ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বাস-ট্রেন ছুটবে, বসছে স্ল্যাব

ইসমাইল হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৭ ঘণ্টা, জুন ২, ২০১৯
বাস-ট্রেন ছুটবে, বসছে স্ল্যাব স্প্যানের ওপরে বসছে সড়কের স্ল্যাব, মাঝে বসছে রেলের স্ল্যাব। ছবি: ডিএইচ বাদল

পদ্মাসেতু প্রকল্প এলাকা ঘুরে: পদ্মার দুই পাড়, ঢাকার দিকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া আর নদীর ওপারে শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্ট। খরস্রোতা এই পদ্মার ওপর চলছে সেতু তৈরির মহাযজ্ঞ। কাজও এগিয়েছে অনেকটা। সাধারণ বাহনের পাশাপাশি এই সেতুর ওপর দিয়ে চলবে ট্রেনও।

-এই খবর পুরনো, নতুন খবর হলো বাসসহ সাধারণ গাড়ি ও ট্রেন চলাচলের জন্য উপযোগী করা হচ্ছে সেতু। অর্থাৎ স্প্যানের মধ্যে স্ল্যাব বসানোর কাজ এগিয়ে চলছে দ্রুত।

স্প্যান বসানোর পাশাপাশি স্ল্যাব বসানো হচ্ছে, যার উপর দিয়ে ছুটবে সাধারণ বাহন ও ট্রেন।
 
পদ্মার জাজিরা পয়েন্টেই বেশি এগিয়েছে পদ্মা সেতুর কাজ। নদীর পাড় এবং পানির উপরে বসেছে নয়টি স্প্যান। এই স্প্যানগুলোর ওপর এখন যানবাহন চলাচলের জন্য বসছে প্রয়োজনীয় উপকরণ।
 
নকশা অনুযায়ী, পদ্মা সেতুর স্প্যানের মধ্য দিয়ে ছুটবে ট্রেন। আর স্প্যানের ওপরে স্ল্যাবের ওপর জমিন তৈরি করে সেখানে চলাচল করবে যানবাহন।  
 
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৫ মে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে ১৪ ও ১৫ নম্বর পিলারের ওপর সফলভাবে বসেছে ত্রয়োদশ স্প্যান। এরমধ্য দিয়ে ১ হাজার ৯৫০ মিটার বা প্রায় দুই কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে পদ্মাসেতু। স্প্যানে স্ল্যাব বসানোর যজ্ঞ।  ছবি: ডিএইচ বাদল
 তবে পদ্মাসেতুর জাজিরা পয়েন্টে যে নয়টি স্প্যান বসেছে তার দৈর্ঘ্যই বেশি। ১ হাজার ৩৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু কাঠামো বলে দিচ্ছে আর দেরি নয়। আর এদিকেই বসছে সড়ক ও রেলের স্ল্যাব।
 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর এপার-ওপারে চলছে মহাযজ্ঞ। উত্তাল পদ্মার বুকেও থেমে নেই দেশি-বিদেশি কর্মীরা। খরস্রোতা পদ্মার সঙ্গে যেন যুদ্ধ করেই এগিয়ে নিচ্ছেন কাজ। ত্রয়োদশ স্প্যান বসানোর দিনক্ষণই পেছাতে হয়েছে একাধিকার।  

শরীয়তপুর অংশে জাজিরা পয়েন্ট এলাকায় মূল সেতুর স্প্যানের ওপরে রেলের স্ল্যাব বসাচ্ছেন শ্রমিকেরা। প্রথম স্প্যানটির একেবারে ওপরের অংশেও বসানো হচ্ছে সড়কের স্ল্যাব। এর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন।
 
জাজিরা পয়েন্টে স্ল্যাব বসানোর এলাকায় নিয়োজিত শ্রমিক স্থানীয় হাজী উইন উদ্দিন মাতবরকান্দি এলাকার নাজমুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, কয়েকদিন আগে শুরু হয়েছে স্ল্যাব বসানোর কাজ। ধীরে ধীরে ওপরে স্প্যানের মধ্যে স্ল্যাব বসানো হচ্ছে। জাজিরা পয়েন্টে প্রস্তুত টোলপ্লাজা এবং ওজন সেতু।  ছবি: ডিএইচ বাদল
বাংলাদেশ সেতৃ কর্তৃপক্ষের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবীর বাংলানিউজকে বলেন, ২৪ মে পর্যন্ত সড়কের অংশে ২৫টি স্ল্যাব এবং রেললাইনে ৩০০ স্ল্যাব বসানো হয়েছে।
 
তিনি বলেন, সাতটি মডিউলে ভাগ করে পদ্মাসেতুর কাজ করা হচ্ছে। সপ্তম মডিউলে পাঁচটি স্প্যান, বাকি ছয়টি মডিউলে ছয়টি করে স্প্যান। মূলসেতুর ৪২টি পিলারের ওপর বসবে এই ৪১টি স্প্যান। পানির মধ্যে আছে ৪০টি পিলার।
 
সরেজমিনে আরো দেখা যায়, জাজিরা প্রান্তে অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ শেষ। টোলপ্লাজা, ওজন সেতুও প্রায় প্রস্তুত। এখন চলছে নদীশাসনের কাজ।
 
পদ্মাসেতুর মধ্য দিয়ে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। তাই যোগাযোগ সহজ করতে সাধারণ যানবাহনের পাশাপাশি ট্রেনও চলবে এই সেতুর ওপর দিয়ে। মুন্সিগঞ্জ এলাকায় অ্যাপ্রোচ রোডের কাজও এগিয়ে চলছে। ঢাকার মধ্যে জুরাইন রেলগেট এলাকায় দেখা যায় জমি অধিগ্রণ করে পদ্মাসেতু রেল সংযোগের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
 
সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুতই শেষ হয়ে আসছে পদ্মাসেতুর কাজ। সবকিছু ঠিক থাকলে প্রায় যথাসময়েই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করতে পারবেন দক্ষিণের মানুষ।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০১৯
এমআইএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।