ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ডুমুরিয়ায় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা: চিকিৎসককে শোকজ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৯ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৯
ডুমুরিয়ায় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা: চিকিৎসককে শোকজ

খুলনা: ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালানোর অভিযোগে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. বিএম দীন মোহাম্মদ খোকাকে শোকজ করা হয়েছে। 

বেশ ক’দিন ধরেই ডা. খোকা প্রকাশ্যে প্রার্থী এজাজ আহমেদের পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। সভা-সমিতিতে বক্তৃতা করছিলেন, ভোট চাইছিলেনতার জন্যে।

বিষোদগার করছিলেন নৌকা মনোনীত প্রার্থী মো. মোস্তফা সরোয়ারের।  

তার বিষোদগার থেকে বাদ পড়ছিলেন না খোদ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত। কিন্তু বিধি বাম! সরকারি চাকরি করে তার এই গুরুতর আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি চোখে পড়ে নির্বাচন কমিশনের।  

যথাযথ প্রমাণসহ অভিযোগ হাতে পেতেই নড়েচড়ে বসেন স্থানীয় নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য, আসন্ন ডুমুরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. মোস্তফা সরোয়ারের বিরুদ্ধে কুৎসা ও অপপ্রচার এবং সরকারি চাকুরিবিধি লঙ্ঘন করে প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় তাকে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) এ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শেখ জাহিদুর রহমানের সই করা কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে,  আপনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিপক্ষে অপপ্রচার ও কুরুচীপূর্ণ বক্তব্য প্রদান এবং প্রকাশ্যে ঘোড়া মার্কার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন। যা নির্বাচনী আচরণ বিধির লঙ্ঘন। এমতাবস্থায় কেন আপনার বিরুদ্ধে নির্বাচন আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা পত্রপাপ্তির ৩ (তিন) কার্যদিবসের মধ্যে নিম্ন স্বাক্ষরকারীর দপ্তরে উপস্থিতি হয়ে লিখিত বক্তব্য প্রদান করার জন্য বলা হলো। বিষয়টি অতীব জরুরি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডা. বিএম দীন মোহাম্মদ খোকার বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগের কথা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো রকম হাজিরা খাতায় সই করে তিনি বেরিয়ে পড়েন। তার বরুণা গ্রামের নিজস্ব মালিকানাধীন খোরশেদ মেমোরিয়াল ক্লিনিকেই বেশি সময় দেনিএই চিকিৎসক।  

তবে অভিযোগ রয়েছে, ওই ক্লিনিকটির কোনো বৈধতা নেই, অর্থাৎ সরকারি অনুমোদন নেই। অপারেশন থিয়েটার না থাকলেও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে বিভিন্ন সিজারসহ নানা অপারেশন সেখানে করা হয়। অবৈধ গর্ভপাত করানোসহ নানা অভিযোগও রয়েছে ক্লিনিকটির কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।  
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীদের ডা. বিএম দীন মোহাম্মদ খোকা ও তার সিন্ডিকেটের লোকজন নিজ ক্লিনিকে ভাগিয়ে নেন। আর এসব নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে রয়েছে চাপা ক্ষোভ।  
ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মোস্তফা কামাল খোকন বলেন, একজন প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী কিভাবে সরকারি চাকুরীবিধি লঙ্ঘন করে একজন প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে ভোটের মাঠে নামেন, তা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।  

এ ঘটনায় ডা. খোকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণ ও দ্রুত তাকে অপসারণ করার জোরালো দাবি জানান তিনি।  

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মো. আবু সালেহ বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়ে ডা. খোকা যে কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছেন তা রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।  

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ডা. বিএম দীন মোহাম্মদ খোকা বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের কারণ দর্শানো নোটিশ এখনও হাতে পাইনি। পেলে আমি লিখিতভাবে এর জবাব দেবো। ’

উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শেখ জাহিদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে না পারলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১৪৫, মে ৩১, ২০১৯
এমআরএম/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।