মৃত নারীর স্বজনদের অভিযোগ যৌতুকের মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় ওই গৃহবধূকে বিষপান করিয়ে হত্যা করেছে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
স্বজনদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে শেবাচিম হাসপাতাল মর্গে মৃত নারীর মরদেহ ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে।
মৃত গৃহবধূ নুসরাত জাহান ইভা (২২) ঝালকাঠি জেলার নলছিটি পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডস্থ বৈচন্ডি এলাকার তারিকুল ইসলাম লিংকনের স্ত্রী। তাদের সংসারে ১৮ মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে।
মৃত নারীর বাবা মো. আক্তার হোসেন গাজী বাংলানিউজকে বলেন, একই এলাকার বাসিন্দা আহসান হাবিবের ছেলে তারিকুলের সঙ্গে নুসরাতের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। এর সূত্রধরে গত ৪ বছর আগে উভয় পরিবারের অমতে তারা বিয়ে করে। কিছুদিন পরে যৌতুকের জন্য নুসরাতের ওপর তার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে। গত ৪ বছরে প্রায় ৪ লাখ টাকার মতো যৌতুক দেওয়াও হয়। সর্বশেষ একটি মোটরসাইকেলের বায়না ধরে লিংকন। যা দিতে নুসরাত অপারগতা প্রকাশ করলে তার ওপর নির্যাতন শুরু হয়।
ধারাবাহিকতায় গত ৩১ জুন দুপুরে ঘরের মধ্যে আটকে নুসরাতের ওপর স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করে। পরে তার মুখের মধ্যে কীটনাশক ঢেলে দেয় বলে অভিযোগ মৃত গৃহবধূর বাবার। যা মেয়ে জীবিত থাকতেই সবাইকে জানিয়েছিলো।
এ ঘটনার পরে তাকে উদ্ধার করে নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে দু’দিনের মাথায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শুক্রবার ইভার মৃত্যু হয়। আর মিথ্যে তথ্য দিয়ে নুসরাতকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তির বিষয়টি মৃত্যুর পরেই জানতে পারেন স্বজনরা।
এ বিষয়ে নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন বলেন, শুরু থেকে এ ঘটনার কোনো অভিযোগ আমরা পায়নি। তার মধ্যে যে গৃহবধূ মারা গেছেন তাকে বিষপান করানো হয়েছে বলে দাবি করা হলেও হাসপাতালের কাগজপত্রে অসুস্থতার কারণ নিউমোনিয়া লেখা রয়েছে। তাই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত হত্যা মামলা নেওয়া সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০১৯
এমএস/এএটি