ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

২০৫০ সালে নগরের জনসংখ্যা হবে ১০ কোটি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩০ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৯
২০৫০ সালে নগরের জনসংখ্যা হবে ১০ কোটি ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: প্রতি বছর ১২ শতাংশ হারে বাড়ছে নগরীর জনসংখ্যা। সে হিসেবে ২০৫০ সালে ১০ কোটি মানুষ বাস করবেন নগরে। তবে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে গ্রামের দরিদ্র মানুষকে সেবা দিতে পারছে না শহরগুলো। জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে গিয়ে উল্টো দারিদ্র্যের শিকার হচ্ছে গ্রাম থেকে নগরে আসা এসব মানুষ।

উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিচার্স সেন্টারের (পিপিআরসি) যৌথ গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণা বলছে, কাজের খুঁজে কিংবা উন্নত জীবনের আশায় প্রতিদিনই শহরমুখী হচ্ছে অসংখ্য মানুষ।

আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভিটেমাটি হারিয়েও অনেক ছুটে এসেছে নগরে। যাদের অধিকাংশের ঠাঁই হয়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের বস্তিতে।

সম্প্রতি প্রকাশিত ব্র্যাকের গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, প্রতিবছর নগরের জনসংখ্যা বাড়ছে ১২ শতাংশ হারে। ২০৫০ সাল নাগাদ দেশের মোট জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ শহরাঞ্চলে বসবাস করবেন। বর্তমানে দুই কোটি মানুষ অস্থায়ী ভিত্তিতে শহরে বাস করছেন। এছাড়া দেশের শতকরা ৫০ জন মানুষের প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক সেবা লাভের সুযোগ নেই।

পিপিআরসির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো আব্দুল ওয়াজেদ বলেন, শহরের আশপাশের শিল্প উন্নয়ন হচ্ছে। উৎপাদনমুখী শিল্প, সেবাখাতসহ বিভিন্ন ধরনের শিল্পোন্নয়ন বাড়ছে। গ্রাম থেকে মানুষ এসে সেখানে চাকরি পাচ্ছে। আর এই চাকরির লোভে মানুষ শহরে চলে আসে। তারা ভাবে শহরে গেলে একটা ব্যবস্থা হবে।

অথচ এসব মানুষের জন্য নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে পারছে না সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলো। ফলে আয় বাড়লেও স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান ও মৌলিক চাহিদা মেটাতে গিয়ে দরিদ্রতা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না এসব মানুষ।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সালে নগরের দরিদ্রতা ছিল ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০১৬ সালে এটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১ শতাংশের বেশিতে। দারিদ্র বেড়েছে সাত শতাংশের মতো।

যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন সংস্থা ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশন ডেভলপমেন্টের (ডিএফআইডি) বিশেষ উন্নয়ন উপদেষ্টা আনোয়ারুল হক বলেন, দেশে দারিদ্র্য বিমোচনের মতো অনেক কিছু হয়ে গেলেও সরকারের পরিসংখ্যানে আমরা দেখেছি ২০০৬ সালে শহরে দরিদ্র বেড়েছে। শহরে যেভাবে নজড় দেওয়া দরকার, পলিসিতে সেভাবে দেওয়া হচ্ছে না।

এ বিষয়ে ব্র্যাকের নগর উন্নয়ন কর্মসূচি প্রধান হাসিনা মোশরফা বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের জন্য ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু এই অর্থের একটি বড় অংশ চলে গেছে অন্য একটি খাতে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর বলেন, নগরের দারিদ্র্যের হার কমানোর জন্য স্বল্পমূল্যে বাসস্থান সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এটিকে সামাজিক নিরাপত্তা হিসেবে না দেখে বিনিয়োগ হিসেবে দেখলে নগরের দরিদ্রদের বাসস্থান ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে।

পৌরসভাগুলোকে অর্থের বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট পৌরসভাকে করের একটি অংশ বরাদ্দ দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে বিশ্লেষকরা গ্রাম ও নগরকে বিভাজন করে আলাদা বরাদ্দ দেওয়ার কথাও জানান।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বাজেট থেকে কতো শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হবে, তার একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আগেই কিছু বলা যাবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৯
এসই/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।