বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের প্রতিনিধি তোমো হোযুমি।
তিনি জানান, এ অর্থ দিয়ে টেকনাফ ও পেকুয়া উপজেলার প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য স্কুল সরঞ্জাম কেনা হবে।
‘এছাড়া এ অর্থ দিয়েই ১৫০০ কিশোর-কিশোরীকে দেওয়া হবে দক্ষতা প্রশিক্ষণ। পাশাপাশি গঠন করা হবে ১৫টি কমিউনিটি ভিত্তিক শিশু সুরক্ষা কমিটি। ’
তোমো হোযুমি জানান, কক্সবাজার জেলার গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেওয়া এই অর্থ রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় দেওয়া স্থানীয়দের জীবনে স্থিতিশীলতা আনতে ব্যয় করা হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়ন ও ইউনিসেফের তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পের আওতায় পুষ্টি, পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি, শিক্ষা এবং শিশু সুরক্ষার মধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলার মাধ্যমে উপকৃত হবে দুই লাখ শিশু ও পরিবার।
তিনি আরও জানান, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি এখনও সংকটময় রয়েছে। কারণ কক্সবাজারেই প্রায় ২৩ লাখ মানুষের বাস। এদের মধ্যে ৩৩ শতাংশের অবস্থানই দরিদ্র সীমার নিচে। এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তির হার ৫৫ শতাংশ এবং ৫০ হাজার শিশু শ্রমের সঙ্গে যুক্ত। তাই এ জেলায় মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে ইইউ’র বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তিরিঙ্ক বলেন, শরণার্থী সংকটের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সবার ভবিষ্যত নিশ্চিতে আমাদের কার্যক্রম আরও ভালোভাবে পরিচালনা করতে হবে। আমাদের সহায়তার লক্ষ্য হচ্ছে- টেকনাফ ও পেকুয়ায় বসবাসকারী রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশিদের জন্য মানবিক ও উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা।
রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে তিনি বলেন, এ কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার একটি ইতিবাচক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। আমরা এটা সমর্থন করি। তাই রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয় দেওয়া স্থানীয়দের সহায়তায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন পর্যন্ত ইউনিসেফকে দুই কোটি ৪৮ লাখ ইউরো সহায়তা দিয়েছে।
এছাড়া ইউনিসেফের তিন বছর মেয়াদী প্রকল্পের আওতায়- তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা ১৯ হাজার ৪০০ শিশুকে পুষ্টি সেবা, ৫৩ হাজার কিশোর-কিশোরীকে পুষ্টি সচেতনতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও ১০০ তরুণকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি ১০ হাজার ভিজিডি (ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট) সুবিধাভোগীকে দেওয়া হবে পুষ্টি ও খাদ্যের উন্নতি, ফসল উৎপাদন ও কাটার পরে ক্ষতি প্রতিরোধ এবং খাদ্য তালিকায় বৈচিত্র্য আনার প্রশিক্ষণ। এছাড়া ১২০ জন কৃষিকর্মীকেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন- ইউনিসেফের চিফ (ওআইসি কক্সবাজার) বেরটা ট্রাভিয়েসো, এলজিইডি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রোকসানা কাদের এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৯/আপডেট: ১৯৪০ ঘণ্টা
এসই/এসএ