ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘বিদেশে সোনার হরিণ খুঁজতে গিয়ে অর্থ-জীবন নষ্ট করবেন না’

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৩ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৯
‘বিদেশে সোনার হরিণ খুঁজতে গিয়ে অর্থ-জীবন নষ্ট করবেন না’ জাপান প্রবাসীদের দেওয়া সংবর্ধনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

টোকিও, জাপান থেকে: সোনার হরিণ খুঁজতে অবৈধভাবে বিদেশ গিয়ে অর্থের সঙ্গে জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ না করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, যারা দেশের বাইরে যাবে নিজের ভাগ্য লক্ষ্মী খুলতে, সোনার হরিণ পাওয়ার জন্য। এটা ঠিক যে বাইরে আসার ফলে অনেকের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে, আমাদের দেশেরও উন্নতি হয়েছে- এতে কোনো সন্দেহ নাই।

তবে আমি মনে করি- অবৈধভাবে আসার (বিদেশ যাওয়া) কোনো প্রয়োজনই নাই।

মঙ্গলবার (২৮ মে) জাপানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, দেখেছি অনেকে নিজের ঘর বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে প্রবাসের পথে যাত্রা শুরু করে। এতো অনিশ্চয়তার মধ্যে সে জানে না কোথায় যাবে, কোথায় কী? হয়তো কিছু দালাল থাকে তারা খুব ভালো স্বপ্ন দেখায়, সেই স্বপ্ন দেখে সোনার হরিণের পেছনে ছুটতে যেয়ে নিজেদের জীবন দিতে হয়।  

বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে ও প্রবাসীদের সুরক্ষায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেজন্য আমরা যেটা করেছি আমাদের প্রত্যেকটা ডিজিটাল সেন্টারে সকলে রেজিস্ট্রেশন করবে। এই রেজিস্ট্রেশন করার পরে তালিকাটা থাকবে, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে কোথায় চাকরি পাবে, সেই চাকরির কি কি সুবিধা পাবেন, ঠিক মতো চাকরিটা হবে কি না, বেতনটা হবে কি না? সেই বিষয়ে তথ্য নিয়ে তারপরে যেতে হবে।  

‘যারা বাইরে কাজ করতে যাবে তাদের ট্রেনিং এরও ব্যবস্থা করা আছে। তাই প্রয়োজনীয় ট্রেনিং নিয়ে বিদেশ যেতে হবে। এতে বেতনও ভালো পাওয়া যাবে। ’

তিনি বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক করে দিয়েছি, যে জমি জমা বিক্রি না করে ওইব্যক্তি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা নিয়েও বিদেশ যেতে পারে। যারা হত দরিদ্র তাদের কোনো জামানতও দিতে হয় না। আমরা তাদের সহযোগিতা করি এবং খুব অল্প পয়সায় তারা প্রবাসে যেতে পারে।

অজ্ঞানতায় বা ভুল স্বপ্নের বিভোর যারা বিদেশ যেতে জীবনের ঝুঁকি নেন তাদের প্রতি করুণা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, এত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন জানি মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদেশ যায়! যখন আমরা দেখি সাগরে মানুষ মারা যায়, আট লাখ টাকা ব্যয় করে গিয়েছে।  

‘আমার কথা হলো এই আট লাখ টাকার মধ্যে যদি দুই লাখ টাকাও দেশে ব্যয় করতো, দেশে কিন্তু অর্থ উপার্জন করতে পারতো। এভাবে জীবনটাও দিতে হতো না, টাকাটাও নষ্ট হতো না। ’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত চলে গেছে, সেই সুযোগটা আছে। এভাবে নিজেকে ধ্বংস করার পথে যেন কেউ না যায়। এখন দেশে কাজ করলেই টাকা। কেউ একটু কষ্ট করে কাজ করতে চায় তাহলে তারা কিন্তু কাজ করতে পারে। ’ 

প্রবাসীদের দেশে বিনিযোগ করার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, প্রবাসীরাও আমাদের দেশে বিনিয়োগ করতে পারেন। প্রবাসীরা দেশে বিনিয়োগ করলে তারা নিজেরাও উন্নত হবেন, দেশও উপকৃত হবে।

নতুন নতুন পণ্যের রপ্তানি বাজার খুঁজতে প্রবাসীরা ভূমিকা রাখতে পারেন-এমন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, পণ্য বাজারজাতকরণে, কোন দেশে কোন কোন পণ্যের চাহিদা সেটা আমরা উৎপাদন করতে পারি, বাজারজাত করতে পারি। সেই সুযোগ যথেষ্ট আছে। নতুন পণ্যের বাজার ক্ষেত্রে প্রবাসীরাও ভূমিকা রাখতে পারে।

প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে আন্তরিকতা ও বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রবাসী বাংলাদেশি শাকুরা সাবের, সালেহ মোহাম্মদ আরিফ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৯
এমইউএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad