ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও নেই চালক, রোগীদের ভোগান্তি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৬ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৯
অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও নেই চালক, রোগীদের ভোগান্তি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

মানিকগঞ্জ: প্রায় ৪ বছর হতে চললো মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক অবসরে গেছেন। কিন্তু এখনো নিয়োগ দেওয়া হয়নি নতুন চালক। রোগীদের অ্যাম্বুলেন্স সেবা দেওয়া হচ্ছে জোড়াতালি দিয়ে। ফলে প্রতিনিয়তই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সেবা নিতে আসা রোগীদের।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে দু’টি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও একটি কাগজে-কলমে অকার্যকর, আর একটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে হাসপাতাল কমপাউন্ডে।  

যদিও আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে মাঝে-মধ্যে একজন চালক রোগীদের অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিয়ে থাকেন।

তবে সেটা নিয়েও রোগীদের অভিযোগ রয়েছে- তাকে প্রয়োজনের সময় কখনোই পাওয়া যায় না। এজন্য বাধ্য হয়ে অনেক রোগী বিকল্প হিসেবে ইজিবাইকে করে ছুটে যান জেলা সদর হাসপাতালের দিকে।

বুধবার (১২ জুন) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে অনেক রোগী অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে ইজিবাইকে করে জেলা সদর হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাচ্ছেন।  

এমনই একজন রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বইচর এলাকার পান্নু বিশ্বাস (৫৫)। তিনি শ্বাসকষ্ট নিয়ে বেলা ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরিভিত্তিতে রাজধানীর মহাখালী নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলেও হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের (আউট সোর্সিং) চালকের সন্ধান না পেয়ে বাধ্য হয়ে বিকেল ৪টার দিকে ভিন্ন উপায়ে পান্নু বিশ্বাস রাজধানীর ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।

...পান্নু বিশ্বাসের মেয়ে হাসনা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলানিউজকে বলেন, আমি আমার বাবাকে বেলা ১১টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখানকার চিকিৎসক বাবাকে নিয়ে মহাখালী নিয়ে যেতে বলেন। সকাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য বসে আছি, অনেকবার চালককে ফোন দিয়েছি তার নম্বর বন্ধ। তাই এখন বাধ্য হয়ে ভিন্ন উপায়ে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি।

হরিরামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এ উপজেলা হাসপাতালে অনেক দিন ধরে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস থেকে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত। একজন চালক (আউট সোর্সিং) দিয়ে চলছে অ্যাম্বুলেন্স। সময় মতো ওই চালককে পাওয়া যায় না। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে এ সার্ভিস সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক স্টাফ বাংলানিউজকে বলেন, এখানে অনেক দিন ধরে অ্যাম্বুলেন্সের চালক না থাকায় প্রতিনয়তই ভোগান্তি পোহাতে হয় রোগীদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে একজনকে চালক হিসেবে নিয়োগ দিলেও তাকে সময়মতো পাওয়া যায় না। আমরা ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়না। অধিকাংশ সময় অ্যাম্বুলেন্স তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকে। মাঝে মধ্যে সরকারদলীয় নেতা কর্মীদের ফোন পেলে তাদের রোগীদের জন্য আসে সে।

মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বাংলানিউজকে বলেন, আমার হরিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সের চালক ২০১৬ সালে অবসরে যায়। তারপর থেকেই অন্য ছয় উপজেলা থেকে একদিন করে চালকরা ডিউটি করে এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এছাড়া আরো একজন আউট সোর্সিং চালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে আজ কেন কোনো চালক ছিলো না তা খতিয়ে দেখে আমি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৯
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।