ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পর্যটক টানছে পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৭ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৯
পর্যটক টানছে পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা মহাসড়ক, ছবি: বাংলানিউজ

পঞ্চগড়: ঈদ হোক বা অন্য কোনো উৎসব ‘ভ্রমণ আর ঘোরাঘুরি’ সবার পছন্দের মধ্যে প্রথম একটি। আবার ঈদ উপলক্ষে ভ্রমণ পছন্দ করে না এমন মানুষ আজকের যুগে খুঁজে পাওয়া দায়। তবে সড়ক পথে ঈদ ভ্রমণ একটু ভিন্ন, আর যদি সড়ক পথে বিমানের ছোঁয়া পাওয়া যায় তাহলে তো কথাই নেই।

হ্যাঁ দেশের সর্ব উত্তরের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া মহাসড়কে মিলছে বিমানের ছোঁয়া। পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা মহাসড়কে মাইক্রোবাস, বাস, মোটরসাইকেল বা যেকোন ধরনের যানবাহন নিয়ে আরামে ভ্রমণ করা যায়।

কারণ এ মহাসড়কটি চওড়া ও ভ্রমণে আরামদায়ক। সড়ক পথে বিমানের ছোঁয়া নেয়ার পাশাপাশি দেখতে পাবেন রাস্তার দু’পাশের সমতল ভূমির চা বাগান। এর পাশাপাশি দেখতে পাবেন একেবারে রাস্তার পাশে অবস্থিত ভারতীয় কাঁটাতারের সীমানা প্রাচীর।
 
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে উপজেলা শহর তেঁতুলিয়ার দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার এবং পঞ্চগড় জেলা শহরের দূরত্ব মাত্র ৫৪ কিলোমিটার। আর রাজধানী শহর ঢাকার দূরত্ব ৬০০ কিলোমিটার। তেঁতুলিয়া পঞ্চগড় থেকে বাংলাদেশের সব বিভাগীয় শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থাও চমৎকার।  

বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের সঙ্গে দূরে কোথাও বা দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে ভ্রমণে যাবেন? তার আগে পরিকল্পনা করে নিন। ভ্রমণের জন্য আপনি অনেক পরিকল্পনা করে থাকলেও ছোট কিছু ভুলের কারণে আপনার পুরো আনন্দ ভ্রমণ নিরানন্দে পরিণত হতে পারে। তাই আপনার আনন্দ ভ্রমণ আরো প্রাণবন্ত ও আনন্দময় করতে আগে থেকেই পরিকল্পনা করে নিন।  

আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে, থাকতে পারবেন চাপমুক্ত। জানবেন পঞ্চগড়ে সড়ক পথে বিমানের ছোঁয়ার পাশাপাশি দেখতে পাবেন জেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান।

ভ্রমণ ও বিনোদনের জন্য পঞ্চগড় জেলায় শিশুসহ সব বয়সের মানুষের জন্য রয়েছে দর্শনীয় স্থান ডিসি পার্ক, মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থিত রকস মিউজিয়াম পাথরের জাদুঘর, করতোয়া নদীর পাড়, বিজিবি ক্যান্টিন, বোদা পৌরসভা সংলগ্ন বাইপাস মহাসড়ক, বদেশ্বরী মন্দির, মির্জাপুর শাহী মসজিদ, বারো আউলিয়ার মাজার, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট-ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট, ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মহানন্দা নদীর পাড়, তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো, পিকনিক কর্ণার, রওশনপুর জেমকন গ্রুপের কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট, আনন্দধারা, আনন্দ গ্রাম, শিশুপার্ক, মুক্তাঞ্চল তেঁতুলিয়ার স্মৃতিসৌধ, ভিতরগড়ের পৃথু রাজার মহারাজার দীঘি, ভীমের জঙ্গল, বাংলার শ্রেষ্ঠ সুলতান হোসেন শাহের হোসেন দীঘির গড়, মোগল সেনাপতি মীর জুমলার মীরগড় এবং ইখতিয়ারউদ্দীন মোহাম্মদ বখতিয়ার খিলজীর রাজনগড় এবং তালমা রাবার-ড্যাম এলাকায় হিমালয় বিনোদন পার্ক ও রাস্তার পাশে অবস্থিত ভারতীয় কাঁটাতারের সীমানা প্রাচীর। সঙ্গে শীতের সময় (অক্টোবরের শেষ সময় থেকে জানুয়ারির শেষ সময় পর্যন্ত) তেঁতুলিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সরাসরি খালি চোখেই দেখা মেলে উত্তরের হিমালয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘা।  পঞ্চগড় থেকে তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা মহাসড়ক, ছবি: বাংলানিউজএই এলাকাকে পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যে উপাদান প্রয়োজন তার সবই বিদ্যমান। এ অঞ্চলের পাঁচটি গড়ের সুস্পষ্ট অবস্থানের কারণেই পঞ্চগড় নামটির উৎপত্তি। যার প্রমাণ মেলে- ভিতরগড়, মিরগড়, রাজনগড়, হোসেনগড় ও দেবনগড়।

এদিকে সড়ক পথে তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন থেকে ভারতের শিলিগুড়ির দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার, দার্জিলিংয়ের দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার, নেপালের দূরত্ব মাত্র ৬১ কিলোমিটার, ভুটানের দূরত্ব ৬৪ কিলোমিটার, এভারেস্ট শৃঙ্গের দূরত্ব ৭৫ কিলোমিটার, চীনের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার।

তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানিউল ফেরদৌস বাংলানিউজকে বলেন, ঈদ বা অন্য কোনো উৎসব হোক না কেন ভ্রমণ পিয়াসুদের কাছে অন্যতম স্থান তেঁতুলিয়া। কারণ এটি একটি শান্তিপ্রিয় এলাকা। এ উপজেলায় ভ্রমণের জন্য বিভিন্ন স্থান রয়েছে, যার কারণে এখানে সবসময় পর্যটকরা ভিড় জমায়। এ উপজেলাকে আরো উন্নত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

কীভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে নাইট/ডে কোচ পরিবহনে আসতে পারেন পঞ্চগড় জেলায়। ভাড়া পড়বে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। আবার ঢাকা কমলাপুর থেকে আন্তঃনগর ট্রেনে সরাসরি পঞ্চগড় মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম রেলওয়ে স্টেশন আসতে পারেন। ট্রেনের শোভন চেয়ারের ভাড়া ৫৫০ টাকা।

ঘুরে বেড়ানোর ব্যবস্থা:
পঞ্চগড় থেকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ানোর জন্য শহরের কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড অথবা শহরের চৌরঙ্গী মোড় থেকে কার বা মাইক্রোবাস ভাড়া করতে পারেন। সারাদিনের জন্য রিজার্ভ কারের ভাড়া পড়বে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকায়।

রাতে থাকার জায়গা: 
পঞ্চগড় সার্কিট হাউজ, ডিসি কটেজ, পঞ্চগড় জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো, বাংলাবান্ধা ডাকবাংলো, তেঁতুলিয়া পিকনিক কর্নারসহ রয়েছে বিভিন্ন আবাসিক হোটেল।  

বাংলাদেশ সময়: ১২১৪ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।