ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

টার্মিনালে দিনভর অপেক্ষায় ফুটপাতে জমেছে কেনাকাটা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১০ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৯
টার্মিনালে দিনভর অপেক্ষায় ফুটপাতে জমেছে কেনাকাটা বাস টার্মিনালের ফুটপাতে চলছে টুকটাক কেনাকাটা, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বেলা ১২টায় ঢাকার গাবতলী টার্মিনাল থেকে ছাড়ার কথা থাকলেও বিকেল ৫টার সময়ও ছাড়েনি বাস। তাই টার্মিনালে বসেই সময় কাটাতে হচ্ছে বাস যাত্রীদের। অনেক কোম্পানির বাসের জন্য অপেক্ষমান যাত্রীরা টার্মিনালে সময় কাটাতে গিয়ে টুকটাক কেনাকাটাও সেরে নিচ্ছেন টার্মিনালের আশপাশের ফুটপাত ও টার্মিনালের ভেতরের ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলো থেকে।

মঙ্গলবার (০৪ জুন) রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।

বাসের শিডিউল বিপর্যয় ছাড়াও অনেকে সকালে টার্মিনালে এসে রাতের বাসের টিকিট পেয়েছেন।

তাদেরও সারাদিন এখানেই কাটাতে হচ্ছে। তবে বেশিরভাগ যাত্রীরাই শিডিউল বিপর্যয়ের শিকার। গাবতলী থেকে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের রুটের বেশিরভাগ বাস ছেড়ে যায়। আর এই দুই মহাসড়কে তীব্র যানজট থাকায় এ শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে বলে জানা যায় সব বাস কাউন্টার সূত্রে।

সকালে গাবতলী বাস টার্মিনালে এসে দুপুর ১২টার সাতক্ষীরা অভিমুখী মামুন এন্টারপ্রাইজের টিকিট কেটেছেন শরীফুল ইসলাম। পরিবারের চার সদস্য নিয়ে বাড়িতে ঈদ করতে যাচ্ছে তিনি। কিন্তু বিকেল ৫টার সময়েও তার নির্ধারিত বাসের সন্ধান দিতে পারেনি কাউন্টার থেকে।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, সকালে এসে ১২টার বাস পেয়েছি। তখনই ওরা বলেছিল, বাস আসতে দেরি হবে। কিন্তু এতো দেরি তা বুঝিনি। এখন অপেক্ষায় আছি। ট্রেনে যেতে গেলেও সমস্যা। কেননা, এখন ট্রেনে টিকিট পাবো দাঁড়িয়ে যাওয়ার। বাচ্চাদের নিয়ে এভাবে যাওয়া যায় না। আর খুলনা পর্যন্ত ট্রেনে যাওয়া যাবে। এরপর সাতক্ষীরা যাওয়ার বিড়ম্বনার চেয়ে বাসে যাওয়া ভালো। এদিকে পাটুরিয়া ঘাটেও দীর্ঘ জ্যাম আছে। সব মিলে এখন শুধু বাড়ি ফেরার অপেক্ষা।

এদিকে, উত্তরবঙ্গ রুটের এসকে ট্রাভেলস পরিবহনের যাত্রী রাজা বাংলানিউজকে বলেন, চার ঘণ্টা হয়ে গেলো, বাস আসার নাম নেই। রাস্তায় জ্যামের কারণে রাতের গাড়ি আটকে আছে। ওই গাড়িগুলো আসলেই আবার ছাড়বে। বাস টার্মিনালে দিনভর যাত্রীদের অপেক্ষা, ছবি: বাংলানিউজএ বিষয়ে এসকে ট্রাভেলসের কাউন্টার ম্যানেজার শফিক বাংলানিউজকে বলেন, এবার ঈদে আমাদের অতিরিক্ত বাসের ব্যবস্থা রাখা হয়নি। সে পরিমাণ বাসের যাত্রীও নেই। তাই ওই বাসগুলো আসলে আবার যাবে। তাই দেরি হচ্ছে এবং আমরা কোনো ব্যবস্থা করতে পারছি না।

বরিশালগামী গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার জিয়াউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ফেরিঘাটে আসতে ও যেতে দু’পাশেই ব্যাপক জ্যাম। ওখানে একবার দেরি হওয়া ছাড়াও মানিকগঞ্জ সাভারে বিচ্ছিন্নভাবে জ্যাম আছে। এসব কারণে গাড়ি আসতে দেরি হচ্ছে। তবে গাড়ি আসলে খুব দ্রুততম সময়ে গাড়ি চেকিং করে আবার পাঠানো হবে।

এদিকে, সকালে এসে রাতের টিকিট পেয়ে বাস টার্মিনালেই বসে আছেন এমন লোক ও তাদের পরিবারের সংখ্যাও কম নেই। এদের সবাই এই অতিরিক্ত সময় কাটাতে গিয়ে ভিড় জমাচ্ছেন টার্মিনালের ছোট ছোট বিভিন্ন জিনিসপত্রের পসরা সাজানো দোকানগুলোতে। তেমনই একজন ইফাত রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বরিশাল যাবো। সকালে কাউন্টারে এসে টিকিট পাইনি। এখন রাতের টিকিট পেয়ে কেটেছি। কিছু কেনাকাটা বাকি ছিল। যেমন আমার স্যান্ডেল কেনা হয়নি। সেটা টার্মিনাল থেকে কিনে নিলাম।

বাস টার্মিনালের এসব দোকানগুলোতে বেশি বিক্রি হচ্ছে মেয়েদের বিভিন্ন সাজসজ্জাসহ হেডফোনের পসরাগুলোতে। এসব বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাসগুলো দেরিতে আসায় লোকজন কেনাকাটা করতে আসছে। বিক্রি ভালোই হচ্ছে। এই ঈদে যাত্রী সংখ্যা কম ছিল, তাই এতোদিন বিক্রি হয়নি। যা হওয়ার গতকাল আর আজ হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১৯
এমএএম/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।