ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

থানা হেফাজতে যুবককে নির্যাতন, ৪ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৪ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৯
থানা হেফাজতে যুবককে নির্যাতন, ৪ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত থানা হেফাজতে যুবককে নির্যাতন। ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: ফোন করে ডেকে এনে সোহান বাবু আদর (৩২) নামে এক যুবককে বগুড়া সদর থানা হেফাজতে আটকে রেখে কতিপয় পুলিশ অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের ছবিসহ ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পরপরই বিষয়টি ‘টক অব দ্য টাউনে’ পরিণত হয়।

শনিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) নির্দেশে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় অভিযুক্ত চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।  

বরখাস্তকৃতরা হলেন- উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল জব্বার, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নিয়ামত উল্লাহ, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) এরশাদ হোসেন ও কনস্টেবল এনামুল হক।

 

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী বাংলানিউজকে জানান, সদর থানায় ঘটে যাওয়া ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে সরকারি কাজে রাজশাহীতে অবস্থানরত এসপি আলী আশরাফ ভূঞা দায়িত্বরত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল স্যারকে অভিযুক্ত চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশনা দেন। পরে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে।
 
বগুড়া পুলিশ সুপারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ব্যক্তিগত অপকর্মের দায়ভার পুলিশ বাহিনী কোনো ভাবেই গ্রহণ করবে না। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। সাময়িক বরখাস্ত হওয়া চার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় ডেকে এনে এক ব্যবসায়ীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
 
এদিকে পুলিশের নির্যাতনের শিকার সোহান বাবু আদর (৩২) বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তিনি বগুড়া শহরের সুলতানগঞ্জ পাড়ার সাইদুর রহমানের ছেলে।
 
ভুক্তভোগীর পরিবারের স্বজনরা জানান, বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাত ১০টার দিকে থানার কনস্টেবল এনামুল হক আদরের মোবাইলে ফোন করে থানায় যেতে বলেন। পরে আদর থানায় যান। থানায় যাওয়ার পরপরই তাকে থানা হাজতে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে রাতেই তার বোন সম্পা থানায় যান।
 
সম্পা থানায় গেলে তাকে জানানো হয়, ‘একই এলাকার সাথী বেগম তার মেয়েকে ইভটিজিং ও পাওনা টাকা না দেওয়ার অভিযোগ এনে আদরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন’। এ কারণে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।  
 
শজিমেকে চিকিৎসাধীন আদর জানান, বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দিনগত রাত থেকে শুক্রবার (১৪ জুন) দিনগত রাত ১১টা পর্যন্ত এসআই জব্বার, কনস্টেবল এনামুলসহ অজ্ঞাতকয়েকজন মিলে তাকে নির্যাতন করে থাকেন। এতে তিনি 
কয়েকবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। থানা হেফাজতে আদর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তার বাবা ও বোনকে থানায় ডেকে আনা হয়।  
পরে তাদের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে আদরকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে আদর অভিযোগ করেন।
 
পরে শুক্রবার (১৪ জুন) রাতেই আদরকে গুরুতর আহত অবস্থায় শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
 
এদিকে আদরের বোন সম্পার অভিযোগ, ঘটনাটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্যারকে জানাতে গেলে ওই পুলিশ সদস্যরা তাকে ভয়ভীতি দেখান। এ কারণে শুক্রবার রাতে আর ঘটনাটি কাউকে জানানো হয়নি।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৯
এমবিএইচ/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।