উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নআয়ের মানুষ পরিবারের জন্য কিছু না কিছু কেনাকাটা করেন। কিন্তু যাদের পরিবার নেই আর থাকলেও ঈদের পোশাক কেনার সমর্থন নেই।
জানা গেছে, গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়ে তিন-চারদিন ধরে ‘হাসির দোকান’ নামের সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধসহ কয়েকটি এলাকায় প্রায় তিনশতাধিক সুবিধাবঞ্চিত ও পথশিশুদের মধ্যে ঈদ বস্ত্র বিক্রি করেছেন।
শুক্রবার (৩১ মে) দুপুরে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, চার-পাঁচজন স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী একটি ব্যানার নিয়ে ছোট-বড় সব ধরনের মাপের পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। সেখানে ভিড় জমিয়েছেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুসহ নিম্নআয়ের মানুষ। এ দোকানে নতুন জামা, প্যান্ট, পাঞ্জাবি ও সালোয়ার-কামিজ রয়েছে। এছাড়া ৫ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ১২ বছরের শিশুদের নানা রঙের পোশাক রয়েছে। পথশিশুরা এক টাকা নিয়ে এসে একটি করে পোশাক নিয়ে যাচ্ছে।
বুলবুলি বেগম তিন সন্তানের মা। তার স্বামী রিকশাচালক। এবছর ঈদ নিয়ে চিন্তায় ছিলেন তিনি। কারণ তার সন্তানদের ঈদে পোশাক কেনার জন্য হাতে টাকা ছিলো না। পরে ১ টাকায় নতুন পোশাক বিক্রি হচ্ছে জেনে। হাসির দোকানে গিয়ে তিনি তার তিন সন্তানের জন্য তিনটি পোশাক কিনেন।
তিনি বলেন, আমি চিন্তায় ছিলাম এবার ঈদে আমার সন্তানদের নতুন জামা কিনে দিতে পারবো কিনা। কিন্তু এক টাকা দিয়ে নতুন পোশাক কেনার পর এখন আমার সন্তানরাও খুশি আমিও খুশি। এবার ঈদটা ভালোভাবেই কাটবে।
নয় বছর বয়সী রফিক ফুল বিক্রি করে স্মৃতিসৌধ এলাকায়। সে তার বোন ও তার জন্য পোশাক কিনেছে।
রফিক বলে, আমার আপার জন্য আর একটা থ্রি-পিস নিছি ও আমার জন্য একটা শার্ট নিছি। বাড়ির সবাই শুনলে খুশি হবে। ঈদে এবার ভালোই মজা হবে।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা পারভেজ হাসান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ঈদে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে হাসি ফোটানোর জন্য এ উদ্যেগ্য নিয়েছেন তিনি। কারণ ঈদে অনেক শিশুরা পোশাক পায় না ভালো কিছু পরতে পারে না। আমাদের এই উদ্যেগে কিছু শিশুর মুখে তো হাসি ফুটবে তাতেই আমরা খুশি।
তিনি বলেন, গত তিনদিনে আমরা তিন শতাধিক পোশাক বিক্রি করেছি। ঈদের আগে পর্যন্ত বিক্রি করে যাবো। পাঁচ শতাধিক পোশাক বিক্রি করার চিন্তা রয়েছে। সব পথশিশুদের মুখে হাসি আনার চেষ্টা করবো।
অর্থনৈতিক দিক কোথায় থেকে আসে? এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, মূলত আমরা আমাদের সদস্যের জমানো টাকা দিয়ে ভালো মানের পোশাক ক্রয় করে পরে পোশাকগুলোকে এক টাকার বিনিময়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কাছে বিক্রি করি।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৩ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৯
এএটি