ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে মায়ের সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫০ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৯
মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে মায়ের সংবাদ সম্মেলন সংবাদ সম্মেলন, ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বরিশালে ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ ছাত্রী মিলি ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার মা পারভিন খানম।

একইসঙ্গে বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক পুনিল চন্দ্র সরকার নিজেই মিলিকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

চলতি বছরের ৩ মে (বৃহস্পতিবার) বরিশাল নগরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ফিসারি রোডের আলী আজিমের ভাড়া বাসা থেকে বিএম কলেজের ছাত্রী মিলি ইসলামের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মিলি ইসলাম বিএম কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স পরীক্ষার্থী ছিলেন।

মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে বুধবার (১২ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন মা পারভিন খানম।

তিনি বলেন, আমার মেয়ে বিএম কলেজের একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলো। সে নিজে থেকে কোনো দিনও আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

পারভিন খানম অভিযোগ করে বলেন, বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক পুনিল চন্দ্র সরকারের সঙ্গে আমার মেয়ের দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। পুনিল হিন্দু সম্প্রদায়ের হয়েও সে নিজেকে আমার মেয়ের কাছে মুসলমান পরিচয় দিয়েছে। এমনকি আমার মেয়েকে বিয়ে করবে বলে আশ্বস্ত করে। হত্যাকাণ্ডের ২ মাস আগে আমরা পুরো বিষয়টি জানতে পারি। মিলি বিয়ের কথা বললে পুনিল আমাদের নথুল্লাবাদের বাসায় গিয়ে হুমকি দেয়। পুনিল জানায়, সে বিবাহিত এবং তার সন্তান রয়েছে তাই বিয়ে করা সম্ভব নয়। এর মিলি বিষয়টি স্কুলের অধ্যক্ষ ও পুনিলের বাসায় জানিয়ে দেবে বলে হুঁশিয়ারি দিলে পুনিল বাঁধা দেয়। পরে পুনিল বিষয়টি কারও কাছে না বলার পরামর্শ দিয়ে মিলিকে শিগগিরই বিয়ে করবে বলে জানায়।

তিনি আরও জানান, ঘটনার এক দিন আগে স্বামী-স্ত্রী থাকবে বলে মিলি ফিসাসি রোডের ওই বাসা ভাড়া নেয়। রাতে পুনিল বাসায়ও আসেছে বলে জানায় বাড়ির মালিকের স্ত্রী শিউলী আজিম। আত্মহত্যার খবর পেয়ে বরিশাল এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘরের দরজা খোলা পায়। এসময় মিলির ফোন একটি পানি ভর্তি পাতিলের মধ্যে ডোবানো ছিলো। আর মিলি গলায় ওড়না দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝোঁলানো ছিলো। তবে তার পা মাটিতেই ছিলো। এ ঘটনায় পুলিশ বরগুনা জেলার সদর থানাধীন ২নম্বর গৌরীচন্ন এলাকা থেকে পুনিলকে গ্রেফতার করে। তবে, পুলিশ পুনিলের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠায়। মামলায় পুনিল চন্দ্র সরকার গত ৯ জুন আদালতের মাধ্যমে জামিনে মুক্তি পায়।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তেব্যে পারভীন খানম বলেন, আমার মেয়েকে পুনিল ব্যবহার করেছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও অভিযুক্ত পুনিলের গ্রেফতার দাবি করছি। তাকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। ইতোমধ্যে পুনিল জামিনে মুক্তি পেয়ে সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে আমাদের হুমকি দিয়ে আসছে। বিষয়টি নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে আরও একটি হত্যা কাণ্ড হবে বলেও হুমকি দেন।

এদিকে, বিএম কলেজ ছাত্রী মিলি হত্যার ঘটনায় তার মা পারভীন খানম বাদী হয়ে পুনিল চন্দ্র সরকারসহ অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামি করে বরিশাল মোকাম বিজ্ঞ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নম্বর ৬৪/১৯। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশকে (পিআইবি) নির্দেশ দিয়েছেন।

বাংলা‌দেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৯
এমএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।