শনিবার (০৮ জুন) বিকেলে ওই গণধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার হওয়া টিপু সুলতান নেত্রকোণা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল ম্রংয়ের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা জানান। টিপু কেন্দুয়া উপজেলার বৈরাটি গ্রামের রঙ্গু মিয়ার ছেলে।
তার জবানবন্দির বিষয়টি বাংলানিউজকে জানান কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান।
স্বীকারোক্তিতে টিপু জানান, কেন্দুয়ার স্থায়ী বাসিন্দা গণধর্ষণের শিকার ওই নারী গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। সেখানেই তার সহকর্মী নূর আলমের সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে হয়। তবে সেসময় নূর তার প্রকৃত নাম পরিচয় গোপন করে সুমন নামে ওই নারীকে বিয়ে করেন। নূর কেন্দুয়ার বৈরাটি গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে।
টিপু আরও জানান, প্রথমদিকে নূরের দেওয়া বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন ওই নারী। তারপরও নূর ওই নারীর পেছনে পড়ে থাকায় তাকে বিভিন্ন সময় আইনের আশ্রয় নেওয়ার হুমকি দেন সেই নারী। পাশাপাশি জনসম্মুখে নূরকে অপমানও করতেন তিনি।
কিন্তু এক সময় নূরের চেষ্টা সফল হয়। বিয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান ওই নারী। বিয়ের পর স্ত্রীসহ শ্বশুর বাড়িতে ঘুরে আসেন নূর। নূর তখনও বিয়ের আগে করা ওই নারীর অপমানের রাগ পুষে রেখেছিলেন মনে। সেই অপমানের প্রতিশোধ নিতে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) মোটরসাইকেলে নূর তার স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে বের হন। পরে উপজেলার কান্দিউড়া ইউনিয়নের কুন্ডলি গ্রাম এলাকায় ইটখলার সামনে পৌঁছে বর্বর কায়দায় নিজের স্ত্রীকে এলাকার বন্ধুদের দিয়ে ধর্ষণ করান নূর। পূর্বপরিকল্পনা মতে এসময় নূর বন্ধুদের হাতে মারপিট খাওয়ার এবং আটকে থাকার অভিনয় করেন।
কিন্তু গণধর্ষণের পর নূর স্ত্রীকে ফেলে নিজেও ধর্ষকদের সঙ্গে আত্মগোপনে চলে গেলে ওইদিন রাতেই নির্যাতিত সেই নারী কেন্দুয়া থানায় মামলা করেন। পুলিশ তদন্তে নেমে টিপুকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসে এসব চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
ওসি মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান আরও জানান, এ গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত বৈরাটি গ্রামের সবুজ মিয়ার ছেলে আনোয়ার মিয়া ও আব্দুল কাদিরের ছেলে আমির হামজাকে শনিবার (০৮ জুন) গ্রেফতার করা হয়। নূরসহ তারা প্রত্যেকে পরস্পরের বন্ধু ও একই গ্রামের বাসিন্দা। তবে নূর এখনও পলাতক রয়েছেন। গ্রেফতার হওয়া আনোয়ার ও হামজাকেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির জন্য আদালতে হাজির করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৯
এনটি