ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

উল্টো চিত্র সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৩ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৯
উল্টো চিত্র সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে সিলেট রেলওয়ে স্টেশন

সিলেট: খানাখন্দে সড়কে নরক যন্ত্রণা ও দুর্ঘটনার ভয়। আকাশ পথে যাত্রা ব্যয়বহুল। তাই ঈদে নাড়ির টানে ঘরমুখো মানুষের প্রথম পছন্দ ট্রেনে যাত্রা। ঈদ এলেই ট্রেনের টিকিট সংগ্রহে স্টেশনগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন যাত্রীরা।

যেমনটি প্রত্যক্ষ করা গেছে রাজধানী ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। টিকিটের আশায় অনেকে রেলস্টেশনে রাত-দিন পার করেছেন লাইনে দাঁড়িয়ে, চাই— টিকিট নামের ‘সোনার হরিণ’।

এবার এর উল্টো চিত্র সিলেটে রেলওয়ে স্টেশনে। যাত্রী নেই, টিকিটের চাপও নেই। ঈদের আগে অনেকটা চাপহীন সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের কর্মকর্তারা।

ঈদে সিলেট রুটে দেওয়া স্পেশাল ট্রেন নেই। ট্রেনগুলোতেও অতিরিক্ত কোচ সংযোজন করা হয়নি। অথচ বিগত বছরগুলোতে টিকিটের চাপ সামলাতে হিমশিম খেয়েছেন রেলের কর্মকর্তারা। কিন্তু এবারের চিত্র পুরোই ভিন্ন।

পবিত্র ঈদুল ফিতরে টিকিটের জন্য বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড় নেই সিলেট রেলস্টেশনে। ফলে দালালদের দৌরাত্মও নেই তেমন। অথচ বিগত বছরগুলোতেও ঈদে আসন সংকটের কারণে যাত্রীদের দাঁড়িয়ে যেতে হয়েছে ট্রেনে।

সরেজমিন দেখা গেছে, সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কাউন্টারে চারটি বুথে নেই দীর্ঘ সারি। হাতেগোণা যে কয়েকজন যাত্রী দেখা গেলো তারাও নিয়মিত ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করছেন।

এ বিষয়ে রেলওয়ে স্টেশনের সিএনএস’র কর্মকর্তা জহির হোসেন বলেন, ঈদের আগে সিলেট থেকে আর কত সংখ্যক যায়? বরং আসে বেশি। পর্যটকরাও ঈদের ছুটিতে সিলেটে ঘুরতে আসেন। লোকে লোকারাণ্য হয়ে ওঠে সিলেট। ফেরার পথে ভিড় থাকে বেশি। এ জন্য ঈদের পরবর্তী সময়ে টিকিট দিতে চাপ সামলাতে হয় বেশি। অবশ্য বিগত সময়গুলোতে ঈদের সময় মানুষের চাপ বেশি ছিলো, এবার তেমন নেই।
...সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার কাজি শহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবারের তুলনায় এবার ঈদের আগে টিকিট সংগ্রহের চাপ কম। অবশ্য ২৬ মে থেকে টিকিট দেওয়া শুরু হবে। ওই সময়ে বাড়তি চাপ থাকলে কোচ সংযোজন করা হবে। তবে ঈদে সিলেট থেকে যাত্রীদের চাপ কম থাকে বিশেষ ট্রেন চালুর প্রয়োজন হয় না। আবার ঈদের পরে কর্মস্থলে ফেরা এবং সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকদের ফেরার সময় টিকিট সংকট তৈরি হয়। তখন ট্রেনগুলোতে আলাদা কোচ সংযোগ দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, সিলেটে থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম রুটে ৫টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। এরমধ্যে ঢাকা রুটে কালনী এক্সপ্রেস, পারাবত এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা ও উপবন এক্সপ্রেস। চট্টগ্রাম রুটে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস, উদয়ন এক্সপ্রেস। এছাড়া ডাকবাহী ট্রেন সুরমা মেইল এক্সপ্রেস ঢাকা রুটে ও জালালাবাদ এক্সপ্রেস আখাউড়া রুটে চলাচল করে।

স্টেশন ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম আরো বলেন, আগে ট্রেনগুলোতে কোচ সংযোগ কম ছিল। সাবেক অর্থমন্ত্রীর সুপারিশে ট্রেনগুলোতে আরো সংযোগ দেওয়া হয়। এখন সিলেট রুটে কালনী এক্সপ্রেস ১১টি কোচ নিয়ে চলাচল করে। এছাড়া পারাবত, জয়ন্তিকা, উপবন, পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেস পাওয়ার কারসহ ১৬টি কোচ নিয়ে চলাচল করে।

সিলেট রেলওয়ে স্টেশন সূত্র জানায়, সিলেট-ঢাকা, সিলেট-চট্রগ্রাম রুটে আন্তঃনগর ট্রেনে যাত্রী সাধারণের জন্য পর্যাপ্ত কোচ নিয়ে যাত্রা করে। পরে সব ক’টি ট্রেনে কোচ সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়। পরে সাবেক অর্থমন্ত্রীর ডিও লেটারের প্রেক্ষিতে কালনী ব্যতীত অন্য আন্তঃনগর ট্রেনগুলো এখন ১৬টি বগি নিয়ে চলছে। আর ট্রেনগুলোতে অব্যবস্থাপনা থেকেই গেছে।

২০১৪ সালে সিলেট-ঢাকা রুটে ১৪টি কোচ নিয়ে যাত্রা শুরু করে কালনী এক্সপ্রেস। এরপর কোচ কমিয়ে আনা হয় ৪টিতে। ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৪টি কোচ নিয়ে যাত্রী পরিবহন করে প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের রেখে যাওয়া কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনটি। এরপর ২০১৮ সালের শুরুর দিক থেকে ৮টি কোচ নিয়ে চলাচল করে। পরে আরো একটি কোচ কমিয়ে আনা হয়। জয়ন্তিকা ও উদয়ন এক্সপ্রেস মধ্যখানে কমে ১২টি কোচ নিয়ে চলাচল করে। পরে অবশ্য আরো চারটি কোচ যুক্ত করা হয়। পারাবত এক্সপ্রেসে ১৫টি থেকে ৩টি কমিয়ে ১২টি করা হলেও এখন ১৬টি কোচ নিয়ে চলছে। উদয়ন ও পাহাড়িকার যাত্রা শুরু ১৪টি কোচ নিয়ে। বিগত বছরগুলোতে কমিয়ে দেওয়া হয় ৯টি কোচ। সাবেক অর্থমন্ত্রীর ডিও লেটারের প্রেক্ষিতে এই ট্রেনগুলোতে কোচ সংখ্যা এখন ১৬টি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৯
এনইউ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।