ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ওসি মোয়াজ্জেম গ্রেফতারে নুসরাতের পরিবারে স্বস্তি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০২ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৯
ওসি মোয়াজ্জেম গ্রেফতারে নুসরাতের পরিবারে স্বস্তি নুসরাতের মা ও ভাই

ফেনী: ফেনীর সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতারে নুসরাতের পরিবারসহ ফেনীতে স্বস্তি বিরাজ করছে। গ্রেফতারের খবর শোনার পর নুসরাতের পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ব্যারিস্টার সুমনসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

খবর জানার পর এক প্রতিক্রিয়ায় নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমার মেয়ে হত্যার বিচারের দায়িত্ব নিয়েছেন। ওনার কারণে নুসরাত হত্যা মামলার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে।

ব্যারিস্টার সুমনের করা মামলায় ওসি মোয়াজ্জেম গ্রেফতার হয়েছেন।  

তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনসহ সমগ্র দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

নুসরাতের মা বলেন, ওসি মোয়াজ্জেম আমার মেয়ের হত্যাকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেছেন। তা প্রতিষ্ঠিত করতে অবৈধভাবে ভিডিও ধারণ করেছেন। আমরা এর আগেও ওসি মোয়াজ্জেমের বিচার চেয়েছি। আমি তার সর্বোচ্চ শান্তি দাবি করছি।

নুসরাতের বড় ভাই ও নুসরাত হত্যা মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, ওসি মোয়াজ্জেম নুসরাতকে তার অফিসে নিয়ে আপত্তিকর ছবি তুলেছেন ও নাজেহাল করেছেন সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে পুলিশের গ্রহণযোগ্যতা আরো বেড়ে গেছে।

নুসরাতের ছোটভাই রাশেদুল হাসান রায়হান সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিচার শুরুর মধ্য দিয়ে সর্বোচ্চ শান্তি দেওয়া হোক।

নুসরাত হত্যা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, দীর্ঘদিন পালিয়ে থেকে ওসি মোয়াজ্জেম অবশেষে গ্রেফতার হয়েছেন। নুসরাত হত্যা মামলার আসামিরাও বেশিদিন পালিয়ে থাকতে পারেনি। পিবিআই ও পুলিশ তাদের অল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করেছে। আমরা ন্যায় বিচারের মাধ্যমে আসামিদের সর্বোচ্চ শান্তি আশা করছি।

গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা নুসরাত জাহান রাফিকে নিজ কক্ষে ডেকে শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় নুসরাতের পরিবার থানায় অভিযোগ করতে গেলে ওসি মেয়াজ্জেম অশ্লীলভাবে জেরা করে ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তীতে সে ভিডিও ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে দেওয়া হয়।  

পরে ১৫ এপ্রিল উচ্চ আদালতের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সোনাগাজী মডেল থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। ২৭ মে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ওইদিন আদালত ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ২৯ জুন উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করেন তিনি। এরপর থেকে ওসি মোয়াজ্জেম পলাতক ছিলেন। তাকে ধরতে গ্রামের বাড়ি যাশোরের চাঁচড়া ও রাজধানীর একাধিক সম্ভাব্য স্থানেও অভিযান চালায় পুলিশ।

এর আগে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ১০ এপ্রিল ওসি মোয়াজ্জেমকে সোনাগাজী মডেল থানা থেকে প্রত্যাহার করে রংপুর রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়।

২৭ মার্চ শ্লীলতাহানির ঘটনায় দায়ের করা মামলা তুলে নিতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার লোকজন নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়ার পর মামলা তুলে না নেওয়ায় অধ্যক্ষের নির্দেশে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে নুসরাত জাহান রাফিকে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় অধ্যক্ষের সহযোগীরা। পরে ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধিক অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৯
এসএইচডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।