ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

জঙ্গিদের আইনি সহায়তার বিষয়টি আত্মঘাতী: র‌্যাব ডিজি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, জুন ২, ২০১৯
জঙ্গিদের আইনি সহায়তার বিষয়টি আত্মঘাতী: র‌্যাব ডিজি

ঢাকা: অন্যান্য অপরাধের মতো জঙ্গিবাদকে বিবেচনা করে আইনি সহায়তা দিলে বিষয়টি হবে আত্মঘাতী। তাই জঙ্গিবাদকে ভিন্নভাবে দেখতে আইনজীবীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ।

রোববার (২ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অনুরোধ জানান। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে জানাতে এ এক সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

র‌্যাব ডিজি বলেন, হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫১২ জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৩০০ জন জামিনে আছেন, যাদের অধিকাংশই পলাতক।

আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, টাকা দিলেই জঙ্গিদের পক্ষে আদালতে দাঁড়ানো যাবে না। চুরি-ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো অন্য ৮-১০টি অপরাধের মতো জঙ্গিবাদকে দেখা যাবে না, তাহলে বিষয়টি হবে আত্মঘাতী। জঙ্গিরা আদালতেও হামলা করেছে, কেউ তাদের আওতার বাইরে নয়।

‘আপনারা যাদের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করে জামিনের ব্যবস্থা করেছেন, তাদের আবার কোর্টে হাজির করেন, সমস্যা নেই। কিন্তু দেখেন, তারা প্রায় সবাই পলাতক। তাই আপনাদের প্রতি অনুরোধ, জঙ্গিদের বিষয়টাকে আপনার ভিন্নভাবে দেখবেন। ’

আইনের ফাঁক গলে জঙ্গিরা বের হয়ে যাচ্ছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব ডিজি বলেন, আইনের কোনো সমস্যা নেই, আইন প্রয়োগে সমস্যা থাকতে পারে।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় জঙ্গি হামলার আশঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় তিন পর্যায়েই জঙ্গি হামলার ঝুঁকি রয়েছে। তবে নিজস্ব গোয়েন্দাদের পাশাপাশি অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

কোনো ধরনের অপতৎপরতার খবর পেলে যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগে প্রস্তুত থাকার কথাও জানান বেনজীর আহমেদ।

দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জামিনে পলাতক থাকা জঙ্গিরা আবারও সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। তবে সবাইকে আশ্বস্ত করতে চাই, তারা বেশিদিন এ তৎপরতা চালাতে পারবে না।

ঈদকালীন নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, রমজানের শুরু থেকেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলো ঘিরে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে জনগণকে শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফেরাতে এবং বাড়ি থেকে ঢাকায় ফেরাতে র‌্যাব তৎপর রয়েছে।

তিনি জানান, ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বাস, ট্রেন ও লঞ্চ টার্মিনালে ১৫টি অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। সড়কে যানজট এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে দেশজুড়ে ৪২টি স্থানে র‌্যাবের নজরদারি চলছে। তবে এবার সড়ক এবং নৌপথে ঈদযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে, রেলপথে কিছুটা বিলম্ব রয়েছে।

২৪ ঘণ্টা সড়ক, নৌ এবং রেলপথে নজরদারি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঈদে বাড়িতে যাত্রা এখনো স্বস্তিদায়ক রয়েছে, আশা করছি ফেরার যাত্রাও স্বস্তিদায়ক হবে। আমরা চাই না সড়কে কোনো প্রাণহানি ঘটুক।

জাতীয় ঈদগাহসহ রাজধানীতে পাঁচ শতাধিক ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, রাজধানী ছাড়াও শোলাকিয়া, দিনাজপুরসহ সবকটি বড় ঈদ জামাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। সর্বোচ্চ সক্ষমতা দিয়ে ঈদ উৎসবটি নিরাপদ করার ব্যবস্থা করা হবে। দেশজুড়ে র‌্যাবের সর্বোচ্চ উপস্থিতি প্রদর্শনের চেষ্টা করা হচ্ছে। ঈদে ফাঁকা শহরগুলোতে যে কোনো অপরাধ রুখতে আমাদের আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে।

অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে ঈদ উদযাপন নিরাপদ করতে পূর্ণ প্রস্তুতির কথাও জানান র‌্যাব ডিজি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৪ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০১৯
পিএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।