ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কবুতর চুরির অভিযোগে ২ স্কুলছাত্রকে বেঁধে নির্যাতন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৩ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০১৯
কবুতর চুরির অভিযোগে ২ স্কুলছাত্রকে বেঁধে নির্যাতন কবুতর চুরির অভিযোগে স্কুলছাত্রকে বেঁধে নির্যাতন। ছবি: বাংলানিউজ

ঝালকাঠি: ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায় কবুতর চুরির অভিযোগে দুই স্কুলছাত্রকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার (১১ জুন)  রাতে এ ঘটনায় অভিযুক্ত নলছিটি উপজেলার সিদ্ধকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  পরে দুপুরে তাকে ঝালকাঠি আদালতে পাঠানো হয়েছে।



নির্যাতনের শিকার সজিব হোসেন খান (১৪) বাকেরগঞ্জ উপজেলার তবিরকাঠি গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে এবং রিফাত হোসেন জয় (১৪) একই গ্রামের আবদুল কুদ্দুস হাওলাদারের ছেলে। তারা দু’জনেই স্থানীয় জেড এ ভূট্টো মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।

এ ঘটনায় জয়ের বাবা বাদী হয়ে সোমবার (১০ জুন) রাতে নলছিটি থানায় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম ও পুলিশ কনস্টেবল শাহ আলমসহ আটজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

নির্যাতনের শিকার দুই ছাত্রের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নলছিটি উপজেলার সিদ্ধকাঠি ইউনিয়নের চৌদ্দবুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সরিকল অভিযোগ কেন্দ্রে কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল শাহ আলমের বাড়িতে গত শনিবার (৮ জুন) রাতে কবুতর চুরি হয়। রোববার (৯ জুন) সকালে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার তবিরকাঠি গ্রামের সজিব ও জয় নামে দুই শিশুকে আটক করে কনস্টেবল শাহ আলম। পরে সিদ্ধকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল বিচার বসিয়ে নির্যাতনের নির্দেশ দেন। কনস্টেবল শাহ আলম ব্লেড দিয়ে স্কুলছাত্র জয়ের মাথার মাঝখান থেকে চুল কেটে দেয়। এ সময় ওই দুই স্কুল ছাত্রকে ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। এ পুরো ঘটনা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেন স্থানীয় লোকজন। চুল কাটা ও গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের চিত্র ভিডিও করে এবং ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্র জয় জানায়, গত রোববার রাত থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের আটকে রেখে দফায় দফায় নির্যাতন চালানো হয়েছে। পরে পুলিশ সদস্য শাহ আলম ব্লেড দিয়ে তার মাথা ন্যাড়া করে দেন।

জয়ের বাবা আব্দুল কুদ্দুস অভিযোগ, আমার ছেলের নামে কবুতর চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মারধর করে চুল কেটে দিয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। আমি জরিমানার টাকা দিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে এনেছি।

সিদ্ধাকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, ছেলে দুটি আমাদের গ্রামে এসে কবুতর চুরি করেছে। এর আগেও তারা কয়েকজনের বাসা থেকে কবুতর নিয়ে গেছে। আমি তাদের আটক করিনি কিংবা মারধরও করিনি। আমি ঘটনাটি শুনেছি মাত্র। এলাকার প্রতিপক্ষরা আমাকে ফাঁসানোর জন্য এ অপপ্রচার চালাচ্ছে।

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন বাংলানিউজকে জানান, নির্যাতনকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। নির্যাতনের শিকার জয়ের বাবা মামলা দায়ের পর ইতোমধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৯
এমএস/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad