ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

দেশে প্রথম লোহার খনি আবিষ্কার, বিপুল মজুদের অস্তিত্ব

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৮ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৯
দেশে প্রথম লোহার খনি আবিষ্কার, বিপুল মজুদের অস্তিত্ব লোহার সন্ধানে কূপ খকন করা হচ্ছে/ছবি: বাংলানিউজ

দিনাজপুর: দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার ইসবপুর গ্রামে লোহার আকরিকের (ম্যাগনেটাইট) খনি আবিষ্কার করেছে বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি)।

দীর্ঘ ২ মাস ধরে কূপ খনন করে অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর মঙ্গলবার (১৮ জুন) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জিএসবি’র কর্মকর্তারা।

তারা জানান, সেখানে ভূগর্ভের ১ হাজার ৭৫০ ফুট নিচে ৪০০ ফুট পুরুত্বের লোহার একটি স্তর পাওয়া গেছে।

যা দেশের জন্য একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা এবং বাংলাদেশে প্রথম আবিষ্কার।

পরীক্ষা করা হচ্ছে লোহার উপস্থিতিমঙ্গলবার দুপুরে খননকাজে নিয়োজিত জিএসবি’র উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মাসুম বাংলানিউজকে জানান, বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে লোহার খনি আবিষ্কার করা হয়েছে, সেসব খনির লোহার মান ৫০ শতাংশের নিচে। আর বাংলাদেশের লোহার ৬৫ শতাংশের উপরে।

জয়পুরহাট বিসিএসআইআর পরীক্ষাগারে পরীক্ষায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।

...ইসবপুরে লোহার খনি আবিষ্কার বাংলাদেশে এটিই প্রথম। যার ব্যাপ্তি রয়েছে ৬-১০ বর্গ কিলোমিটার পর্যন্ত। এখানে কপার, নিকেল ও ক্রোমিয়ামেরও উপস্থিতি রয়েছে। ১১৫০ ফুট গভীরতায় চুনাপাথরের সন্ধানও মেলে।

তিনি আরও জানান, ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর ২০১৩ সালে এ গ্রামের ৩ কিলোমিটার পূর্বে মুশিদপুর এলাকায় কূপ খনন করে খনিজ পদার্থের সন্ধান পেয়েছিল। সেই গবেষণার সূত্রধরে দীর্ঘ ৬ বছর পর চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে কূপ খনন শুরু করা হয়। এরপর ১৩৮০-১৫০০ ফুট গভীরতা পর্যন্ত খননকালে সেখানে আশার আলো দেখতে পাওয়া যায়। এ খবর পেয়ে ২৬ মে জিএসবি’র মহাপরিচালক জিল্লুর রহমান চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখানে পরিদর্শনে আসেন। এসময় মহাপরিচালক সাংবাদিকদের সুখবর না দিলেও লোহার খনি আবিষ্কার হতে চলেছে এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। অবশেষে দীর্ঘ চেষ্টার ফলে ১৭৫০ ফুট গভীরতা খনন করে লোহার খনির আবিষ্কার করা হয়েছে। সেখানে প্রায় ৪০০ ফুট পুরুত্বের লোহার আকরিকের এ স্তরটি পাওয়া গেছে।

...এ অঞ্চলে ৬০ কোটি বছর আগে সমুদ্র ছিল। সেই কারণে এখানে জমাট বাঁধা আদি শিলার ভেতরে লোহার আকরিকের এ সন্ধান পাওয়া যায়।

উপজেলা সদর থেকে ১১ কিলোমিটার পূর্বে ইসবপুর গ্রাম। এ গ্রামের কৃষক ইছাহাক আলীর কাছ থেকে ৫০ শতক জমি ৪ মাসের জন্য ৪৫ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে খনিজ পদার্থের অনুসন্ধানে কূপ খনন শুরু করে ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর।

জিএসবি’র উপ-পরিচালক (ড্রিলিং ইঞ্জিনিয়ার) মাসুদ রানা বাংলানিউজকে জানান, গত ১৯ এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে কূপ খনন শুরু করা হয়। ৩০ সদস্যের বিশেষজ্ঞ একটি দল ৩ শিফটে এ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

আলীহাট ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি গোলাম মওলা ও ইসবপুর গ্রামের বাসিন্দারা বাংলানিউজকে জানান, আমরা জানতে পারলাম এখানে লোহার খনি পাওয়া গেছে। এখান থেকে লোহা উত্তোলন করা হলে এখানকার মানুষদের জীবনমান পাল্টে যাবে। কর্মসংস্থান হবে এখানকার মানুষদের। দেশের জন্যও লাভজনক হবে। এমনই আশায় বুক বাঁধছেন এখানকার সর্বস্তরের মানুষ। তাই গুরুত্ব বিবেচনায় সরকারের কাছে খনি বাস্তবায়নে জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা,  জুন ১৮, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।