ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

প্রকৃতির সান্নিধ্য মেলে শেখ রাসেল ইকোপার্কে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২৪ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৯
প্রকৃতির সান্নিধ্য মেলে শেখ রাসেল ইকোপার্কে

খুলনা: দীর্ঘ সময় ধরে নগর জীবনে বন্দি থাকতে ইচ্ছা হয় না কারোরই। মাঝে মাঝে প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে। এই ব্যাকুলতা মেটাতে ঈদের ছুটিতে সুযোগ করে ঘুরে আসতে পারেন নিমির্তব্য খুলনার শেখ রাসেল ইকো পার্কে। প্রকৃতির অমোঘ ভালোবাসার টানে বেড়াতে পারেন রূপসা নদীর পাড় ঘেঁষা বিশাল পার্কটিতে। মুক্ত বাতাস, নীল আকাশ, ভোরের সোনালি রোদ্দুর, পাখির গান, রাতের আকাশে তারা এবং জ্যোৎস্নার আলো উপভোগ করতে পারেন এখানে এসে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবেশসম্মত পার্ক তৈরির নির্দেশনায় সুন্দরবনের আদলে তৈরি করা হচ্ছে শেখ রাসেল ইকোপার্ক। এখানে পাখির অভায়রাণ্য, উপকূলবর্তী সুন্দরবনের গাছপালা, বিভিন্ন পশু পাখির মিলনমেলার পাশপাশি ম্যানগ্রোভ কালচার সেন্টারসহ বিনোদনের জন্য থাকছে নানা ব্যবস্থা।

খুলনা জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে খুলনার ২৬ লাখ মানুষের বিনোদন সুবিধা বাড়াতে নগরীর রূপসা নদীর তীরে  ৪৩.৮৬ একর সরকারি খাস জমিতে পার্কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর আগেই বিনোদনপ্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠছে গোটা পার্ক এলাকা। বিশেষ করে কোনো উৎসব কিংবা ছুটির দিনে।

নিষ্ঠুর ইটের দালানে, ঘড়ির গড় গড় শব্দে, কারখানার বর্জ্য, ময়লা–আবর্জনার পাহাড়ের নিচে এবং জনসংখ্যার ভিড়ে আটকা পড়া নগর জীবনকে ভুলে প্রকৃতির মাঝে মিলে মিশে একাকার হয়ে যাওয়া যায় এ পার্কে। যারা এখানে বেড়াতে এসেছেন তারা মুগ্ধ হয়েছেন নদীর পাড়ের বিশুদ্ধ বাতাস আর এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে।

রূপসা নদীর পানির সৌন্দর্য দেখে দেখে কাটিয়ে দেওয়া যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। আর তা যদি হয় সন্ধ্যার সময়ে তাহলে তো কথাই নেই।

খুলনার সরকারি মহিলা কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক বিকাশ রায় বাংলানিউজকে বলেন, নাগরিক জীবনের যান্ত্রিকতায় ক্লান্ত নাগরিকদের সাময়িক সময়ের জন্য প্রকৃতির সান্নিধ্য দেয় এই পার্কটি। রূপসার মোহনীয় জলধারার পাশে বিশ্বখ্যাত ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের সজীব অবয়বে বিমোহিত হয় দর্শনার্থীরা। একদিকে শান্ত জলরাশির স্নিগ্ধ বাতাসের শিহরণ অন্যদিকে পাখির কলকাকলিতে যে কেউ মুগ্ধ হবেন অনায়াসে।

তিনি বলেন, নদীর পাড়ের এ পার্কে সকালের মিষ্টি রোদ কিংবা বিকেলের প্রকৃতির রোমান্টিকতার সঙ্গে ব্যক্তিজীবন এক হয়ে মিশে যায়। যারা হৃদয়ের দুয়ারে প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে চায় তারা জীবনের কাছ থেকে কিছুটা সময় ধার করে পার্কটিতে ঘুরে যেতে পারেন।

পার্কটি খান জাহান আলী (র.) সেতুর  ১.৯ কি.মি. দক্ষিণে বটিয়াঘাটা রাস্তার পার্শ্বে রূপসার শাখা নদী কাজীবাছার পার্শ্বে প্রায় ৪৩ একর সরকারি খাস জায়গায় ‘শেখ রাসেল ইকোপার্ক’ স্থাপনের পরিকল্পনা করে খুলনা জেলা প্রশাসন। জমি অনুমোদন ও অন্যান্য প্রক্রিয়া শেষ করে ২০১৭ সালের নভেম্বর থেকে পার্কের কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে কাজ শেষ না হলেও প্রতিদিনই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ইকোপার্ক এলাকায় ভিড় জমাচ্ছেন। এজন্য রূপসা নদী সংলগ্ন পুল, দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য দুই পাশে বিশ্রামাগার নির্মাণ করা হয়েছে। লেক, লেকের দু’পাশে পায়ে চলার সুসজ্জিত রাস্তা, লেকের মধ্যদিয়ে কাঠের রাস্তা (নিচে কংক্রিটের পিলার), পানির উপর ভাসমান রেস্টুরেন্ট, রঙিন ঝর্না ও ফিস মিউজিয়াম দিয়ে সজ্জিত করা হচ্ছে খুলনা শেখ রাসেল ইকোপার্ক। পার্কটিতে ফিস মিউজিয়ামে বিভিন্ন মাছ ও প্রাণির ফসিল সংরক্ষণ করা হবে। সুন্দরবনের বিভিন্ন বৃক্ষরাজি দিয়ে বনের আবহ তৈরি করা হয়েছে।

ইকোপার্ক নামকরণের কারণে এখানে কৃত্রিম কোনো কিছু নির্মাণের পরিকল্পনা নেই বলে জানান খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।

তিনি বলেন, খুলনাবাসীর জন্য নান্দনিক পর্যটন কেন্দ্র শেখ রাসেল ইকোপার্ক। খুলনার রূপসা ও বটিয়াঘাটা উপজেলার কিছু অংশ নিয়ে রূপসা নদীর পাড়ে প্রায় ৫০ একর জমিতে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে শেখ রাসেল ইকোপার্ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। ওর্য়াল্ড হেরিটেজের একটা অংশ সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সকল শ্রেণির মানুষের সামনে তুলে ধরে ম্যানগ্রোভ কালচার সেন্টারসহ পরিবেশ সম্মত বিনোদনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে এই পার্কের মাধ্যমে।

ঈদের ছুটিতে এ পার্কে আগত দর্শনার্থীদের সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে বলেও জানান খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা,  জুন ০৪,  ২০১৯
এমআরএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।