ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘নদী দখলকারীরা যতো প্রভাবশালীই হোক, ছাড় নেই’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৭ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৯
‘নদী দখলকারীরা যতো প্রভাবশালীই হোক, ছাড় নেই’ নদী পরিদর্শনকারী প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। ছবি: বাংলানিউজ

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকার বালু নদী দূষণ ও দখলের কবলে পড়েছে। এক শ্রেণীর প্রভাবশালী নদী দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে এর প্রশস্ততা কমিয়ে এনেছেন। পাশাপাশি, বিষাক্ত বর্জ্য ফেলে নদীদূষণও করছেন তারা। শুধু তাই নয়, এ নদীর শাখা-প্রশাখাগুলোও দখল, দূষণ ও নাব্যতা সঙ্কটে ভুগছে। দূষণের কারণে নদীর পানিতে পচা গন্ধে পরিবেশ হুমকির মুখে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে জলজ পরিবেশের ওপর। বিনষ্ট হচ্ছে মৎস্য সম্পদ।
 

শনিবার (১৫ জুন) ও রোববার (১৬ জুন) বালু নদী পরিদর্শন করে এ মতামত দিয়েছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনসহ একটি প্রতিনিধিদল।  

নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান হাওলাদারের নেতৃত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের উপ-সচিব শাহাদাত হোসেন, ঢাকা জেলার এডিসি (রেভিনিউ) আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশরাফ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল মতিন, রাজউকের অথরাইজড অফিসার মাকিদ এহসান, বিআইডব্লিউটিএর ট্রেসার আব্দুল হাই, কালীগঞ্জ উপজেলার ইউএনও শিবলি সাদিক, রূপগঞ্জের এসিল্যান্ড তরিকুল ইসলাম, তেজগাঁও সার্কেলের এসিল্যান্ড এবিএম কুদরত ই খুদা, রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিনিধিদলসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা।

 

পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, নদীর ৫৪ স্থানে দখল ও ২৩ স্থানে দূষণ করছেন প্রভাবশালীরা।  

নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, যেকোনো মূল্যে নদী বাঁচাতে হবে। নদী বাঁচলে দেশ বাঁচবে। যারা নদী দখল ও দূষণ করছেন, তারা যে ব্যক্তি, গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দলের সদস্য বা যতো প্রভাবশালীই হোন না কেন, কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা সিএস রেকর্ড দেখে সীমানা নির্ধারণ করে নদী দখলমুক্ত কার্যক্রম শুরু করবো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে শিগগিরই দখল ও দূষণমুক্ত করে নদীকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে। তাই, সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

লেখক, কলামিস্ট, গবেষক লায়ন মীর আব্দুল আলীম বলেন, একসময় মানুষ নদীর পানি দিয়ে রান্না করতো। এমনকি, নদীর পানি পানও করতো। আজ সে নদীর পানি পচা দুর্গন্ধে বিষ হয়ে উঠেছে। আর, এ পানি থেকে বিষাক্ত গ্যাস বের হয়ে মানুষ দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিভিন্ন কল-কারখানায় ইটিপির ব্যবস্থা না করে নদীতে সরাসরি বর্জ্য ফেলায় নদীর পানি দূষিত হয়ে পড়ছে। নদী রক্ষায় আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।

ঢাকা জেলার এডিসি (রেভিনিউ) আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, নির্দেশনা পেলেই বালু নদীর দু’পাশে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করবো। বিশেষ করে, ঢাকা জেলার পাশাপাশি গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে এ উচ্ছেদ অভিযান চলবে। বালু নদী রক্ষা করা সবার দায়িত্ব। দখলদারদের আগে থেকেই নদী দখলমুক্ত করতে বলা হলো। তা না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর, যারা নদীদূষণ করছেন, তারাও এ থেকে বিরত থাকুন। তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ