ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভারতের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৯ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৯
ভারতের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা

ঢাকা: ভারতে বিজেপি পুনরায় ক্ষমতায় আসায় বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে বলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন। বিগত দিনে বিজেপি সরকারের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের যে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে তার ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান সকল সমস্যা সমাধান হবে বলেও আওয়ামী লীগের ওই নেতারা মনে করেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে ক্ষমতাসীন বিজেপি বিপুল বিজয়ের মাধ্যমে পুনরায় সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজেপি বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে।

গত ৫ বছরে বিজেপি সরকারের সময় অতীতের মতোই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহত ছিলো। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিজেপি সরকারের সময় সম্পর্ক আরও উচ্চতর পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণি পর্যাযের নেতাদের মতে, প্রতিবেশী দেশ ভারত এবং সে দেশের জনগণের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। আওয়ামী লীগের সরকারের সময় এই সম্পর্ক উচ্চমাত্রায় পৌঁছেছে। গত ৫ বছর বিজেপি ক্ষমতায় ছিলো এই সময়ও সম্পর্কের নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। বিজেপি টানা দ্বিতীয় বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে অতীতের মতো আগামীতেও এই সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিরাজমান যে কোনো সমস্যার সমাধান করা হবে। বর্তমানে যে সম্পর্ক রয়েছে এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন।

আওয়ামী লীগের ওই নেতারা জানান, গত ৫ বছরে বিজেপির সরকারের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সরকারের সুসম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এই সময়ই ভারতের সঙ্গে ঝুলে থাকা দীর্ঘ দিনের সীমান্ত সমস্যার সমাধান হয়। দীর্ঘ ৪১ বছর আগের মুজিব- ইন্দিরা সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে ভারতের পার্লামেন্টে সীমান্ত বিল পাস হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঢাকা সফর দুই দেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়।

মোদীর ঢাকা সফরে দু’দেশের মধ্যে ২২টি চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও প্রটোকল সই হয়। গুরুত্ব দেওয়া হয় আঞ্চলিক যোগাযোগ বা কানেকটিভিটি ও যৌথ নিরাপত্তা। তখন দুই দেশের ৬৫ দফা যৌথ ঘোষণার মধ্য দিয়ে সহযোগিতার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

এর পর ২০১৭ সালের এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পাশাপাশি দুই সরকারের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হয়। আওয়ামী লীগ ও বিজেপির শীর্ষ নেতারা দুই পার্টির আমন্ত্রণে ঢাকা ও দিল্লী সফর করেন। এর মধ্য দিয়ে সম্পর্কের নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। আগামীতে এই সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে এবং আরও উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন।

এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ ফারুক খান বাংলানিউজকে বলেন, ভরতের নির্বাচন, নতুন সরকার সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সে দেশের জনগণ যে সরকার ক্ষমতায় আনবে সেই সরকারের সঙ্গেই আমরা পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করবো। পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান করবো। পৃথিবীর সব প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সমস্যা রয়েছে। বাংলাদেশেরও ভারতের সঙ্গে, মিয়ানমারের সঙ্গে সমস্যা রয়েছে। অতীতে আমরা ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যাসহ অন্যান্য সমস্যা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছি, আগামীতেও যে সমস্যাগুলো আছে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করবো।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বাংলানিউজকে বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময়ই জনগণের রায়ের উপর শ্রদ্ধাশীল। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে জনগণ সকল ক্ষমতার মালিক। জনগণ যেখানে যাকে রায় দেবে সেই রায়ের প্রতি আওয়ামী লীগ শ্রদ্ধাশীল। ভারতের জনগণের এই রায়কে স্বাগত জানাই।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র চর্চা করে, তাই জনগণের রায়ের প্রতি সব সময়ই শ্রদ্ধাশীল। নির্বাচনে ভারতের জনগণ যে রায় দিয়েছে তাকে অভিনন্দ জানাই। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক রাষ্ট্র টু রাষ্ট্র। এই সম্পর্ক রক্ত দিয়ে তৈরি হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে। আশা করি এই সম্পর্ক আরও দিন দিন শক্তিশালী হবে, সমৃদ্ধ হবে।  সুম্পর্কের ভিত্তিতেই সকল সমস্যার সমাধান হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০০৫ ঘন্টা, মে ২৪, ২০১৯ 
এসকে/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।