ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘আদালত খালেদাকে জামিন দিলে সরকারের হস্তক্ষেপ থাকবে না’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২০ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৯
‘আদালত খালেদাকে জামিন দিলে সরকারের হস্তক্ষেপ থাকবে না’ যৌথসভায় বক্তব্য রাখছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আদালত জামিন দিলে সেক্ষেত্রে সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সোমবার (১৭ জুন) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ক্ষমতাসীন দলটির ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত যৌথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমন্বয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আগামী সপ্তাহে আদালত খালেদা জিয়ার জামিন দেবে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের এ সংক্রান্ত বক্তব্যের বিষয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি একজন বিজ্ঞ আইনজীবী, তিনি হয়তো ধারণা করেই বলেছেন। এক্ষেত্রে বিচার সম্পূর্ণটাই আদালত করেছেন। তাকে (খালেদা জিয়া) শাস্তি দিয়েছেন আদালত। জামিন দেওয়ার দায়িত্বও আদালতের। আমরা সবসময় আদালতকে সম্মান প্রদর্শন করি। তাই আদালতের রায় সর্বশেষ বিচার হিসেবে গণ্য হবে।

নির্বাচিত সংসদকে যারা ‘অবৈধ’ বলে তারাই ‘অবৈধ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচিত সংসদকে যারা অবৈধ বলে, আদালতের রায় অনুসারে দেখা যায় তাদের ‘জন্মই অবৈধ’।  

আসন্ন আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে, কর্মসূচিও দিয়েছি। সবাইকে কাজ ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। সে অনুসারে সবাই দায়িত্ব পালন করবেন। জনগণের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবেন। এর প্রতিদান মরণেও পাবেন। কাজ ও সততা দিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে হবে। সততার চেয়ে বড় শক্তি আর নেই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অসুস্থতার সময় আমি বুঝতে পেরেছি মানুষ আমাকে কতোটা ভালোবাসে। আমি অনেকটা না ফেরার দেশে চলে যাচ্ছিলাম। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের সন্তানের জন্য যা যা করতেন আমার জন্য তাই করেছেন। আর মানুষ যে আমাকে এতোটা ভালোবেসেছে এটাই আসলে একজন রাজনীতিকের কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া।  

আওয়ামী লীগে নতুন সদস্যদের যোগদান করানোর নির্দেশ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের আত্মা এই শহর এলাকার সুরম্য দালানে নয়। আওয়ামী লীগের আত্মা রয়েছে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের কাছে। এটা উপলব্ধি করতে পারলে আওয়ামী লীগকে ধারণ করা যাবে। এই ঢাকা নগরীর দক্ষিণ থেকে অনেক সাহসী, ত্যাগী ও দুঃসময়ের নেতা হারিয়ে গেছেন। কিন্তু আমরা কি তাদেরকে প্রতিস্থাপন করতে পেরেছি? হারিয়ে যাওয়া সেসব নেতাদের শূন্যস্থান পূরণ করে নতুন নেতাদের এখনো বসাতে পারিনি। তাই দ্রুত দলে নতুন সদস্য নেওয়ার প্রক্রিয়া আবার শুরু করতে হবে। আমাদের নেত্রী বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও আমরা কাজটি করিনি। আমি অসুস্থ না হলে আরো অনেক আগে থেকেই শুরু করতে পারতাম। এই কাজ দ্রুত শুরু হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচনে অনেক মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছেন, মিছিল করেছেন ও ভোট দিয়েছেন। তাদেরকে ধরে রাখতে হবে। তাদেরকে দলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, না হলে তারাই হারিয়ে যাবে। কারণ কর্মীরাই হলো আওয়ামী লীগের প্রাণ। কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ ছিল বলেই তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে ওয়ান ইলেভেনে শেখ হাসিনা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন।  

জোড়াতালি দিয়ে আওয়ামী লীগ করবেন না উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, ত্যাগী ও দুঃসময়ের কর্মীদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ টিকবে না। এখন যদি ক্ষমতা দেখাই তাহলে কাল কেউ সালামও দেবে না। তাছাড়া সুবিধাভোগীদেরকে দলে সুযোগ দেওয়া যাবে না। আমাদের দল এখনও শেখ হাসিনার সমকক্ষ হতে পারেনি। কারণ নেত্রী নিজের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেকে অতিক্রম করেছে। এজন্য আমাদেরকে দলের প্রতি আরো ত্যাগী হতে হবে। দলের কেউ অসুস্থ হলে তার সেবাদানে নিযুক্ত হতে হবে, এতেও জনপ্রিয়তা বাড়ে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৮ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৯
এমএএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।