দেশে বছরের পর বছর সরকারি সুবিধা হতদরিদ্র, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও বিধবা ভাতার তালিকা হয়। কিন্তু সুবিধাভোগী হিসেবে কোথাও কোনো তালিকায় হতভাগিনী এই বৃদ্ধার নামে ঠাঁই হয়নি কখনও।
এলাকার জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টদের সুনজর কাড়তে না পারার কারণেই নিজের প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন খুদ বানু। কিন্তু সত্য এটাই সুনজর কাড়ার কৌশলের হিসাব তার জানার কথা নয়।
নেত্রকোণার মদন উপজেলার কাইটাল ইউনিয়নের শিবাশ্রম গ্রামে সবুজ মিয়ার ভিটায় খুদ বানুর বসবাস। সবুজ সেখানে না থাকায় তার ফাঁকা জায়গায় এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে খুদ বানুকে ছোট্ট একটি ছাপড়া ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়। দেখাশোনা করছেন গ্রামের বাসিন্দা জমিলা খাতুন নামের পঁচাত্তর বয়সী আরেক বৃদ্ধা।
বাংলানিউজকে তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে অমানবিক কষ্ট করছেন বাকপ্রতিবন্ধী খুদ বানু। শারীরিক কোনো সমস্যা মুখ ফুটে বলতেও পারেন না। বিছানাতেই প্রাকৃতিক কাজকর্ম সারেন। রয়েছে চোখের দৃষ্টি সমস্যা, চর্মরোগসহ বয়সজনিত নানা অসুখ।
জনশ্রুতি রয়েছে গ্রামে একসময় খুদ বানুদের প্রচুর সহায় সম্পত্তি ছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস স্বামী হাছেন আলীর মৃত্যুর পর সেগুলো বিভিন্নভাবে বিলীন হয়ে যাওয়ায় আজ তার কিছুই নেই।
খুদ বানু সম্পর্কে অবগত রয়েছেন। ব্যক্তিগতভাবে তাকে সাহায্য করা হয়। এমন সব কথা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাফায়েত উল্লাহ্ রয়েল বাংলানিউজকে বলেন, সরকারি সহযোগিতার একটি ব্যবস্থাও খুদ বানুকে করে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু অন্যরা এই অসহায়ের টাকা আত্মসাৎ করবেন ভেবে আর দেইনি।
এদিকে এই জনপ্রতিনিধির ঠিক উল্টো স্বরে কথা বলেন গ্রামের বাসিন্দা কৃষক সেকুল মিয়ার স্ত্রী নাসিমা আক্তার ও রাজমিস্ত্রি সাইকুল ইসলামের স্ত্রী শাফিয়া আক্তার।
বাংলানিউজকে তারা বলেন, স্মরণকালে কোনো জনপ্রতিনিধি খুদ বানুকে এক পয়সা দিয়ে সাহায্য করেননি। খুদ বানুর জীবনের দুঃখকষ্ট আর বেহালাবস্থার কথা জনপ্রতিনিধিদের কাছে বারবার স্বপ্রণোদিত হয়ে বলার পরও তাদের কাছ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি! উঁকি দিয়েও কেউ কখনও দেখতে আসেনি কোনোদিন!
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৭ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৯
এএটি