ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

উচ্চৈঃস্বরে কথা বলতে নিষেধ করায় খুন!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১০ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৯
উচ্চৈঃস্বরে কথা বলতে নিষেধ করায় খুন! আটক মিন্টু মোল্লা

ঢাকা: ঈদের সময় বাড়িতে বেড়াতে আসা মেহমান ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একসঙ্গে গল্প করছিলেন জনৈক আতাউর রহমান খান জুয়েল (৬১)। মধ্যরাতে হঠাৎ বাড়ির সামনের রাস্তায় কেউ একজন মোবাইলে উচ্চৈঃস্বরে অশ্লীল কথা বলছিলেন। বিরক্ত হয়ে আতাউর বারান্দা থেকে ওই ব্যক্তিকে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলতে নিষেধ করেন।

এতে উল্টো মিন্টু মোল্লা (৩২) নামে ওই ব্যক্তি ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়ির মালিক আতাউরকে গালাগাল শুরু করেন। এসময় আতাউর তার বাড়িতে বেড়াতে আসা আত্মীয় চুন্নু ভূঁইয়াকে (৫৫) সঙ্গে নিয়ে বাইরে যান এবং মিন্টু মোল্লার কাছে গালাগালের কারণ জানতে চান।

এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মিন্টুর এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাতে নিহত হন চুন্নু ভুঁইয়া।
 
পূর্ব আরিচপুর এলাকার বাসিন্দা আতাউরের বাসায় ঈদ উপলক্ষে তার সম্বন্ধী চুন্নু বেড়াতে আসেন। গত ৮ জুন দিনগত রাতে তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে চুন্নু মারা যান। এ ঘটনায় পরদিন টঙ্গী পূর্ব থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
 
এরপর হত্যাকারীকে খুঁজে বের করতে ছায়াতদন্ত শুরু করে র‌্যাব-১। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১ এর একটি দল ঢাকা, ময়মনসিংহ, জামালপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় টানা চারদিন অভিযান পরিচালনা করে। সবশেষ বুধবার (১২ জুন) রাজধানীর শনির আখড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে মিন্টুকে গ্রেফতার করা হয়।
 
র‌্যাব জানায়, ঘটনার দিন রাতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদ উপলক্ষে আসা আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে গল্প করছিলেন আতাউর রহমান খান জুয়েল। রাত ১২টার দিকে বাসার সামনে রাস্তার উপর আসামি মিন্টু মোল্লা মোবাইল ফোনে উচ্চৈঃস্বরে অশ্লীল ভাষায় কথা বলছিলেন। এ সময় আতাউর রহমান বাসার বারান্দা থেকে মিন্টুকে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলতে নিষেধ করেন। এতে মিন্টু ক্ষিপ্ত হয়ে আতাউরকে গালিগালাজ শুরু করেন।

তখন আতাউর তার বাসায় বেড়াতে আসা সম্বন্ধী চুন্নু ভূঁইয়াকে সঙ্গে নিয়ে বাসার নিচে গিয়ে মিন্টুর কাছে গালিগালাজের কারণ জিজ্ঞেস করেন। এতে মিন্টু উত্তেজিত হয়ে ধাক্কাধাক্কি শুরুর এক পর্যায়ে তার প্যান্টের পকেট থেকে ছুরি বের করে চুন্নুর বুকে ও পিঠে আঘাত করে মারাত্মকভাবে জখম ও আতাউরে হাতে আঘাত করেন। পরে চুন্নু ভূঁইয়াকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।

র‌্যাব-১ এর স্কোয়াড কমান্ডার (সিপিসি-২) সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সালাউদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, ঘটনার সময় মিন্টু নিজ বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছিলেন ও মোবাইলে তার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলেন। এসময় আতাউর তাকে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলতে নিষেধ করায় তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়। এক পর্যায়ে মিন্টু তার পকেটে থাকা লাইটার সাদৃশ্য ছুরি দিয়ে চুন্নু ভুইয়ার বুকে ও পিঠে আঘাত করলে তিনি মারা যান।
 
ঘাতক মিন্টু দীর্ঘ ১৫ বৎসর ধরে সৌদি আরবে কর্মরত রয়েছেন।  ছুটিতে দেশে এসেছিলেন। ঘটনার পর আত্মগোপনের জন্য প্রথমে বন্ধু মোমেন এর বাসায় যান। সেখানে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে বোনের বাসায় রাত্রিযাপন করে সকালে ময়মনসিংহ চলে যান। এরপর সেখান থেকে গাজীপুর, জামালপুর, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে আত্মগোপন করে। সবশেষ শনির আখড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকারী মিন্টুকে গ্রেফতার করা হয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৯
পিএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।