ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

কল্যাণকামী-বৈষম্যহীন সমাজ চেয়েছিলেন মোজাফফর আহমদ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৮ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৯
কল্যাণকামী-বৈষম্যহীন সমাজ চেয়েছিলেন মোজাফফর আহমদ আলোচনা সভায় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানসহ অতিথিরা, ছবি: মুজিবুর

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছেন, কল্যাণকামী, দারিদ্র্য ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ।

শনিবার (২৫ মে) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানী ধানমন্ডি ২৭ নম্বরে ইএমকে সেন্টারে তার সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে ‘আমাদের অর্থনীতি চর্চায় অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের অবদান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ স্মৃতি সংসদ।

এসময় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ যে কল্যাণকামী, দারিদ্র্য ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন, তার জন্য তিনি বিভিন্ন কাজ করেছেন। জনগণের কল্যাণে তিনি কখনও সরকারে গেছেন, আবার কখনও সরকারের বিরুদ্ধে বলেছেন। কিন্তু তিনি কোনোদিন নিজের মতের বাইরে যাননি। আপসও করেননি। এজন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিও ছেড়ে দেন একসময়। শিক্ষকতাকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিলেও নীতির প্রশ্নে তিনি আপস করে থাকতে চাননি।

তিনি বলেন, মোজাফফর আহমদ তার জীবনে অগ্রাধীকার ভিত্তিতে কয়েকটি লক্ষ্য স্থির করেছিলেন। তা হচ্ছে তার ধর্ম বিশ্বাস, দেশপ্রেম এবং পরিবারের প্রতি দায়িত্ব। এই তিনটি বিষয়ে তিনি সারাজীবন অবিচল ছিলেন। তিনি শুধু অর্থনীতির ক্ষেত্রে নয়, শিক্ষা, সংস্কৃতি, রাজনীতি, নানা বিষয়ে অবদান রেখে গেছেন। যেখানেই তিনি ভালো কাজ দেখেছেন, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তেমনি যেখানে তিনি অন্যায় দেখেছেন, তার প্রতিবাদ করেছেন।

আনিসুজ্জামান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোজাফফর আহমদ আমার এক বছর উপরে পড়তেন। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরেই তার সঙ্গে আমার যোগাযোগ স্থাপন হয়। কিছু মত ভিন্নতা সত্ত্বেও আমরা একে অপরের বন্ধু হয়ে যাই। এই সম্পর্ক পরবর্তীতে আরও বেশি আন্তরিকতায় রূপ নেয়। যা মোজাফফর আহমদের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ছিল। আমি তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।

আলোচনা সভার শুরুতেই অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর বর্তমান তরুণ প্রজন্মের কাছে মোজ্জাফফর আহমদকে তুলে ধরতে তার নামে (www.muzafferahmad.com) একটি ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে মোজাফফর আহমদ স্মরণে স্মারক বক্তৃতা পাঠ করেন তারই ছাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

এছাড়া মোজাফফর আহমেদের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের নানা বিষয়ে আলোচনা করেন অধ্যাপক রেহমান সোবহান, খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ প্রমুখ।

ধন্যবাদ জ্ঞাপণ মূলক আলোচনায় অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের সহধর্মিনী অধ্যাপক রওশন জাহান বলেন, এখানে আজকে যারা উপস্থিত হয়েছেন, আমি তাদের সবাইকে ধন্যনাদ জানাই। এখানে যারা আছেন, তারা সবাই আমার ছোট এবং বড় ভাই। প্রায় সবাইকেই আমি চিনি। সেইসঙ্গে যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করে ভালো ভালো কাজ করেন দেশের জন্য, তারাও আমার ভাই। আমার জীবনের আদর্শ এবং হিরো হচ্ছে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। আমি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কিছু গুণ মোজাফফর আহমদের মধ্যে দেখতে পেয়েছি।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ স্মৃতি সংসদের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। পরিচালনা করেন স্থপতি ইকবাল হাবীব।

বাংলাদেশের সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৯
আরকেআর/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।