ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রোহিঙ্গা শিশুদের ঈদ আনন্দ

সুনীল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৮ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০১৯
রোহিঙ্গা শিশুদের ঈদ আনন্দ নাগর দোলনায় রাফিয়াসহ অন্য শিশুরা। ছবি: বাংলানিউজ

কক্সবাজার: ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে আট বছরের শিশু রাফিয়া। নিজ দেশে দুঃসহ যন্ত্রণা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে রাফিয়াদের এদেশে পালিয়ে আসতে হলেও এবারের ঈদের আনন্দ যেন সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে। গায়ে নতুন জামা তো আছেই, মনের মতো করে সেজেছে শিশু রাফিয়া।

শুধু রাফিয়া নয়, কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং-এর ডি-৪ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঠে রাফিয়ার মতো হাজারো শিশু বুধবার (৫ জুন) থেকে মেতেছে ঈদ আনন্দে।

বিশেষ করে এই ঈদ মেলার পুরো মাঠজুড়ে নাগর-দোলাকে ঘিরেই দেখা গেলো শিশুদের বাড়তি কৌতূহল।

তবে বৃষ্টির কারণে এসব রোহিঙ্গা শিশুদের ঈদ আনন্দে একটু ভাটা পড়েছেও বটে।

রাফিয়া বলে, বার্মায় আমাদের অনেক মেরেছে, কেটেছে। কিন্তু এখানে আমরা খুব মজা করে ঈদ করছি। এখানে আমাদের খুব আনন্দ।

১০ বছরের শিশু খুরশিদারও আনন্দের সীমা নেই। খুরশিদা বলে, ১০০টাকা নিয়ে ঘর থেকে বের হয়েছি। নাগর-দোলায় চারবার চড়েছি। আবারও চড়বো। খুব মজা হচ্ছে আমাদের। গতবারের চেয়ে এবারের আমাদের আনন্দ বেশি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু মাত্র কুতুপালং ক্যাম্পে নয়, উখিয়া-টেকনাফের প্রায় ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এবার বাড়তি আনন্দ বিনোদের মধ্য দিয়ে ঈদ উদযাপন করেছে শিশুসহ আবাল বৃদ্ধ বনিতা।

কুতুপালং ক্যাম্প-৪ এর হেড মাঝি আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার প্রায় ২২মাস হয়ে গেছে। এরমধ্যে সেই অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষ করে শিশুদের অনেকেই সেই স্মৃতি ভুলতে বসেছে। যে কারণে এবারের ঈদ গতবারের চেয়ে অনেক আনন্দ দায়ক হয়েছে সবার জন্য। নাগর দোলনায় চড়ার জন্য অপেক্ষারতরা।  ছবি: বাংলানিউজগতবারের চেয়ে এবারে সাহায্য সহযোগিতা কম পাওয়া গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, সময়ের রোহিঙ্গাদের মনের অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু ঈদ উপলক্ষে গত বছরের তুলনায় এবছর কম সাহায্য সহযোগিতা পাওয়া গেছে। সেকারণে সবাই ঈদ উদযাপন করতে পারেনি।

‘বর্তমান সরকার আমাদের মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়ে এনে যেভাবে আশ্রয় দিয়েছে,খাবার-দাবার দিচ্ছে এজন্য সরকারের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই । যোগ করেন আব্দুর রহিম।

রোহিঙ্গা মাঝি জোর মুল্লক বাংলানিউজকে বলেন, গতবারের চেয়ে এবারের ঈদে খুশি-আনন্দ একটু বেশি ছিল ঠিক কিন্তু বৃষ্টির কারণে এবার ঈদ আনন্দে একটু ভোগান্তি হয়েছে।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম বাংলানিউজকে বলেন, গতবারের চেয়ে এবার রোহিঙ্গারা অনেক বেশি গোছানোভাবে ঈদ উদযাপন করেছে। অন্তত প্রতিটি শিশুর গায়ে আমরা নতুন জামা দেখেছি। শিশুদের ঈদ আনন্দও ছিলো গতবারের চেয়ে অনেক বেশি।

তিনি বলেন, একদম প্রতিটি ঘরে ঘরে ঈদসামগ্রী বিতরণ করা না গেলেও দেশি-বিদেশি অনেক সংস্থা বিভিন্ন ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের ঈদসামগ্রী দিয়েছে। একইভাবে রোজার সময়েও ইফতার সামগ্রী দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৭ ঘণ্টা, জুন০৬, ২০১৯
এসবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।