বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সচিবালয়ের কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ১৭টি দফতর ও সংস্থার সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি ২০১৯-২০ সই অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সব দফতরপ্রধান চুক্তিপত্রে সই করে তা কৃষিমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অনেক দেশ ঘুরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সভা-সেমিনারে অংশ নেন। কিন্তু, সেখান থেকে পাওয়া জ্ঞানের প্রয়োগ তেমন দেখা যাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নিতে বিদেশ গেলে, সেখান থেকে পাওয়া জ্ঞান দেশে এসে প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া, যারা মন্ত্রণালয়ের ডেস্কে কাজ করেন তাদের জন্য, কোনো ফাইল কবে কখন কোথায় যায়, সে সম্পর্কে মনিটরিং বাড়াতে হবে। বিনা কারণে কোনো ফাইল যেন পড়ে না থাকে। তাহলে, আমাদের কাজে গতি বাড়বে।
তিনি বলেন, ধানের দাম নিয়ে আমরা অস্বস্তির মধ্যে আছি। এ জন্য চাল রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শুধু সিদ্ধান্ত নিলে হবে না। আমাদের আন্তর্জাতিক বাজারে যেতে হবে। এ লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে, ফিলিপাইন থেকে ৩-৪ লাখ মেট্রিক টন চাল রফতানির কথা চলছে। এটা আমাদের জন্য ভালো খবর। তবে, চাল রফতানিতে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের আরও উদ্যোগী হতে হবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি দক্ষতার সঙ্গে বাস্তবায়নের স্বীকৃতি স্বরূপ কৃষি মন্ত্রণালয়কে সম্মাননা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়নে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কাজ করতে হবে দেশের জন্য, জনগণের জন্য, এ দেশের মেহনতি খেটে খাওয়া মানুষের জন্য। দেশ সেবার ব্রত নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আপনাদের প্রচেষ্টা ও দক্ষতায় দেশ বর্তমানে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়শীল দেশে উন্নীত হয়েছে। এক্ষেত্রে কৃষকরা অপরিসীম ভূমিকা রেখেছেন। আমাদের ভিশন ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়ন করে উন্নত দেশের মর্যাদা অর্জন করতে হবে। এরপর রয়েছে ডেল্টা প্লান ২১০০।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারি কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির আওতায় বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি হয়েছে। এ চুক্তিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কৌশলগত উদ্দেশ্য, এসব উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য গৃহীত কার্যক্রম ও এর ফলাফল পরিমাপের জন্য কর্মসম্পাদন সূচকসহ লক্ষ্যমাত্রাগুলো ধরা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট অর্থবছর শেষ হওয়ার পর ওই বছরের চুক্তিতে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাগুলোর বিপরীতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের প্রকৃত অর্জন মূল্যায়ন করা হয়।
অনুষ্ঠানে চুক্তি সই হয় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, কৃষি বিপণন অধিদফতর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমি, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, কৃষি তথ্য সার্ভিস, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি ও বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের সঙ্গে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, জুন ২০, ২০১৯
জিসিজি/একে