ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুর্ঘটনাস্থলের পুলিশ কন্ট্রোল রুমে চাকরি করবেন পারভেজ

সাজ্জাদ হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৮ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৯
দুর্ঘটনাস্থলের পুলিশ কন্ট্রোল রুমে চাকরি করবেন পারভেজ

মুন্সিগঞ্জ: কাভার্ডভ্যানের চাপায় পা হারানো পুলিশ কনস্টেবল পারভেজ মিয়া সুস্থ হয়ে ফেরার পর দুর্ঘটনাস্থলের পুলিশ কন্ট্রোল রুমেই হবে তার কর্মস্থল বলে জানিয়েছেন হাইওয়ে পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা।

পারভেজ মিয়ার বরাত দিয়ে তার ভাই মো. মহিউদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, শনিবার (১ জুন) পারভেজের পায়ে ড্রেসিং করা হবে। এরপর বোঝা যাবে পা কি অবস্থায় আছে।

কোনো সমস্যা হলে তখন আরও দুঃশ্চিন্তা বাড়বে। এখন পর্যন্ত ১১ ব্যাগ রক্ত লেগেছে। কৃত্রিম পা সংযোজন করা হবে। দুর্ঘটনার সাতদিন আগে পারভেজের মা স্ট্রোক করেছিলেন।

তিনি জানান, আমাদের নিজস্ব বাড়িঘর নেই। পারভেজের পেনশনের টাকা দিয়ে বাড়ি তৈরির ইচ্ছা ছিল। বর্তমানে পারভেজ চাকরিতে ফেরা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন। আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু মাস শেষে ভাতা ছাড়া আর নিজেদের নিজস্ব জায়গা নেই।  

তিনি আরও জানান, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন পারভেজের চাকরিতে ফেরা নিয়ে। যেখানে তিনি পা হারিয়েছিলেন সেখানেই কন্ট্রোল রুমে চাকরি করবেন।

এদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বিকেলে সেই কাভার্ডভ্যানসহ চালক ও হেলপারকে কাঁচপুর সেতু এলাকা থেকে আটক করেছে হাইওয়ে পুলিশ।  

আটকরা হলেন- নোয়াখালীর জেলার ছগিরহাট থানার আশ্রাফপুর গ্রামের মো. ইয়াছিল উল্লাহ মামুন (২৪) ও একই গ্রামের আব্দুল মজিদে ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম (২৩)।  

ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন বাংলানিউজকে জানান, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কাভার্ডভ্যানটির বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার হাইওয়ে পুলিশ কাঁচপুর সেতু এলাকা থেকে কাভার্ডভ্যানসহ চালক ও হেলপারকে আটক করা হয়।

তিনি আরও জানান, ওইদিন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কাভার্ডভ্যানটি হেলপার চালাচ্ছিল। কাভার্ডভ্যানটির মূল চালক জাহিদুল ইসলাম হলেও সেদিন গাড়িটি চালচ্ছিলেন ইয়াছিল উল্লাহ মামুন। প্রাথমিকভাবে আটককৃত চালক ও হেলপার পারভেজকে ধাক্কা দেওয়ার কথা স্বীকার করেন।

২০১৭ সালের ৭ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চাঁদপুরগামী যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডোবায় পড়ে যায়। যাত্রীদের রক্ষায় জীবন বাজি রেখে ডোবায় ঝাঁপিয়ে পড়েন তৎকালীন দাউদকান্দি হাইওয়ে থানায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল পারভেজ মিয়া। ইউনিফর্ম পরেই পানিতে নেমে ২০ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন তিনি। পারভেজ মিয়ার ওই সাহসিকতার জন্য তাকে দেওয়া হয় পুলিশের সর্বোচ্চ পুরস্কার বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম)।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।