ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

খুলনার মহাসড়ক চলনসই, জেলা সড়কে দুর্ভোগ

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫০ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৯
খুলনার মহাসড়ক চলনসই, জেলা সড়কে দুর্ভোগ তেরখাদা-বৰ্ণাল-কালিয়া সড়ক, ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: পিচ ঢালা রাস্তা ছিলো। সড়কের পিচ উঠে ছাল চামড়া বালি কিছুই নেই। ইটের খোয়া উঠে খানাখন্দ বৃষ্টি হয়েছে। রোডটি চলাচলের জন্য চরম অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।

তেরখাদা-বৰ্ণাল-কালিয়া সড়কের বর্ণনা দিতে গিয়ে এমন কথা জানান এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচলকারী বাদশা গাজী।

ডা. ইসরাত টুম্পা বলেন, খুলনার তেরখাদা জয়সেন বাজার থেকে কালিয়া অভিমুখী সড়কের বেহাল দশা।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ পথ দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। তেরখাদা জয়সেন থেকে বর্ণাল পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং উঠে মাটি বেরিয়ে গেছে।

যা দীর্ঘ দিন সংস্কার করা হয় না বলে অভিযোগ করেন এ পথ দিয়ে চলাচলকারী যাত্রী চুম্পা।

অনুরূপভাবে কয়রা বাজার থেকে বেদকাশী খেয়া ঘাট পর্যন্ত সাড়ে ৭ কিলোমিটার জেলা সড়কেরই পিচ উঠে গেছে বলে জানান কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দিন।

তিনি বলেন, কয়রা উপজেলা সদর থেকে বেদকাশী কাছারীবাড়ি হয়ে কাশির হাটখোলা খেয়াঘাট পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগের এ রাস্তাটি প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ। রাস্তাটির অর্ধশতাধিক জায়গার ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় গাড়ি উল্টে ঘটে দূর্ঘটনা।

কয়রার উত্তর বেদকাশীর বাসিন্দাদের একমাত্র চলাচলের গোলখালি সড়কটি দীর্ঘ দিন থেকে চলাচলের অনুপযোগী বলে জানান মদিনাবাদ এলাকার এম এম সাইফুল ইসলাম।

একইভাবে দাকোপ-বারআড়িয়া-মাগুরখালী-তালা (চালনা-লক্ষ্মীখোলা) সড়ক ও কেশবপুর-বেতগ্রাম সড়কেরও বেশ কিছু অংশের অবস্থা চলাচলের অনুপোযোগী।

এসব সড়কের বেহাল দশার বর্ণনা তুলে ধরে সড়কগুলো দিয়ে চলাচলকারী গাড়ির চালকরা বলেন, সড়কের মাঝে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। কার্পেটিং উঠে গিয়ে ক্ষতবিক্ষত হওয়ার পাশাপাশি সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। যাতে প্রায় গাড়ি আটকে যায়। অনেক সময় উল্টে যায়। ঘটে দূর্ঘটনা।

এই সড়কগুলোর মতো খুলনার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা সড়কের বেহাল দশা। যদিও সড়ক ও জনপদ বিভাগ বলছে সড়কগুলোর কোন কোনটির সংস্কার কাজ চলছে। আবার কোন কোনটির জেলা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উন্নয়নের লক্ষ্যে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, অতীতের তুলনায় খুলনার মহাসড়কের বেশ উন্নয়ন ঘটেছে। বলা যায় মহাসড়ক ভালো ও চলনসই। আঞ্চলিক সড়কে যেসব ছোট বড় সমস্যা রয়েছে তাও আসন্ন ঈদের আগে সংস্কার করা হবে। তবে জেলা সড়ক সংস্কার ঈদের আগে হচ্ছে না। যার কারণে সেসব সড়ক দিয়ে ঘরে ফেরা যাত্রীদের দুর্ভোগের শঙ্কা কাটছে না।

সড়ক বিভাগের খুলনার আওতাধীন সড়কসমূহের তালিকা থেকে জানা যায়, খুলনায় মহাসড়ক মোট ৬২ কিলোমিটার। আঞ্চলিক সড়ক ৪২ কিলোমিটার। মোট সড়ক ৩৭৪ কিলোমিটার।

খুলনার প্রায় সব সড়কই চলাচলের উপযোগী দাবি করে সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) সড়ক বিভাগ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী তাপসী দাশ বাংলানিউজকে বলেন, খুলনার সব সড়ক চলাচলের উপযোগী। কিছু সড়কের সংস্কার করা হচ্ছে। এসব সড়ক ১২ ফিট থেকে ১৮ ফিট করা হচ্ছে। অনেক সড়কের কাজ ঈদের আগে শেষ হয়ে যাবে। কয়রা-নোয়াবেকী-শ্যামনগর (দক্ষিণ বেদকাশী/(কাশির হাট) পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার ও দাকোপ-বারআড়িয়া-মাগুরখালী-তালা ৯ কিলোমিটার সড়কের কাজ চলছে।

তিনি জানান, কেশবপুর-বেতগ্রাম সড়কটি জেলা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দরপত্রটির কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। বাস্তবায়নের কাজ চলমান (চুক্তি মূল্য ৪২০.২৮ কোটি টাকা)। তেরখাদা-বৰ্ণাল-কালিয়া সড়কটি জেলা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। (প্রাক্কলিত ব্যয় প্রায় ২৬.০০ কোটি টাকা)।

বাংলাদেশসময়:  ১৯২৫ ঘণ্টা,  মে ২০,  ২০১৯
এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।