বুধবার (১৯ জুন) দুপুরে সদর থানায় শ্রীপুর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের মনজুর রহমান নামে এক ভুক্তভোগী মামলাটি দায়ের করেন। অপর দুই আসামি হচ্ছেন- মাসুদুল হকের স্ত্রী জাহানারা বেগম ও তার মালিকানাধীন জাহান ক্লিনিকের ম্যানেজার সাগর হোসেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২২ মার্চ মনজুর রহমান তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ছালমাকে (৩০) রাত ৮টার দিকে ইজিবাইকে করে মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু জাহান ক্লিনিকের সামনে পৌঁছালে আসামিরা তার স্ত্রীকে বহনকারী ইজিবাইক থামিয়ে জোরপূর্বক ক্লিনিকের ভেতরে নিয়ে যায়। পরে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে রাত ৩টার দিকে মাসুদুল হক রোগীর সিজারিয়ান অপারেশন করার সময় জরায়ুর নাড়ি কেটে ফেলেন। এ সময় রোগীর শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে তিনি দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে নিয়ে গেলে ২৬শে মার্চ রোগীর মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে সে সময়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে গেলে ডাক্তার মাসুদুল হক সন্ত্রাসীদের দিয়ে খুন, জখমের ভয় দেখালে তিনি তা করতে পারেননি। কিন্তু সম্প্রতি মিডিয়ায় তার ভুয়া চিকিৎসার ঘটনা প্রকাশিত হওয়ার পাশাপাশি তার অপচিকিৎসা বন্ধ ও বিচারের দাবিতে সর্বস্তরের মাগুরাবাসী মানববন্ধন, ঝাড়ু মিছিল এবং জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয়। এ অবস্থায় সিভিল সার্জন কর্তৃক মাসুদুলের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন ও জাহান ক্লিনিকের সব কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় তিনি এখন সাহস করে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
মাগুরা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) খান মুহাম্মদ রেজওয়ান বাংলানিউজকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মাসুদুল হককে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করা হয়েছে।
মাগুরা ক্লিনিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার ফরহাদ আহমেদ বাংলানিউজকে এ বিষয়ে জানান, মাসুদুল হক নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাগুরায় অস্ত্রোপচারসহ নানা জটিল রোগের চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। মানবিক বিভাগে এইচএসসি পাশ হলেও তিনি নিজেকে এমবিবিএস ডিগ্রিধারী হিসেবে পরিচয় দেওয়ার পাশাপাশি পিজিটি, সিডিডি সার্জন এমন যোগ্যতার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি মূলত অন্যের সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে রাশিয়া থেকে একটি ডিপ্লোমা সনদ জোগাড় করে অবৈধ পন্থায় ডক্টরস কাউন্সিলের সনদ নেন। তার ভুল অস্ত্রোপচারে অসংখ্য রোগী মারা গেছেন এবং অনেকে জটিল অসুস্থতায় ভুগছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৯
এমআরএ/আরএ