ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মাদারীপুরের বিনোদন ‘শকুনি লেক’ ঘিরে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৮ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৯
মাদারীপুরের বিনোদন ‘শকুনি লেক’ ঘিরে শকুনি লেক: ছবি: বাংলানিউজ

মাদারীপুর: মাদারীপুর শহরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান ‘লেকপাড়’। শহরের বিনোদনের জায়গা খুঁজতে গেলে যে কেউই দেখিয়ে দেবে জায়গাটি। এ লেক ঘিরে মানুষের পদচারণা থাকে সারাক্ষণই। সকালের দখলটা থাকে স্বাস্থ্য সচেতনদের, দুপুরে ক্লান্ত পথিক আর বিকেল থেকে রাত অবধি বিনোদনপ্রেমীদের। 

মাদারীপুর শহরবাসীর বিনোদনের অন্যতম কেন্দ্র লেকটির নাম ‘শকুনি লেক’। শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একটি কৃত্রিম লেকের পাড়ে ভিড় জমে ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবেও।

সেই সঙ্গে বাহারি সৌখিন পণ্যের পসরা নিয়ে বসেন দোকানিরা।  

প্রতি ঈদের ছুটিতেই দর্শনার্থীদের মিলনমেলা বসে লেকের পাড়ে। জমে ওঠে হালকা খাবারে দোকান ও বাচ্চাদের নানা খেলনা সামগ্রীর দোকান। লেকের চারপাশের স্থাপিত বিশ্রাম বেঞ্চে থাকে অবসরযাপনকারীদের ভিড়।  

সম্প্রতি সংস্কারকরে লেকের সৌন্দর্য বর্ধন করা হয়েছে। সারাদিনই থাকে মানুষের পদচারণা। তবে ভিড় বাড়ে দিনের সূর্য যখন বিকেলের দিকে গড়িয়ে যায় তখন।  

স্থানীয়রা বলছেন, শকুনি লেকের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শেষ হওয়ায় জেলার মানুষের স্বপ্নপূরণ হয়েছে। কারণ, এটাই এখানকার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র। শুধু শহরেরই নয়, জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকেও ঈদের ছুটিতে এই লেকে ঘুরতে আসেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিনোদনপ্রেমী মানুষ।

শকুনি লেক: ছবি: বাংলানিউজ

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ১৮৮৪ সালে শকুনি লেকটি খনন করা হয়। দীর্ঘদিন অযত্ন-অবহেলায় পড়ে ছিল। পরে ২০১৩ সালে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে এর সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শুরু হয়। কয়েখটি প্রকল্পের অধীনে লেকের একটি অংশে শিশুদের বিনোদনের কথা মাথায় রেখে গড়ে তোলা হয়েছে শিশুপার্ক। লেকের পানিতে নামানো হয়েছে প্যাডেল বোট।

স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, কৃত্রিমভাবে এ লেক সৃষ্টি করা হলেও সময়ের ব্যবধানে নিজ থেকেই সেখানে ফুটে উঠছে প্রাকৃতিক চিত্র। মাদারীপুর শহরের মাঝামাঝি শকুনি নামক এলাকায় ২০ একর জমির ওপর লেকটি খনন করা হয়।  

প্রচলিত রয়েছে, লেকটি খনন করতে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ভারতের বিহার ও উড়িষ্যা অঞ্চল থেকে দুই হাজার শ্রমিক এনেছিল। এক টানা কাজ করে প্রায় ৯ মাসে এর খনন কাজ সম্পন্ন করেন তারা।

‘শকুনি লেক’ প্রকল্পে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, শহীদ কানন, শিশু পার্ক, স্বাধীনতা অঙ্গন, এমপি থিয়েটার মঞ্চ, শান্তি ঘাটলা, পানাহারসহ মাদারীপুর ঘড়ি নামে একটি সুউচ্চ টাওয়ার।  

শকুনি লেক: ছবি: বাংলানিউজ

লেকে ঘুরতে আসা হোসেন আলী বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় প্রতিদিনই লেকে মানুষের সমাগম ঘটে। তবে ভিড় বেশি হয় ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের সময়। ঈদকে কেন্দ্র করে এই লেকে যেনো দর্শনার্থীদের মিলনমেলা হয় প্রতিবছর।  

‘শুধু মাদারীপুর শহর-ই নয়, জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের দূর-দূরান্ত থেকেও অসংখ্য মানুষ ঈদের ছুটিতে ঘুরতে আসেন এখানে। মফস্বল শহরে অন্য কোনো বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় এখানেই এসে সময় কাটায় মানুষ,’ যোগ করেন তিনি।

মাদারীপুর পৌরসভার মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ বাংলানিউজকে বলেন, লেকটি শুধু মাদারীপুরবাসীর চিত্ত বিনোদনের জন্য নয়, জেলাকে পর্যটন শহর হিসেবে গড়ে তুলতেও এর গুরুত্ব ব্যাপক। তাই লেকটিকে বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৫০৫ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৯
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।