রোববার (১৯ মে) ঢামেকে চিকিৎসার জন্য আসেন বাজানদার। বর্তমানে তিনি ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ষষ্ঠ তলার ৬১১ নম্বর কেবিনে আছেন।
মঙ্গলবার (২১ মে) দিনগত রাতে দিকে বার্ন ইউনিটের কেবিনে কথা হয় বাজানদারের সঙ্গে। তার শরীর একদম শুকিয়ে গেছে। দুই হাতে গজিয়েছে সেই আগের মতো শেকড়। দুই পায়েও কিছু কিছু শেকড় আবারো গজিয়েছে।
বাজানদার বলেন, ২০১৬ সালে আমি বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিতে আসি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চিকিৎসকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে আড়াই বছর ধরে আমার শরীরে ২৫টি অস্ত্রোপচার করেন। ধাপে ধাপে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আমার হাত ও পায়ের শেকড়গুলো ফেলে দেন। কিন্তু পরে ধীরে ধীরে শেকড়গুলো আবারো দু’হাতে জন্মাতে থাকে। তখন ডাক্তাররা বলেছেন, এটা জেনেটিক সমস্যা, আগের মতো না হলেও এটা ধীরে ধীরে আবার বাড়তে থাকবে। আমি নিরাশ হয়ে গেলাম।
তিনি বলেন, একপর্যায়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি চলে যাই। ধীরে ধীরে রোগটি বাড়তেই থাকে। যন্ত্রণায় ছটফট করি। দুই মাস আগে আবার বার্ন ইউনিটে আসি। তখন কেবিন খালি ছিলো না। দুই-তিন দিন হাসপাতালে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে আবার বাড়িতে চলে যাই। অবশেষে চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।
বাজানদার বলেন, এ যন্ত্রণা আর সহ্য হচ্ছে না। আমার দুই হাতের শেকড় বেড়েই চলেছে। আমি বাঁচতে চাই। আমি আমার পরিবার নিয়ে বাঁচতে চাই।
তিনি বলেন, চিকিৎসকরা যদি মনে করেন আমার দুই হাতের কব্জি কেটে ফেলে দিলে আমি ভালো হবো। আমি সেটাতেও রাজি আছি। তবুও আমি এ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যেন সুস্থ হতে পারি। আবারো যেন আমার সন্তানকে আমি কোলে নিতে পারি।
কেবিনে তার সঙ্গে স্ত্রী হালিমা ও শিশু সন্তান জান্নাতুল ফেরদৌস তাহেরা রয়েছে।
ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়কারী ডাক্তার সামন্ত লাল সেন বলেন, বিরল রোগে আক্রান্ত বৃক্ষমানব বাজানদার আবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে তিনি ৬১১ নম্বর কেবিনে আছেন। আমরা তার বিষয় নিয়ে আবারো বসবো। তাকে আবারো অস্ত্রোপচার করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৫৯ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৯
এজেডএস/আরবি/