয়।

এরমধ্যে মাদারীপুরের রয়েছে আটজন।  শনিবার (২২ জুন) তারা নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছায়।

দেশে ফেরা আটজন হলেন- মাদারীপুর সদর উপজেলার হাজরাপুর এলাকার হারুন বেপারীর ছেলে আজাদ রহমান, কুনিয়া ইউনিয়নের মাহবুল মাতুব্বরের ছেলে রাজিব মাতুব্বর, মোকলেছুর মাতুব্বরের ছেলে রাসেল মাতুব্বর, ঘটকচর এলাকার লিয়াকত মাতুব্বরের ছেলে আকমন মাতুব্বর, লুৎফর মাতুব্বরের ছেলে লাদেম মাতুব্বর, রাজৈরের দুর্গাবর্দী এলাকার জুলহাস সেওয়ালের ছেলে জুয়েল সেওয়াল, কালকিনি উপজেলার গোপালপুর এলাকার মীর মাহাবুবুর রহমানের ছেলে মীর আজিজুল ইসলাম ও দুর্গাবর্দী এলাকার মৃত গফুর মোল্লার ছেলে পেয়ার আলী।

এরমধ্যে, আজাদ শনিবার দুপুরে বাড়ি এসেছেন। বাকি সাতজন কেউ ঢাকাতে আবার কেউ বাড়িতে আসছেন বলে জানা গেছে।  

একই বোটে থাকা তিউনেশিয়ার সাগর থেকে উদ্ধার হওয়া মাদারীপুরের ১০ জন হলেন- কেন্দুয়া ঘটকচর এলাকার ইলিয়াস চৌকিদারের ছেলে নয়ন চৌকিদার, আমিনুর রহমান দুলালের ছেলে জিসান মাতুব্বর, মনি হাওলাদারের ছেলে জাহিদ হাওলাদার, হেলাল হাওলাদারের ছেলে নাঈম হাওলাদার, মিরাজ খাঁ ছেলে আরমিন খাঁ, সাধু কবিরাজের ছেলে সুমন কবিরাজ, জলিল মোল্লার ছেলে শফিক মোল্লা, দুলাল মাতুব্বরের ছেলে হৃদয় মাতুব্বর, শওকত সন্নবাদের ছেলে নাঈম সন্নবাদ, রাজৈরের দুর্গাবর্দী এলাকার আবুল কালাম হাওলাদারের ছেলে জাহিদুল হাওলাদার। তারা তিউনিশিয়ার সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে রয়েছেন। আগামী ৪/৫ দিনের মধ্যে তাদের দেশে পাঠানো হবে বলে পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে।  

তিউনিশিয়া থেকে আসা মাদারীপুর সদর উপজেলার রাস্তি ইউনিয়নের হাজরাপুর গ্রামের আজাদ রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমি এক বছর আগে লিবিয়া গিয়েছিলাম। এক মাস আগে দালালেরা আমাকে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার জন্য  একটি বড় জাহাজের ছবি দেখিয়ে সাগর পাড়ে নিয়ে ছোট একটি বোটে জোরপূর্বক উঠিয়ে দেয়। বোটে না উঠলে গুলি করে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। তাই বাধ্য হয়ে বোটে উঠি। দালালেরা ৭৫ জনকে একটি বোটে উঠিয়ে সাগর পথে ইতালির উদ্দেশে পাঠায়।  

বোটটি সাগরের মধ্যে নষ্ট হয়ে গেলে বোটে ভাসমান অবস্থায় তিনদিন থাকার পর খাবারের অভাবে আমরা অসুস্থ্য হয়ে পড়ি। তখন তিউনিশিয়ার একটি জাহাজ এসে আমাদের সবাইকে উদ্ধার করে। পরে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির একটি টিম আমাদের একটি ক্যাম্পে রেখে শুক্রবার ১৭ জনকে বাংলাদেশে পাঠায়। এরমধ্যে আমরা মাদারীপুরে রয়েছি আটজন।

আজাদ রহমানের বাবা হারুন বেপারী বাংলানিউজকে বলেন, আমার ছেলেকে লিবিয়া থেকে জাহাজে করে ইতালি নেওয়ার কথা ছিল। এজন্য আমি দালালকে অনেক টাকা দিয়েছি। আমার ছেলে সুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরেছে। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া।

মাদারীপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য আমিনুর রহমান দুলাল বাংলানিউজকে বলেন, ২০/২৫ দিন আগে ৭৫ জন যাত্রী নিয়ে লিবিয়া থেকে সাগর পথে ইতালি যাওয়ার সময় তিউনিশিয়ার সীমান্তবর্তী সাগরে একটি বোটের ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যায়। সেখানে ৬৪ জন বাংলাদেশি ছিল। এরমধ্যে আমার ছেলেও ছিল। সাগর থেকে উদ্ধার হওয়াদের তিউনিশিয়ার সেনাবাহিনী একটি ক্যাম্পে রাখে। সেখান থেকে কয়েকজন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। আমার ছেলে বলেছে দুই থেকে তিনদিনের মধ্যে সবাইকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেবে। আমার এলাকার ১০ জন এখনো সেখানে রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।