ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

খুলছে দ্বিতীয় মেঘনা-গোমতী সেতু, অবসান হবে ভোগান্তির

ইমতিয়াজ আহমেদ জিতু, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৮ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৯
খুলছে দ্বিতীয় মেঘনা-গোমতী সেতু, অবসান হবে ভোগান্তির

কুমিল্লা: বাংলাদেশের ‘লাইফ লাইন’ হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক মানেই এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। যানজটের কারণে বিগত সাত থেকে আট বছর ধরে এ মহাসড়কের অপর নাম ভোগান্তি।

কুমিল্লা থেকে ঢাকার যাতায়াত সময় পৌনে দুই ঘণ্টার মতো হলেও কখনো কখনো এ যাত্রায় নয় থেকে দশ ঘণ্টাও লেগে যায়। এর কারণ ছিল- অতিরিক্ত যানবাহন আর চার লেনের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দুই লেনের মেঘনা ও গোমতী সেতুর নির্মাণ কাজ।

 

অবশেষে এ ভোগান্তির অবসান হতে যাচ্ছে। আগামী ২৫ মে (শনিবার) মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত দ্বিতীয় মেঘনা সেতু ও কুমিল্লার দাউদকান্দিতে গোমতী নদীর ওপর নির্মিত দ্বিতীয় গোমতী সেতু খুলে দেওয়া হচ্ছে।

ওইদিন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নবনির্মিত সেতু দু’টি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

সেতু দু’টি খুলে দিলে ঈদুল ফিতরে ঘরমুখী মানুষের যাত্রা অনেকটা যানজটমুক্ত হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় সূত্রমতে, জাতীয় এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ হাজারেরও বেশি যানবাহন চলাচল করে। গোমতী-মেঘনা এ দুই সেতুর টোলপ্লাজা অতিক্রম করতে গিয়ে যানজটের মুখোমুখি হতে হয় যাত্রীদের। নিত্যদিনের যানজটের কারণে মহাসড়কটি মহাভোগান্তিতে রূপ নিয়েছে। বিগত পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে চলমান এ ভোগান্তির অবসানে ২০১৬ সালে দ্বিতীয় গোমতী-মেঘনা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

জানা যায়, বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার অর্থায়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সাড়ে ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে গোমতী নদীর ওপর ১৭টি স্প্যানের ১ হাজার ৪১০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৭ দশমিক ৭৫ মিটার প্রস্থের দ্বিতীয় গোমতী সেতু এবং সাড়ে ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা নদীর ওপর ১২টি স্প্যানের ৯৩০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৭ দশমিক ৭৫ মিটার প্রস্থের দ্বিতীয় মেঘনা সেতু নির্মাণ করা হয়। প্রায় সাড়ে ৩ বছর ধরে চলে ৪১ তম মাসে এসে শেষ হয় সেতু দু’টির নির্মাণ কাজ।

মেঘনা সেতুর প্রকৌশলী আমিনুল করিম বাংলানিউজকে জানান, ৯৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের দ্বিতীয় মেঘনা সেতুতে একটি জয়েন্ট অ্যাক্সপেনশন রয়েছে। যার ফলে এ সেতুতে যানবাহন চলাচলে কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি হবে না। খুব দ্রুতগতিতে সেতুতে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। পুরনো মেঘনা সেতুটি দুই লেনের হলেও নতুনটি চার লেনের। অর্থাৎ দু’টি সেতুতে মোট লেন রয়েছে ছয়টি। চার লেনের সড়ক দিয়ে যানবাহন এসে দু’টি সেতুতে ছয় লেনে চলাচল করতে পারবে। ফলে আগের মতো সেতুর কারণে আর যানজট হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। সেতুগুলো এখন যানজটমুক্ত থাকবে।

এ মহাসড়কে চলাচলকারী হানিফ পরিবহনের চালক শওকত ইমাম বাংলানিউজকে জানান, এই মহাসড়কে প্রতিদিন চলাচল করা যে কত কষ্টের তা বলে শেষ করা যাবে না। বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার তো আরও ভয়ংকর রূপ ধারণ করে এই মহাসড়ক। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় এই সড়কে। চরম ভোগান্তি বলতে যা বোঝায়, তার সবটাই আমরা ভোগ করে আসছি। তবে এবার আশা করছি নতুন সেতুটি খুলে দেওয়া হলে আর ভোগান্তি খাকবে না। আমরা একটু স্বাচ্ছন্দে চলতে পারবো। যাত্রীরাও ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবে।

সেতু দু’টির প্রকল্প পরিচালক আবু সালেহ মো. নুরুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, আগামী শনিবার (২৫ মে) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতু দু’টি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া পুরোনো দুই লেনের সেতু দুটিরও সংস্কারকাজ চলছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই পুরোনো দু’টি সেতুর সংস্কারকাজ শেষ হবে। আশা করছি এবার ঈদযাত্রা যানজটমুক্ত থাকবে।

১৯২ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি এশিয়ান হাইওয়ের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ–ভারতের সংযোগস্থলের পাশাপাশি দেশের রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বন্দর নগরী চট্টগ্রামেরও যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৯ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৯
এসএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।